যক্ষ্মা নির্মূলে গত দুই দশক ধরে অন্যান্য দাতা সংস্থার মতো বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা করেছে মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএইড। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বন্ধ হয়ে গেছে ইউএসএইডের অর্থায়ন। ফলে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় প্রভাব পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেসরকারিভাবে পরিচালিত রোগ শনাক্তকরণ, গবেষণা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে মিলছে না ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার সেবা। এতে যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এখনও শনাক্তের বাইরে ১৭ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী। এ রোগীরা অজান্তেই যক্ষ্মার জীবাণু দ্রুত ছড়াতে সহায়তা করবে এবং যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বন্ধের কারণে নতুন রোগী শনাক্ত কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এতে যক্ষ্মা নিয়ে নতুন করে সংকটে পড়তে পারে দেশ। এ জন্য এখনই স্থগিত কার্যক্রম সচল করতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অন্য উৎস থেকে সহায়তা পেতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। রোগটির ক্ষতিকর দিক, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। দিনটির এবারের প্রতিপাদ্য– ‘প্রতিশ্রুতি, বিনিয়োগ ও সেবাদান দ্বারা সম্ভব হবে যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়া’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, গত বছর বিশ্বে যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩৭৪ জন। এর মধ্যে ১০ শতাংশই শিশু। ২০২৩ সালে যক্ষ্মায় বিশ্বের ৪৪ হাজার মানুষ মারা গেছে। এখনও ১৭ শতাংশ রোগী শনাক্তের বাইরে। ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শনাক্তের বাইরে থাকা রোগীদের চিহ্নিত করে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে।
ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্মূল কার্যক্রম স্থগিত
যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয় মাস নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়মিত এবং পূর্ণ মেয়াদে ওষুধ না খেলে যক্ষ্মার জীবাণু ওই ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের অবহেলা ও অসচেতনতায় এই ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা এমডিআর টিবি বাড়ছে। যাদের একটা বড় অংশই মারা যান। ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগী কমাতে রাজধানীসহ দেশে সাত বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আলাদা চিকিৎসকের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হতো। এই প্রকল্পটিও বাস্তবায়ন হতো ইউএসএইডের অর্থায়নে।
২০২১ সালে ইউএসএইডের সহায়তায় রাজধানীর শ্যামলীতে দেশের প্রথম ওয়ানস্টপ যক্ষ্মা (টিবি) নামে এই সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়। একজন চিকিৎসক দিয়ে এ সেবা নিশ্চিত করা হতো। গত জানুয়ারিতে ইউএসএইডের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে ওই চিকিৎসককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান শ্যামলী টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা.
‘জানাও’ অ্যাপ বন্ধ
যক্ষ্মা প্রতিরোধে ইউএসএইডের সহায়তায় ২০১৮ সালে ‘জানাও’ নামে একটি অ্যাপ প্রস্তুত করা হয়। সারাদেশে ৫০০ চিকিৎসক নিয়ে পাইলট আকারে অ্যাপটির ব্যবহার শুরু হয়েছিল। সাফল্য দেখে এক পর্যায়ে এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অ্যাপে নিবন্ধিত যে কোনো চিকিৎসক যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান পেলে তাঁকে এ অ্যাপে নিবন্ধন করে দিতেন। এ পর্যন্ত অ্যাপের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিয়ে অন্তত ৭ হাজার রোগী যক্ষ্মা মুক্ত হয়েছেন। ইউএসএইডের অর্থায়ন বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ছাঁটাই করা হয়েছে এতে নিয়োজিত কর্মীদেরও।
আইসিডিডিআর,বির সাত প্রকল্প স্থগিত
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) এক বিজ্ঞানী জানান, ইউএসএইডের অর্থায়নে আইসিডিডিআর,বিতে সাত প্রকল্প চলমান ছিল। এগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এসব কাজে জড়িত প্রায় এক হাজার কর্মীকে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে যক্ষ্মার সক্রিয় রোগী সন্ধান, স্ক্রিনিং ও সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হতো। যেহেতু এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে, তাই আগামী বছর যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১৭ শতাংশ রোগী শনাক্তের বাইরে রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম না থাকায় দ্রুতগতিতে যক্ষ্মা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হবে।
ওই বিজ্ঞানী আরও জানান, আইসিডিডিআর,বিতে একই সঙ্গে বেশ কিছু গবেষণা প্রকল্প চলমান ছিল ইউএসএইডের সহায়তায়। এগুলো স্থগিত হওয়ায় নতুন চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার উন্নয়ন থমকে গেছে। সংকট কাটিয়ে উঠতে এসব প্রকল্প চলমান রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে বা অন্য কোনো দাতা সংস্থাকে যুক্ত করতে হবে নতুন করে। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তবে গত ৯ মাস স্বাস্থ্যের কোনো অপারেশন প্ল্যান নেই। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সেবা। অপারেশন প্ল্যানের মাধ্যমে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও ছিল। যদি অপারেশন প্ল্যান চালু থাকত, তাহলে এখান থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা নেওয়া সম্ভব হতো। সে পথও বন্ধ।
ব্র্যাকের গবেষণা স্থগিত
ইউএসএইডের সহায়তায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকেও যক্ষ্মা নিয়ে গবেষণা প্রকল্প ছিল। গত জানুয়ারিতে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। সংস্থাটির যক্ষ্মা কর্মসূচির লিড টেকনিক্যাল পারসন ডা. ফারহানা নিশাত সেহেলী বলেন, গত জানুয়ারি থেকে ইউএসএইডের অর্থায়নে চলমান গবেষণা প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। তবে দুই মাসে তেমন কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। এসব কর্মকাণ্ড দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ থাকলে প্রভাব পড়বেই।
যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতারও অভাব
দেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করছে আইসিডিডিআর,বি। প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট সায়েরা বানু বলেন, ‘যক্ষ্মার চিকিৎসা বিনামূল্যে পাওয়া যায় এটা অনেকেই জানে না। মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতারও অভাব রয়েছে। যক্ষ্মা মোকাবিলায় শুধু সরকার বা যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থার উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। এর মধ্যে হঠাৎ করে ইউএসএইডের সহায়তা বন্ধে নতুন সংকট তৈরি করেছে। এই সংকট নিরসনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি দেশি-বিদেশি দাতা সংস্থার এগিয়ে আসতে হবে। যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নিশ্চিত করতে হবে সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো।
যা বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমরা যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। এনটিপি মূলত চলে গ্লোবাল ফান্ডে। তাই ইউএসএইডের অর্থায়ন বন্ধে সরকারি কোনো প্রকল্পে প্রভাব পড়বে না। তবে এ জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইস ড ড আর ব গত জ ন য় র ব সরক র প রকল প চ ক ৎসক ন বন ধ ক জ কর চলম ন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন বছরে ঘর আলো করে এলো প্রভা
প্রথম কন্যা অরফি আফরিন আভার বয়স সাড়ে ৪ বছর। এর মাঝেই আবার গর্ভবতী হন গৃহিনী মোসা. জুঁই। ৩৭ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। পহেলা বৈশাখের পরে তাঁর সিজার হওয়ার কথা ছিল। তবে নতুন বছরের শুরুর দিনই ঘর আলো করে দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। তার নাম রাখা হয়েছে প্রভা। নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছেন।
পারিবারিকভাবে ২০২০ সালে জুঁইয়ের বিয়ে হয় কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে। স্বামী আকাশ হোসেন অভি কুষ্টিয়া আদালতে একজন আইনজীবীর সহকারী।
জুঁইয়ের সাথে অভির বিয়ে হওয়ার বছর খানেকের মধ্যে জন্ম হয় প্রথম কন্যা সন্তানের। সেই মেয়েকে নিয়ে তাদের সুখে দিন কাটছিল। এর মাঝে নববর্ষের দিন নতুন যোগ হয়েছে আরও এক কন্যা সন্তান। এতে ভীষণ খুশি তারা।
কুষ্টিয়া লালন শাহ প্রাইভেট হাসপাতালে গর্ভবেদনা নিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভর্তি হন জুঁই। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম দেন তিনি দ্বিতীয় কন্যা সন্তান। হাসপাতালের চিকিৎসক মোহসিনা হায়দার তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। এখন মা ও শিশু হাসপাতালের বরীন্দ্রনাথ কেবিনে আছেন।
জুঁইয়ের স্বামী অভি বলেন, ‘আমাদের বাসা পৌর এলাকার মধ্যে। শ্বশুর বাড়ি কয়েক কিলোমিটার দূরে। সকালে ব্যথা ওঠার পর বাসা থেকে দেড় কিলোমিটারের দূরে লালন শাহ হাসপাতালে এনে ভর্তি করাই। এরপর চিকিৎসক সাড়ে ৮টার দিকে অস্ত্রোপচার করেন। কোন সমস্যা হয়নি।’
প্রায় ৩ কেজি ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া সন্তানকে প্রথম কোলে নেন নানি। এ সময় নানির নিজ হাতে তৈরি করা কাঁথা ও পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয় শিশুটির শরীর। হাসপাতালের পরিচালক হারুন অর রশিদ হিরো নববর্ষের দিনে জন্ম নেওয়া এ শিশুর অভিভাবকদের অভিনন্দন জানান।
জুঁইয়ের স্বামী অভি জানান, তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ার পর তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিতেন। খাওয়া-দাওয়া ঠিকভাবে করছেন কি-না সে বিষয়ে খেয়াল রাখতেন। চিকিৎসক মোহসিনা হায়দারকে দেখিয়েছেন বেশ কয়েকবার। স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা ছিল না। জুঁইয়ের বাবার বাড়ি শহরতলির কবরবাড়িয়া এলাকায়। হাসপাতালে জুঁইয়ের আম্মা তার সাথে আছেন দেখাশোনা করার জন্য। বড় মেয়ে আভা আছে তাদের সাথে। নতুন বোন পেয়ে সেও খুব খুশি।
জুঁই বলেন, তাঁর স্বামী আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া মাঝে মধ্যে বালুর ব্যবসা করেন। এ আয় দিয়ে তাদের সংসার চলে। খুব বেশি আয় না হলেও তাদের সংসারে সুখ আছে। কিছুটা আর্থিক সংকট থাকলেও দ্বিতীয় সন্তান পেটে আসার পর কোন সমস্য হয়নি। তাঁর স্বামী নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন। যতটা পেরেছেন ভালো খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ের পর আবার মেয়ে হওয়াতে খুশি আমরা। এখন ছেলে-মেয়েতে কোন তফাত নেই। সবই সৃষ্টিকর্তার দান। আমরা দুই মেয়েকে শিক্ষিত করে ভালো মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
এসএসসি পাশ জুঁই মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান। সংসারে টানাপোড়েন থাকলেও মেয়েদের প্রতি তিনি যত্নশীল। তাদের সব আবদার পূরণ করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।
জুঁই বলেন, বড় মেয়ের নাম আভা। বাবার নাম অভি, অভি থেকে আভা রাখা হয়েছে। এ কারণে মিল রেখে ছোট মেয়ের নাম রাখা হলো প্রভা। দুই মেয়ের নামই তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে রেখেছেন। বাড়িতে গিয়ে আকিকা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যাতে মহান আল্লাহ মুছিবত দূর করে দেন। বাড়ির সবাই খুশি। হাসপাতালে কয়েকদিন থাকতে হবে। এখানে সবাই সহযোগিতা করছে। কোন সমস্যা হচ্ছে না।
মেয়েদের নিয়ে কি স্বপ্ন আছে জানতে চাইলে বলেন, ‘সবারই স্বপ্ন থাকে। আমরা নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। লেখাপড়া শেষ করতে পারিনি। মেয়েদের ভালো স্কুলে ভর্তি করানোর ইচ্ছা আছে। বড় মেয়েকে সবেমাত্র একটি কিন্ডার গার্ডেনে প্লেতে ভর্তি করিয়েছি। সে স্কুলে যায়। আর ছোট মেয়ের যত্ন নেওয়া আমার প্রধান কাজ। বুকের দুধ পান করছে ছোট মেয়ে। মেয়ে যাতে সুস্থ থাকে এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
জুঁই বলেন, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি সন্তানকে আরবি শিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা আছে। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় বেড়েছে। তাই ছেলে-মেয়েদের সামাজিক ও পারিবারিক শিক্ষা বেশি প্রয়োজন।
ডা. মোহসিনা হায়দার বলেন, ‘জুঁই আমার রোগী ছিল। সন্তান পেটে আসার পর বেশ কয়েকবার সে চেকআপের জন্য আসে। পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা ও খাওয়া-দাওয়া করেছে। কোন সমস্যা ছিল না।’
নববর্ষের দিন সিজার করানোর কারণ জানতে চাইলে জুঁইয়ের পরিবার জানায়, পহেলা বৈশাখের দিন সকালে হঠাৎ করেই ব্যথা শুরু হয়। এ জন্য তারা তড়িঘড়ি করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য বলেন। সেখানে অস্ত্রপচার করেন তিনি। এ কারণে নতুন বছরেই তারা নতুন অতিথি পেয়েছেন। এ জন্য সবাই খুশি।
হাসপাতালের নার্স রেবেকা খাতুন বলেন, তিনজন সেবিকা তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। নতুন বছরে যারা জন্ম নিয়েছেন নার্সরা তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। শিশুদের কোলে নিয়ে আদর করেছেন। নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন তারা।
হাসপাতালে যখন শিশুটির জন্ম হয় তখন তার বাবা কালেক্টটরেট চত্বরে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সকালে শিশুকে একবার দেখে চলে যান অনুষ্ঠানে। পরে আবার আসেন। হাসপাতালের পরিচালক হারুন অর রশিদ হিরো বলেন, পহেলা বৈশাখে তাঁর প্রতিষ্ঠান রোগীদের জন্য বিশেষ সেবা দিয়ে থাকে। এদিন যাদের ঘরে নতুন অতিথি আসে সেই সব পরিবারকে তারা যথাসাধ্য ছাড় দেওয়াসহ অন্যান্য সুবিধা দেন। এছাড়া হাসপাতালের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়।