বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নতুন নামের বিষয়ে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এবারের শোভাযাত্রায় নতুন রং, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে, এতে সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখা যাবে। এই শোভাযাত্রা হবে বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো– প্রত্যেকের। এ জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। পরে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে সবাই যদি একমত হয়, তবে আবার নাম পরিবর্তন হতে পারে। এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালিদের শোভাযাত্রা না। কেন্দ্রীয়ভাবে এটিকে ডাকা হবে, যে নামে সবাইকে একটা ছাতার মধ্যে আনা যায়।
মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ইউনেস্কো আগামীবার জানবে এ শোভাযাত্রা আরও বড় হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ইউনেস্কোর এটাতে খুশি হওয়ার কারণ হবে, আপত্তি করার কোনো কারণ নেই। আমরা বরং এতদিন অনেকগুলো জাতি-গোষ্ঠীকে মাইনাস করে এসেছিলাম। এটাকে সংশোধন করছি।’ অনুষ্ঠানটি পুনর্বিবেচিত হয়েছে, তাই এর নামটিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিভিন্ন আয়োজন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে রক কনসার্ট হচ্ছে। যেখানে চাকমা, গারো, মারমা ও বাংলা ব্যান্ড– সবাই পারফর্ম করবে। এ ছাড়া চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে বাউল ও ফকিররা গান গাইবেন। ওদের একটা উৎসব হবে সেখানে। ১৪ এপ্রিল সংসদ ভবনের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শোর আয়োজন করা হবে। চীনের দূতাবাসের সহযোগিতায় ড্রোন শো হবে। বিকেলে গান শুনবেন, সন্ধ্যার পর দেখবেন সংসদ ভবনের ওপর বাংলার আকাশের ড্রোন দিয়ে কিছু ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুরের ধারার গানের অনুষ্ঠান হবে। মেলার মতো আয়োজনও সেখানে করা হবে। ঢাকার নানান জায়গায় উৎসব ছড়িয়ে যাবে। সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে– এবার আমাদের নির্দেশনা এটা না। কোন অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে, সেটা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিক করে নেবে।’ তিনি জানান, এবার প্রতিটি জেলা ও উপজেলার জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি যে জেলাগুলোতে ভিন্ন ভাষাভাষী লোকজন আছেন, সেগুলোতে বরাদ্দ আরও বেশি হবে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন উপদ ষ ট নববর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিশ্বে ভিন্নমাত্রা লাভ করেছে: তারেক রহমান
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বে এক উজ্জ্বলতর ভিন্নমাত্রা লাভ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও মিলনের অমিয় বাণী মিশে আছে আমাদের লোকজ ঐতিহ্যের মধ্যে। এ দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, সম্প্রদায়সহ সব নাগরিকের সমান অগ্রগতি, বিকাশ, নিরাপত্তা ও সংবিধান বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
আজ রোববার এক বাণীতে এ কথা বলেন তারেক রহমান। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাংলাদেশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এ বাণী দিয়েছেন তিনি।
বাণীতে তারেক রহমান বলেছেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলবাসীসহ বাংলাভাষীরা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য জাতিসত্তা। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদই এই ভূখণ্ডে সব জনগোষ্ঠীকে অভিন্ন সত্তা দিয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলবাসী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সব সম্প্রদায়ের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিবাদন জানাচ্ছি।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জনগণের ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির অভিন্ন অংশ। যা আমাদের ঐতিহ্যকে মহিমামণ্ডিত, প্রাচুর্যময় ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে। উৎসব মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, মিলনের বোধে উদ্দীপ্ত করে ও সংযুক্ত করে সমাজের নানা সম্প্রদায়।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সব সম্প্রদায় ও জনগণের নিজেদের পার্বণ ও উৎসব জাতীয় উৎসবেরই অংশ। এই উৎসবের দিনগুলো আনন্দে ভরে উঠুক আর বাংলা নববর্ষ সবার জন্য অনাবিল শান্তি ও সুখের হোক—এ কামনা রইল।’
তারেক রহমানের পক্ষে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ বিবৃতি পাঠিয়েছেন।