বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতির মৃত্যু, সঙ্গীর খোঁজে হাতির পাল
Published: 23rd, March 2025 GMT
নালিতাবাড়ীতে ধানক্ষেতের পাশে দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে সেখানেই হাতিটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকেই গারো পাহাড়ের হাতিগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সঙ্গী হারিয়ে হাহাকার করছে বন্যহাতির পাল। সন্ধ্যা হলেই তারা জড়ো হচ্ছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে পুরুষ হাতি হত্যার স্থানটিতে। তাদের বিক্ষিপ্ত ডাকে বিষাদের সুর টের পাচ্ছে এলাকাবাসী। ক্রুদ্ধ আচরণও করছে সঙ্গী হারানো হাতির দলটি। পায়ে পিষ্টে নষ্ট করছে কৃষকের ধানক্ষেত। সড়কে সড়কে ছড়িয়ে পড়ে হাতির পাল। এ ঘটনায় আশপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে হাতি বিচরণের কারণে মানুষ আর বাইরে বের হওয়ার সাহস করতে পারেনি, ঘরবন্দি হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামে পাহাড়ের ঢালে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একটি বন্যহাতি মারা যায়। পরদিন শুক্রবার হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। প্রথমে একদল হাতি এদিকে চলে আসে। এর পর তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও হাতির পাল। মৃত হাতিটিকে খোঁজার চেষ্টা করে তারা। না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে।
এক পর্যায়ে মৃত হাতিটিকে যেখানে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে, সেই জায়গাটি খুঁজে পায় হাতির দল। তারা পা দিয়ে জায়গাটি মাড়িয়ে ফেলে। এর পর হাতির পাল মধুটিলা ইকোপার্ক-সংলগ্ন সীমান্ত সড়কে অবস্থান নেয়। সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকার পাহাড়ি জমিতে হাতির পাল কৃষকের ছয় থেকে সাত একর বোরো ধানক্ষেত পায়ে পিষে বিনষ্ট করে।
হাতির মৃত্যুর ঘটনায় রেঞ্জ কর্মকর্তা আল আমিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় কৃষক জিয়াউর রহমান ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও দু’জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কৃষক জিয়াউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন নালিতাবাড়ী থানার ওসি সোহেল রানা।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, দু’দিন ধরে হাতির পাল মৃত হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়ার স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন বিভাগের সদস্যরা নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি চালাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের পথে জার্মানিও, ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় চারজনকে বিতাড়নের নির্দেশ
জার্মানির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনপন্থীদের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে। দেশটি ফিলিস্তিনপন্থী চার বিদেশি নাগরিককে বিতাড়নের নির্দেশ দিয়েছে। ওই চারজনের কারও বিরুদ্ধেই অপরাধে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।
যাঁদের জার্মানি থেকে বিতাড়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের তিনজন ইউরোপীয় ও একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
চারজনই এ বছর জানুয়ারিতে ডাকযোগে প্রথম এ বিষয়ে চিঠি পান। ওই চিঠিতে তাঁদের স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার হারানোর কথা জানানো হয়।
দুই মাস পর ওই চারজনের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলের পক্ষে বার্লিনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিতাড়নের নির্দেশসংবলিত চিঠি পান। তাঁদের ২১ এপ্রিলের মধ্যে জার্মানি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নতুবা তাঁদের জোর করে বিতাড়ন করা হবে।
ওই চার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী হলেন মার্কিন নাগরিক ২৭ বছর বয়সী কুপার লংবটম। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। বাকি তিনজন হলেন পোল্যান্ডের নাগরিক ৩৫ বছরের কাসা ব্লেচেক এবং দুই আইরিশ নাগরিক শেন ও’ব্রায়ান (২৯) ও রবার্টা মারে (৩১)।
এই চারজনই বার্লিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
এই চারজনের বিরুদ্ধে আনা একটি পুলিশি অভিযোগ আল–জাজিরা দেখেছে। ওই অভিযোগে জার্মান কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই চার ব্যক্তি ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়েছেন এবং উসকানি দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগও করা হয়েছে।
তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়া, সম্পদের ক্ষতি করা এবং শান্তি বিঘ্নিত করার মতো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগও আনা হয়েছে।
ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হয়েছেন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন মার্কিন অভিবাসন আদালতের এক বিচারক।
আরও পড়ুনফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন করা যেতে পারে বলে বিচারকের মত১২ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনফিলিস্তিনের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়৩০ এপ্রিল ২০২৪