বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন অনেক শিক্ষার্থীই দেখে থাকে। আর সেটি যদি দেশে বসেই করা যায় তাহলে বিষয়টি আরও সহজ হয়ে যায়। আর এই সুযোগটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য করে দিচ্ছে মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশে ক্যাম্পাস রয়েছে।
দেশে বসেই একটি শীর্ষ সারির আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। ২০২৫ সালের কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ২৬৫তম। এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৫, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মধ্যে ৯। এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদ বিশ্বের শীর্ষ ২৫০টি বিজনেস স্কুলের মধ্যে অন্যতম। মালয়েশিয়ার অনুমোদিত কোর্স কারিকুলাম এখানে পড়ানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ফ্যাকাল্টি। ফ্যাকাল্টির কারিকুলাম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি ট্রেন্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
ব্যবসায় ও ব্যবস্থাপনা অনুষদের প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে:
বিবিএ-ফাইন্যান্সিয়াল ইকোনমিকস, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, মার্কেটিং, লজিস্টিকস ম্যানেজমেন্ট, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ব্রান্ডিং অ্যান্ড অ্যাডভার্টাইজিং, সাপ্লাই চেইন অপারেশন ম্যানেজমেন্ট।
বৃত্তির সুযোগ : মধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তি থাকছে। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং ‘ও’ লেভেল ও ‘এ’ লেভেল ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। মাস্টার্স প্রোগ্রামের
শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রির ফলাফল ও প্লেসমেন্ট টেস্টের পারফরম্যান্স বিবেচনায় বৃত্তি প্রদান করা হয়।
একই পরিবারের একাধিক সদস্য, গরিব কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্যও বিশেষ শিক্ষা সহায়তার সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শনকারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষা সহায়তার ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ডিগ্রি অর্জনের পর দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে চাকরির সুযোগ পাবে। বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান মালিকানাধীন ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ক্লাসরুমের পাশাপাশি বিশেষায়িত কম্পিউটার ল্যাব, ফ্যাশন ডিজাইন ল্যাব, গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল ল্যাবসহ সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসের অনলাইন লাইব্রেরি ও ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। শিক্ষার্থীরা চাইলে মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসে ক্রেডিট ট্রান্সফারেরও সুযোগ পাবেন।
ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক ড.
বিস্তারিত : www.bangladesh.ucsiuniversity.edu.my
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষ র থ দ র জন য ইউন ভ র স ট ব জন স ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় সীমা হত্যা নাটকে এসআই শাহ আলমের কারাদণ্ড
দুর্নীতি দমন কমিশেনের (দুদক) করা মামলায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বরখাস্তকৃত এসআই মো. শাহ আলমকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে আলাদাভাবে ৭ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কামরুল হোসেন জোয়ার্দার।
খুলনার খালিশপুরের মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় মিল্কিওয়ে আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসানের বাসার গৃহকর্মী সীমা হত্যার নাটক সাজানো এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে হওয়া মামলার পৃথক দুটি ধারায় তাকে এ দণ্ড দেন বিচারক।
আরো পড়ুন:
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
ভিক্ষুককে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গণধোলাই
মামলা সূত্রে জানা যায়, মিল্কিওয়ে আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসান ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন ২০০৯ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমানের ৯ বছরের মেয়ে সীমাকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন কাজ করার পর সীমা ওই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় সীমার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে মাসুদ হাসান, মোহাম্মদ আলী খন্দকার ও মো. মাসুদ শেখকে আসামি করে ২০১২ সালের ৭ মে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম এই পরিবারটির কাছে তিন লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় এসআই শাহ আলম নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘হত্যা নাটক’ সাজান। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া উপজেলার লাইন বিল পাবলার একটি খাল থেকে বস্তাবন্দী ২৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী একটি নাম না জানা লাশকে যাচাই বাছাই না করে সীমা হিসেবে শনাক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালান। তদন্ত কার্যক্রমে এই পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম ও তার স্ত্রীকে অভিযুক্ত করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর অ্যাডভাকেট কামরুজ্জামান ভূইয়া আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সীমাকে ফেরত দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট করেন।
২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর আদালত সীমাকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর বাসা থেকে সীমাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে আদালত দুদককে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
গৃহকর্মী সীমা হত্যা নাটক ও জীবিত উদ্ধার ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে এসআই মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ আগস্ট খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ওই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন (নং-১৭০)।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ২০১২ সালের ৭ মে দায়েরকৃত নারী ও শিশু-২৫৭/১২ নম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম নগদ ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ ছাড়াও মাসুদ হাসানের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। ওই টাকা না পেয়ে কাজের মেয়ে সীমা হত্যার কল্পকাহিনী তৈরি করে মাসুদ হাসান দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেন। কথিত অপহরণ মামলায় মাসুদ হাসানের নাম উল্লেখ থাকলেও তার স্ত্রীর নাম ছিল না। তারপরেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করেই এসআই শাহ আলম দ্রুত সাংবাদিকদের ছবি তুলে তাদেরকে আসামি হিসেবে আদালতে পাঠান। এরপর ডুমুরিয়ার একটি নাম না জানা লাশ নিয়েই তৈরি করা হয় সীমা হত্যার ‘কল্পকাহিনী’।
দুদকের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, বরখাস্তকৃত এসআই শাহ আলম অপহরণ মামলা তদন্তকালে জনৈক মাজেদা বেগম ও দিপালী সরকারকে দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট বক্তব্য প্রদানের ব্যবস্থা করেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ