কনসেপ্ট এমন প্রযুক্তি, যা ঘরের ভেতর ও বাইরে দুই জায়গার আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে প্রোটোটাইপ স্মার্টফোনের কেসে তা শক্তি সংরক্ষণ করে...
সারাবিশ্বে ‘এআই, ইকোটেক ও নিজস্ব উদ্ভাবনের মাধ্যমে আগামীর ক্ষমতায়ন’ দর্শন সামনে রেখে প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স দুটি নতুন উদ্ভাবনের কথা জানাল। যার মধ্যে সোলার এনার্জি-রিজার্ভিং প্রযুক্তি বা পরিবেশের আলো ব্যবহার করে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ফোনের ডিজাইন কাস্টমাইজ উল্লেখযোগ্য।
সোলার এনার্জি রিজার্ভিং
ব্র্যান্ডের সোলার এনার্জি রিজার্ভিং প্রযুক্তি টেকসই ও কার্যকর শক্তি ব্যবস্থাপনায় সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। মানোন্নত পেরোভস্কাইট ফটোভোলটাইক প্রযুক্তি ও বুদ্ধিমান এআই অ্যালগরিদমের সমন্বয়ে আলোকে শক্তিতে রূপান্তর করে, যা চার্জিং পদ্ধতিকে কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব করে। কনসেপ্ট প্রযুক্তিটি ঘরের ভেতর ও বাইরে দুই জায়গার আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে প্রোটোটাইপ স্মার্টফোনের কেসে সংরক্ষণ করে। ফোন কেসটির ভেতরে থাকা সংযোগ পয়েন্টের মাধ্যমে সংরক্ষিত শক্তি স্মার্টফোনে স্থানান্তরিত হয় ফলে চার্জিং প্রক্রিয়া হয় নির্বিঘ্ন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পরিচালিত ‘সানফ্লাওয়ার’ ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি এমন উদ্ভাবনের জরুরি অংশ। সূর্যমুখী গাছের মতো প্রযুক্তিটি আলোর প্রতি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে, যাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে আলো গ্রহণ করা যায়। স্মার্ট আলোকসংবেদী সেন্সর ও এআই-নিয়ন্ত্রিত চার্জিং প্রযুক্তির সহায়তায় তিন মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সর্বোত্তম চার্জিং সুবিধা দেয়। ভবিষ্যতে এমন উদ্ভাবনা আরও বিস্তৃতির পথে এগোবে।
ই-কালার শিফট ২.
শক্তি ব্যবস্থাপনার উদ্ভাবনের সঙ্গে
ই-কালার শিফট ২.০ নামে এআই পরিচালিত মানোন্নত প্রযুক্তি, যা স্মার্টফোনের ডিজাইনে নিজের ব্যক্তিত্বের ছাপ রাখতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। ফিচারের মাধ্যমে গ্রাহক ফোনের রং ও ডিজাইন পছন্দমতো পরিবর্তন করার সুযোগ পাবে। বিশেষ ফিচারে বাইরের পরিবেশ ও পছন্দ অনুযায়ী ফোনের রং স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন হবে। কাস্টমাইজড মডেলে ছয়টি ডায়নামিক প্যাটার্ন ও ছয়টি উজ্জ্বল রঙের প্যালেট থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ, যা
মিলিয়ে ৩০টি ভিন্ন কম্বিনেশন তৈরি
করা সম্ভব হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। তারা উপাচার্যকে অভিযোগপত্রের একটি কপি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত আব্দুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার পোস্টটির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সমালোচনা হয়।
আরো পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ফ্যাসিবাদমুক্ত নববর্ষ
৫ বছর পর কুবিতে নববর্ষ উদযাপন
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী (আব্দুর রহমান, আইন বিভাগ ১৮তম আবর্তন) লাগাতার সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সোমবার (১৪ এপ্রিল) একটি পোস্টে সনাতন ধর্মকে ঘৃণিত ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখোনে ‘হিন্দুধর্ম। ইট'স রিকোয়াইর্স টু বি অ্যাগ্রেসিভলি রেপড, (গালি) ইন আ রুড ওয়ে। (গালি)।’ বলা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, এই বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান এবং ঘৃণিত করে। এ ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজ বা শিক্ষাঙ্গনে মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বর্তমানে ২ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে এমন কোনো মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত নয়, যা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে তাদের দাবি, ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণিত কাজ না করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) এম এ হোসাইন নামের একটি পেইজে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে জীবন্ত ছাগলকে পুড়িয়ে ফেলার একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেটার ক্যাপশন অপশনে লেখা ছিল ‘জনশ্রুতি আছে, পৃথিবীর নিকৃষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একটা নিরীহ জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে আগুনে পুড়ে মারার অধিকার কি কোনো ধর্মে আছে?’
পরবর্তীতে স্ক্রিনশটটি আরো ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারকৃত পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত আবদুর রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা হয়েছে।
আইন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজীব বিশ্বাস বলেন, “আব্দুর রহমান যেভাবে ফেসবুকে আমাদের ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ধর্মকে নিয়ে এমনভাবে গালি দিতে পারে? আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, বিগত বছরগুলাতে যেভাবে ধর্মকে অবমাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে, এবারো যেন তার ব্যতিক্রম না ঘটে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদুর রহমান বলেন, “আমি আমার বক্তব্য প্রক্টর অফিসে দিয়েছি।”
আইন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মোর্শেদ কাজেম বলেন, “আমি এই বিষয়ে অবগত নই। ঘটনা সম্পূর্ণ না জেনে আমি তো কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যেহেতু আইন বিভাগের, সেহেতু আমরা ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি শৃংখলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমি অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে শোকজ করা হবে। তার লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণের পর নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী