Samakal:
2025-04-15@07:45:16 GMT

শারীরিক শিক্ষা গুরুত্ব পাক

Published: 23rd, March 2025 GMT

শারীরিক শিক্ষা গুরুত্ব পাক

প্রায় সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাওয়ায় আমাদের অনেকেরই শারীরিক কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। সবকিছুই যখন ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে হয়ে যাচ্ছে, এতে অনেকের মধ্যে এক ধরনের অলসতাও তৈরি হচ্ছে। শারীরিক পরিশ্রমের কাজ না করার কারণে অল্প বয়সেই অনেকের শরীরে স্থূলতা, নিদ্রাজনিত সমস্যা, হতাশা দেখা দিচ্ছে। শারীরিক পরিশ্রম না করায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। 

আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি বা বাংলা ব্যাকরণ, গণিত, পদার্থ, রসায়ন কিংবা মানসিক দক্ষতা বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এতে বিশেষ কয়েকটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলেও আমাদের শরীর ও মনের যে একটা সুস্থতা প্রয়োজন, তা ভুলতে বসেছি। ফলে বিশ্বায়নের এ যুগে আমাদের প্রয়োজন একাধিক জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়সমৃদ্ধ পাঠ্য বিষয়ের, যে বিষয় শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক জ্ঞান দেবে। অর্থাৎ জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান বা জীবনঘনিষ্ঠ সব বিষয়ের জ্ঞান দান করবে। অন্যদিকে ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করবে। দূর করবে হতাশা; এনে দেবে মানসিক প্রশান্তি।  

এ ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে শারীরিক শিক্ষা বিষয়টি হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট সহায়ক। যার লক্ষ্য ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ। শরীর, মন ও জীবনের পরিপূর্ণ সুস্থতা। শারীরিক শিক্ষা বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যক্তির শারীরিক বিকাশ ঘটানো ও শারীরিক সুস্থতা নির্ণয় করে। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটায়। পাশাপাশি সামাজিক পরিমণ্ডলে কীভাবে একজন শিক্ষার্থী বা ব্যক্তি নিজেকে মানিয়ে নেবে কিংবা নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে, তার শিক্ষা দেয় শারীরিক শিক্ষা। 
বিশ্বায়নের এই যুগে একদিকে যেমন আমরা প্রযুক্তিকে অবহেলা করতে পারি না, তেমনি ছোট এই জীবনে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকেও অবহেলা করতে পারি না। উভয় ক্ষেত্রেই ভারসাম্য রক্ষা করতে শারীরিক শিক্ষার মতো বিষয়কে শুধু বাধ্যতামূলক করা দরকার। শারীরিক শিক্ষা বিষয়কে বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা উল্লেখ করতে পারি। প্রথমত সুস্থ জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষা। অর্থাৎ ব্যক্তির সুস্থতা নিশ্চিত করতে শারীরিক শিক্ষার অংশ হিসেবে খেলাধুলা, শরীরচর্চা কিংবা বিভিন্ন শারীরিক কসরত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি সপ্তাহে শারীরিক শিক্ষার কমপক্ষে চারটি ব্যবহারিক ক্লাস এবং অন্তত দুটি তাত্ত্বিক ক্লাস থাকলে শিক্ষার্থীরা নিজেই তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে স্বশিক্ষিত হতে পারবে। এতে শিশু-কিশোররা নিজেই শরীর ও মনের যত্ন নিতে শিখবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশ পাবে সুস্থ ও সবল জাতি। 

দ্বিতীয়ত, দাবি উঠেছে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দেওয়ার। প্রাচীনকালেও সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির জন্য শারীরিক শিক্ষার ব্যাপক ব্যবহার ছিল, যা তৎকালীন সময়ে দেশ রক্ষার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যদিও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে এটি এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তবে এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আমরা শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের কর্মসূচির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে এ প্রজন্মকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারি। অর্থাৎ শারীরিক শিক্ষার ক্লাস বৃদ্ধি করে শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের মাধ্যমেই কঠোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে, যা দেশ রক্ষার কাজে ভবিষ্যতে সাহায্য করবে নিশ্চিতভাবেই।
সুতরাং উপরিউক্ত বিষয়গুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করলেই বুঝতে পারি শিক্ষা ব্যবস্থায় শারীরিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ফলে এখন সময় এসেছে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শারীরিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে মূল্যায়ন ও প্রতিষ্ঠিত করার। 

মো.

রায়হান হোসাইন: সভাপতি, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র আম দ র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

নেইমারের সান্তোসে ফেরার পথে মেসির পুরনো কোচ

জানুয়ারিতে মহাআয়োজন করে সান্তোস ফিরিয়ে এনেছিল তাদের এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার জুনিয়রকে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ব্রাজিলায়ান ক্লাবটি ফেরাতে পারে সাবেক কোচ হর্হে সাম্পাওলিকে। এই ৬৫ বছর বয়সী কোচও গত দেড় দশকে সান্তোসের সবচেয়ে সফল কোচ ম্যাচ জয়ের হিসেবে।

সান্তোস সম্প্রতি পর্তুগিজ কোচ পেদ্রো কাইসিনহাকে বরখাস্ত করেছে। এরপরই সাম্পাওলিকে ফেরানোর আলোচনা শুরু হয়েছে। আগের ধাপে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদকালে অসাধারণ সাফল্যের কারণে এই চিলিয়ান কোচের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন ভক্তদের মধ্যে রোমাঞ্চের সৃষ্টি করেছে।

নেইমার এখন সান্তোসে। ফলে সাম্পাওলি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটিতে ফিরলে, আবারও সুযোগ পাবেন শীর্ষ মানের এক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করার। এর আগে এই চিলিয়ান কোচ লিওনেল মেসির সঙ্গে কাজ করেছিলেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ থাকাকালীন। তাঁর অধীনেই ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ খেলে আলবিসেলেস্তারা।

আরো পড়ুন:

বার্সেলোনা নয়, মেসি থাকছেন মায়ামিতেই

মেসি ম্যাজিকে সেমিফাইনালে মায়ামি

সান্তোসের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো তেইশেইরার নেতৃত্বে যখন নতুন কোচের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তখনই সাম্পাওলির নাম উঠে আসে। তিতে ও ডোরিভাল জুনিয়রের মতো কয়েকজন অভিজ্ঞ ও সুনামধন্য কোচকে প্রস্তাব দিলেও তারা রাজি হননি। অন্যদিকে ক্লাবটির বোর্ডের একটি অংশ সাম্পাওলির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। এই ৬৫ বছর বয়সী কোচ স্কোয়াডে বড় বিনিয়োগের ব্যাপারে বলেছেন। এছাড়াও তার কঠিন কোচিং করানোর কৌশলের জন্যও কিছুটা দ্বিধা রয়েছে। তবুও, প্রেসিডেন্টের কাছে তিনি শীর্ষ পছন্দ হিসেবে রয়েছেন।

সাম্পাওলি ফ্রেঞ্চ ক্লাব রেঁনেতে ও দ্বিতীয় ধাপে সেভিয়াতে ব্যর্থতার পর ২০২৩ সালে ফ্ল্যামেঙ্গোতে চলে আসেন নতুন কোচিং দায়িত্ব নিয়ে। এছাড়াও তিনি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব অ্যাটলেটিকো মিনেইরোকেও কোচিং করিয়েছেন।

সান্তোসের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলেছিলেন সাম্পাওলি বলেন, “সান্তোস এবং সান্তিসতা জাতি, যারা আমাকে এত ভালোবাসার সাথে স্বাগত জানিয়েছে, তাদের প্রতি আমি কেবল জন্মদিনের শুভেচ্ছাই জানাই না, বরং একই সাথে বিশ্ব ফুটবলের এই বিশাল জায়গাটির জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ পুনর্গঠনও আশা করি। যাতে এটি আবারও তার প্রাপ্য আনন্দ উপভোগ করতে পারে, যার সাথে তারা সর্বদা অভ্যস্ত।”

ব্রাজিলের ক্লাবগুলোতে আর্জেন্টাইন কোচদের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে লুইস সুবেলদিয়া (সাও পাওলো), হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা (ফর্টালেজা), র‍্যামন দিয়াজ (করিন্থিয়ান্স) এবং গুস্তাভো কিনতেরোস (গ্রেমিও) দলের দায়িত্বে আছেন।

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ