অভ্যুত্থানে আহতদের পাশে থাকার ঘোষণা সেনাপ্রধানের
Published: 23rd, March 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আমি আপনাদের অ্যাসুরেন্স (নিশ্চয়তা) দিচ্ছি যে, আমরা সব সময় আপনাদের পাশে থাকব। আপনারা কখনও মনোবল হারাবেন না। মনোবল হারানোর কিছু নেই।
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আহতদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আপনারা জাতির কৃতী সন্তান। আপনারা এ দেশ ও জাতির জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন। আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং আপনাদের এই অ্যাসুরেন্স (নিশ্চয়তা) দিচ্ছি, সব সময় পাশে থাকব।’
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের চেষ্টা থাকবে উল্লেখ করে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২১৫ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই সাহায্য-সহযোগিতা সব সময় জারি থাকবে। আমরা চেষ্টা করব একটি রিহ্যাবিলিটেশনের (পুনর্বাসন) জন্য। সে দিকেই ইনশাআল্লাহ আমরা চেষ্টা করে যাব এবং এই আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা আপনাদের জন্য সব সময় জারি থাকবে।
আহত ব্যক্তিদের সম্মানে ইফতার আয়োজনের পাশাপাশি তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কাজ করছে। ব্যবসায়ী, ব্যাংক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও সহযোগিতা করছে। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) পক্ষ থেকে পাওয়া অর্থ আহতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) অর্থ সহায়তা করেছে।
ইফতার অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের খোঁজখবর নেন। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইফতার ও নৈশভোজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রী, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসামরিক বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিচালক অংশগ্রহণ করেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ৪ হাজার ২১৫ জনকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৯৮৯ জন আহতের সফলভাবে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ৩৯ জন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপন দ র সব সময় ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নিষিদ্ধে ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচি
গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আগামী দুই সপ্তাহ ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরন আন্দোলনের সংগঠক ও সহ-সমন্বয়ক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বতী সরকারের প্রধান কর্তব্য ছিল, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতসহ শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় কর্তব্য হওয়া উচিত ছিল, জুলাই গণহত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কিন্তু অন্তর্বতী সরকার কোনো ক্ষেত্রেই আশানুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।“
আরো পড়ুন:
অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তারের দাবি ঢাবি সাদা দলের
গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু গোষ্ঠী নারীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে: আনু মুহাম্মদ
তিনি বলেন, “আহতদের এখনো নিজেদের চিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব, জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবেন না। ছাত্র-জনতা এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন। গড়িমসি বন্ধ করে অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করুন। যদি আপনারা সেটি না করে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন, জুলাই শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করার দুঃসাহস দেখান, তাহলে আপনাদের পরিণতিও ভালো কিছু হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা গত কয়েকদিন ধরে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ গড়ে তুলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এসেছি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্র-জনতার মাঝে ঐকমত্য রয়েছে বলেই বিগত কর্মসূচিগুলোতে ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এ পর্যায়ে আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা আগামী দুই সপ্তাহের জন্য ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
মোসাদ্দেক বলেন, “এ কর্মসূচির আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, গণসংযোগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নাগরিক সমাজের ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণা, দেয়াল লিখন ইত্যাদি প্রচারণা মূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে চলবে এই কার্যক্রম।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী