জামায়াতে ইসলামীর নেতা–কর্মীরা তাঁর দেওয়া একটি বক্তব্যকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মঞ্চে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মো.

দেলোয়ার হোসাইনের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই যে আমার পাশে বসে আছেন জামায়াতে ইসলামীর ভাই। আমি একটা মিটিংয়ে বলেছিলাম, নবী উল্লাহ নবীকে জেলে দে তারপর আমি কথা বলব। এই কথাকে বিকৃত করে কীভাবে লিখতেছে। আপনি আপনার দলের দিকে প্লিজ খেয়াল রাইখেন ভাই।’

এর আগে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ীতে বিএনপির এক সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীরা স্লোগান না থামানোয় মির্জা আব্বাস মেজাজ হারিয়ে বলেছিলেন, ‘ওই ব্যাটা, কার কথা কইতাছস তুই? ফাজিল কোথাকার! নবীরে ধইরা জেলে দিয়া আয়। ফাজিলগুলা কোথাকার।’

বিএনপির ওই এলাকার প্রভাবশালী এক নেতার নাম নবী উল্লাহ নবী। সম্প্রতি মির্জা আব্বাসের সেই বক্তব্য সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে মির্জা আব্বাস মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে উদ্দেশ্য করে ওই কথা বলেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে।

জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইনের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘এই যে এডিটিং করতেছেন, নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন...কেন এই কাজগুলো করেন। এটা তো পরশ্রী কাতরতা, এটা অন্যকে ক্ষতি করা। এই কাজগুলো করলে মাফ পাবেন না, এটা কি জানেন?’

মির্জা আব্বাস বক্তব্য দিয়ে মঞ্চ ত্যাগ করে চলে যান। পরে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন বক্তব্য দেন। তবে তিনি মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের বিষয়ে কিছু বলেননি।

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘জেলে থেকে পচে পচে আমরা কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আপনারা যাঁরা বাইরে আছেন, আপনারা এই স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেননি। সুতরাং আমার কথা শুনুন, আমার কথা বোঝার চেষ্টা করুন। নির্বোধরা আমার কথা বুঝবে না। আমি আবারও বলি, দেশে কিংবা বিদেশে যারা নির্বোধ আছে, তারা আমার কথা বুঝবে না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’–এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এ বি এম রফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন এবং এতে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসিন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সদস য উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর সামনে কর্মচারীদের মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা

দিনাজপুরের বিরামপুরে পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠান চলাকালে উপজেলা পরিষদের তিন কর্মচারীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চে ঘটনাটি ঘটে। এসময় সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), বিরামপুর থানার ওসি, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার বিষষটি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন।

আরো পড়ুন:

শিশুকে ‌‘ধর্ষণ’, গণপিটুনি দিয়ে অভিযুক্তকে পুলিশে সোপর্দ

জামিন: জেল গেটে হামলার শিকার সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ

আহতরা হলেন- উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম ওরফে রনি। তাদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে চলছিল। উপজেলা পরিষদ ও ইউএনওর কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের পান্তা, মাছ, ভর্তা ও পানি বিতরণ করছিলেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে বাকবিতাণ্ড শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা সবার সামনে ওই তিন কর্মচারীকে মারধর করে আহত করেন।

ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, “সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম। পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করেন। আমরা বাঁধা দিলে ওই নেতা ও তার সহযোগীরা আমাদের পিটিয়ে আহত করেন।”

অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল বলেন, “ভাই আমি রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। আমার ভুল হয়েছে।”

বিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, “এমন অনুষ্ঠানে এ ধরনের আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি সেখান থেকে চলে আসি।”

জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন বলেন, “আপনি সামনাসামনি আসেন, মোবাইলে নয়।”

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, “এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ দিলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিরামপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, “বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। এমন অনুষ্ঠানে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।”

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ