প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আ. লীগ নেতা কারাগারে
Published: 23rd, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাকির হোসেন নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর রোববার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার জাকির হোসেন উপজেলার শ্রীনগর দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত ময়েজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনফিডেন্স কিন্ডারগার্টেন নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী তাঁর মেয়েকে শ্রীনগর গ্রামে জাকির হোসেনের কনফিডেন্স কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করান। নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে জাকির হোসেনের সম্পর্ক গভীর হয়। এ সুবাদে গত ১৫ জানুয়ারি স্কুলের নির্মাণ কাজের কথা বলে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ধার নেন জাকির। তিন মাসে ধার করা অর্থ পরিশোধের কথা থাকলেও টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা করতে থাকেন জাকির। এক পর্যায়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি টাকা দেওয়ার কথা বলে জাকির ওই নারীকে ডেকে নিয়ে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ষণ করেন। ওই দিন রাতে জাকিরের সহযোগী হোসেন মিয়াও জাকিরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে ভয় দেখিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে জাকির হোসেন ও হোসেন মিয়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিষপান করেন প্রবাসীর স্ত্রী। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে গত শনিবার থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ৫ সন্তানের জননী ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে জাকিরের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কৌশলে ওই নারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছে জাকির। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই নারী। পরে স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, ওই নারী বাদী হয়ে শনিবার জাকিরসহ দু’জনের নামে থানায় মামলা করেন। ওই দিন রাতে জাকিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ আওয় ম ল গ প রব স র স ত র ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়