মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যা, আদালতে ছেলের স্বীকারোক্তি
Published: 23rd, March 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়ায় নামাজ পড়া অবস্থায় ইতালিপ্রবাসী ব্যবসায়ী (৫২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহত ব্যক্তির একমাত্র কিশোর ছেলে (১৭)। আজ রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিপন হোসেন তার জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে তাকে যশোর পুলেরহাটের শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে বাড়িতে তারাবিহর নামাজ পড়া অবস্থায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে নৃশংসভাবে ওই প্রবাসী ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপরই সদর থানা-পুলিশ নিহত ব্যক্তির বাড়ির একটি কক্ষের খাটের নিচ থেকে মাদ্রাসায় পড়া ছেলেকে আটক করে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মেয়ে বাদী হয়ে তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে আজ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রীকে সাক্ষী করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আদালতের পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, নিজ বাবাকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার কিশোরকে আজ বিকেলে চুয়াডাঙ্গার আমলি আদালতে সোপর্দ করে থানা-পুলিশ। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক দেওয়ান তারিকুল ইসলাম বলেন, বাবার হত্যায় অভিযুক্ত কিশোরকে সময় স্বল্পতার কারণে কারাগারের নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে। কাল সোমবার সকালে তাকে যশোর পুলেরহাটে কিশোর উন্নয়নকেন্দ্রে পাঠানো হবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১১ মার্চ তিনি বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিবাদী তাঁর একমাত্র ভাই। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র। কয়েক বছর ধরে সে মুঠোফোনে বিভিন্ন গেম, ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবে আসক্ত হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে মাদক সেবনেও আসক্ত হয়। বিষয়টি বাবার দৃষ্টিগোচরে এলে বাবার সঙ্গে তার (বিবাদীর) মনোমালিন্য হয়। বাবার কথা না শুনে সে মুঠোফোন ও মাদক নিয়ে পড়ে থাকত। ২২ মার্চ (ঘটনার দিন) সকাল নয়টার দিকে বাবা বিবাদীর কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নেন। এতে বিবাদী ক্ষিপ্ত হয় এবং বাবাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। রাত পৌনে আটটার দিকে বাবা নামাজ পড়তে থাকলে বিবাদী আগের ঘটনার জেরে ধারালো ছুরি দিয়ে পেছন থেকে পিঠে, কাঁধে, কপালে ও কনুইতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। বাবার চিৎকারে তিনি ও তাঁর মা বিবাদীর হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
আদালত সূত্র জানায়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই কিশোর তার বাবার হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বলে, প্রবাস থেকে দেশে ফেরার পর বাবা-মায়ের মধ্যে পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত, যা নিয়ে সে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিল। এর মধ্যে শনিবার মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ায় সে বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এরপর বাবাকে রাতে শারীরিকভাবে আঘাত করার সিদ্ধান্ত নেয়। আঘাতের আগে সে গাঁজা সেবন করে। কিশোর আদালতকে জানায়, বাবাকে শারীরিকভাবে আঘাতের সিদ্ধান্ত নিলেও তাঁকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা ছিল না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
বরফঠান্ডা পানিতে একসঙ্গে ২৪৬১ মানুষের গোসল
প্রচণ্ড শীতে জলাশয়ের প্রায় বরফঠান্ডা পানিতে গোসল করার কথা শুনলে অনেকেই পিছিয়ে যাবেন। তবে চেক প্রজাতন্ত্রের ২ হাজার ৪৬১ জন একসঙ্গে এই কঠিন কাজ করে দেখিয়েছেন। ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার পানিতে গোসল করেছেন তাঁরা। যেটাকে বলা হয় ‘পোলার বিয়ার ডিপ’।
‘সাহসী’ এই কাজের লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানো। চেক প্রজাতন্ত্রের দ্বিতীয় বৃহৎ হ্রদ মোস্ট লেকে গত ১ মার্চ ওই গোসলের আয়োজন করা হয়।
ওই আয়োজনের উদ্যোক্তা ডেভিড ভেনকল। তিনি একজন ফ্রিডাইভার। ‘কোল্ড থেরাপি’ পরামর্শক হিসেবেও চেক প্রজাতন্ত্রে তাঁর নামডাক আছে।
সাঁতারের পোশাকে ঠান্ডা পানিতে নেমে ‘পোলার বিয়ার ডিপ’ করতে হয়। অনেক দেশেই এ ধরনের আয়োজন করা হয়। সাধারণত দাতব্যকাজের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে কিংবা নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্যাপন করতে এমন আয়োজন করা হয়।
আগে ‘পোলার বিয়ার ডিপ’-এর রেকর্ড ছিল পোল্যান্ডের একটি দলের। ২০১৫ সালে পোল্যান্ডের ১ হাজার ৭৯৯ জনের একটি দল ঠান্ডা পানিতে গোসল করে ওই রেকর্ড গড়েছিল।
ভেনকলের অবশ্য এটাই প্রথম রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নয়। এর আগে তিনি কোনো ধরনের পাখনা ও ডাইভিং স্যুট ছাড়া বরফপানির নিচে সবচেয়ে বেশি সময় সাঁতার কাটার রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০২১ সালে তিনি ওই রেকর্ড গড়েন এবং চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ওই রেকর্ডের মালিক ছিলেন।
‘কোল্ড থেরাপি’ শরীর ও মনের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো, তা দেখাতে ২ হাজার ৪৬১ জনকে নিয়ে বরফঠান্ডা পানিতে গোসলের আয়োজন করা হয়েছিল।
গোসলের দিন সকালে অংশগ্রহণকারীরা নাম নিবন্ধন করেন এবং বিকেলে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার পানিতে নেমে গোসল করেন।
গোসলে অংশ নেওয়ার আগে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন কোল্ড থেরাপি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার জন্য ঠান্ডা পানিতে গোসলে নামার আগে বেশ কিছু পরামর্শ দেন।
প্রথমে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা পানিতে নামেন। রেকর্ড গড়তে সব অংশগ্রহণকারীকে অন্তত এক মিনিট পানিতে সম্পূর্ণ শরীর ডুবিয়ে রাখতে হয়েছে। সফলভাবে এক মিনিট পার করার পর নতুন রেকর্ড গড়ার উল্লাসে চিৎকার করে ওঠেন অংশগ্রহণকারীরা।