বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
Published: 23rd, March 2025 GMT
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা ১২ বিচারপতির মধ্যে মো. আখতারুজ্জামানও রয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ১২ বিচারপতির বিষয়ে তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি। তাঁদের মধ্যে একজন পদত্যাগ করেছেন, দুই বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাননি, অপর দুজন বিচারপতি ইতিমধ্যে অবসর নিয়েছেন। বাকি সাতজন বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুসন্ধান চলছে। যে সাতজন বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুসন্ধান চলছে, তাঁদের মধ্যে চারজনের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। অন্য তিনজনের বিষয়ে চলছে প্রাথমিক অনুসন্ধান।
অনুসন্ধান কার্যক্রম চলা সাতজন বিচারপতির মধ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তের পর একজন বিচারপতিকে ইতিমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬) মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে তাঁর পদ থেকে ১৮ মার্চ অপসারণ করেছেন।
অপর ছয় বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি মো.
আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে গত বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দিন হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। সেদিন জাতীয় নাগরিক কমিটির লিগ্যাল উইং–ও ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এরপর গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্ট বিভাগে ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। তবে হাইকোর্ট বিভাগের কোন ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না, তাঁদের নাম তখন প্রকাশ করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। আর গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬(৫)(বি) অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। সে অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তদন্ত শুরু করবে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ২০১৭ সালে রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে গত বছরের ২০ অক্টোবর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদের ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ উপ-অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়। এই রায়ের ফলে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি পুনর্বহাল হয়। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয় প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারপতিকে নিয়ে।
আরও পড়ুনবিক্ষোভের মুখে হাইকোর্টের ১২ বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে ১৬ অক্টোবর ২০২৪আরও পড়ুনতিন বিচারপতি বিচারকাজ থেকে বিরত থাকবেন২২ আগস্ট ২০১৯উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আখত র জ জ ম ন ব চ রপত দ র ব চ রপত ক ন ব চ রপত র ষ ট রপত গত বছর র অন চ ছ দ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা ১২ বিচারপতির মধ্যে মো. আখতারুজ্জামানও রয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ১২ বিচারপতির বিষয়ে তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি। তাঁদের মধ্যে একজন পদত্যাগ করেছেন, দুই বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাননি, অপর দুজন বিচারপতি ইতিমধ্যে অবসর নিয়েছেন। বাকি সাতজন বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুসন্ধান চলছে। যে সাতজন বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুসন্ধান চলছে, তাঁদের মধ্যে চারজনের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। অন্য তিনজনের বিষয়ে চলছে প্রাথমিক অনুসন্ধান।
অনুসন্ধান কার্যক্রম চলা সাতজন বিচারপতির মধ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তের পর একজন বিচারপতিকে ইতিমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬) মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে তাঁর পদ থেকে ১৮ মার্চ অপসারণ করেছেন।
অপর ছয় বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে রাষ্ট্রপতির দেওয়া নির্দেশনার বিষয়টি আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয়।
আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে গত বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দিন হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। সেদিন জাতীয় নাগরিক কমিটির লিগ্যাল উইং–ও ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এরপর গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্ট বিভাগে ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। তবে হাইকোর্ট বিভাগের কোন ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না, তাঁদের নাম তখন প্রকাশ করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। আর গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬(৫)(বি) অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। সে অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তদন্ত শুরু করবে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ২০১৭ সালে রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে গত বছরের ২০ অক্টোবর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদের ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ উপ-অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়। এই রায়ের ফলে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি পুনর্বহাল হয়। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয় প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারপতিকে নিয়ে।
আরও পড়ুনবিক্ষোভের মুখে হাইকোর্টের ১২ বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে ১৬ অক্টোবর ২০২৪আরও পড়ুনতিন বিচারপতি বিচারকাজ থেকে বিরত থাকবেন২২ আগস্ট ২০১৯