খুলনায় ব্যবসায়ী অপহরণ: ৫ আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
Published: 23rd, March 2025 GMT
খুলনায় ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ ব্যক্তিকে এক দিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এর বিচারক মো. আল আমিন এই অনুমতি দেন।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খুলনা মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাহাবুব হাসান (পিয়ারু), জাতীয় নাগরিক কমিটির খুলনা মহানগরের সদস্য ইমন মোল্লা, খুলনার স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক জিয়াউস সাদাত, ইমনের সহযোগী জয় হাসান ও সাকিব রহমান। অপহৃত ব্যবসায়ীকে ইমন মোল্লার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো.
এর আগে ব্যবসায়ী মো. নুর আলমকে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে আজ সকালে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন নুর আলমের ছেলে কৌশিক আহমেদ। আগের রাতে আটক পাঁচজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গত শুক্রবার রাতে খুলনা নগরের বসুপাড়া এলাকায় অবস্থিত কৌশিক আহমেদের ভাড়া বাড়ি থেকে তাঁর বাবা ব্যবসায়ী মো. নুর আলমকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নুর আলম গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মো. তৈমুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী নুর আলমের ছেলে খুলনা নগরের বসুপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। কিছুদিন আগে নুর আলম ছেলের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সাংবাদিক জিয়াউস সাদাত নুর আলমদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় হন। তিনি (জিয়াউস সাদাত) নুর আলমের খুলনায় আসার ব্যাপারটি জানতেন। নুর আলমকে অপহরণ করা হলে মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি যুবদল নেতা মাহবুব হাসান ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা ইমন মোল্লাকে জানান। এরপর তিনজন মিলে পরিকল্পনা করে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নুর আলমকে তাঁর ছেলের বাড়ি থেকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে আসেন।
পুলিশ কর্মকর্তা তৈমুর ইসলাম আরও বলেন, ব্যাপারটি জানার পর শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় নগরের ময়লাপোতা এলাকায় মুক্তিপণের টাকা নিতে এলে ইমন মোল্লাকে আটক করা হয়। পরে তাঁর বাড়ি থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেখান থেকে ইমন মোল্লার দুই সহযোগী জয় হাসান ও সাকিব রহমানকে আটক করা হয়। ওই দুজন ব্যবসায়ী নুর আলমকে পাহারা দিচ্ছিলেন। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাহবুব হাসান ও জিয়াউস সাদাতকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
আরও পড়ুনখুলনায় ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে যুবদল–জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাসহ আটক ৫১১ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইমন ম ল ল ব যবস য় ক ন র আলমক ন র আলম নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণের মুক্তিপণ নিয়ে পালানোর সময় ৫ পুলিশ আটক
বগুড়ার ধুনট উপজেলা থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে তিন লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্যসহ ছয় জনকে আটক করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ও পুলিশের একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে বীরগ্রাম এলাকা থেকে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ তাদের আটক করে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
পুলিশ ফাঁড়ির জানালা ভেঙে পালাল আসামি
বাবাকে মানসিক রোগী সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, পরে উদ্ধার
আটকরা হলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার এসআই শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম, বাশির আলী এবং মাইক্রোবাস চালক মেহেদী হাসান।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, আরএমপির গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্য রবিবার (২৩ মার্চ) রাতে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ক্যাসিনো খেলার অভিযোগে আটক করে মাইক্রোবাসে উঠায়। এরপর শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে মাইক্রোবাস থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দর কষাকষি করে নগদ দুই লাখ টাকা এবং বিকাশ ও নগদ অ্যাপসের মাধ্যমে আরো এক লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। বগুড়া জেলা পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে শেরপুর ও শাজাহানপুর থানা এলাকায় তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস আটক করার চেষ্টা করে। দুই থানা পুলিশ মাইক্রোবাস আটক করতে না পেরে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, মাইক্রোবাসে থাকা পাঁচজন নিজেদের রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্য পরিচয় দেন। পরে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, তারা কাউকে না জানিয়ে বগুড়ায় অসৎ উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। পরে তাদের আটক করা হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া নগদ দুই লাখ টাকা ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ধুনট উপজেলার বাসিন্দা ওয়াহাব নামে একজন কনস্টেবল রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত। তিনি ছুটি নিয়ে দুই দিন আগে বাড়িতে আসেন। তার তথ্য মতেই রাজশাহী থেকে পাঁচ পুলিশ ধুনটে আসেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধনে জানা গেছে।
তিনি জানান, আটকদের হাইওয়ে পুলিশ ধুনট থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের নামে ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে অপহরণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ঢাকা/এনাম/বকুল