ছাত্রনেতাদের কয়েক দিনের নানা ধরনের বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক (নুর)। তিনি বলেন, ‘তাঁরা আমাদের পরিচিত ছোট ভাই। আমি অনুরোধ করব, যাঁরা দায়িত্বশীল আছেন, তাঁরা দায়িত্বের সঙ্গে কথা বলুন। এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে করে উসকানি তৈরি হয়, যড়যন্ত্রকারীদের ফায়দা লুটতে রাস্তা তৈরি করে দেয়।’

আজ রোববার বিকেলে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া, আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন নুরুল হক।

গণ অধিকার পরিষদের চাঁদপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী রাসেলের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব মো.

মাহমুদুল হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।

নুরুল হক বলেন, ‘গত ১৫ বছর গণতন্ত্র, ভোটাধিকার না থাকায় আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছে। আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। যাতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ পুনরায় ফিরে না আসতে পারে। আমরা যারা জুলাই ২৪–এর অভ্যুত্থানের সঙ্গে ছিলাম এবং আছি, আমাদের মধ্যে যেন সেই আওয়ামী অপকর্মের কোনো কিছু খুঁজে না পায়। কারণ, এ দেশের ছাত্র–তরুণেরা মিলে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে, জীবন দিয়ে দেশের এই পরিবর্তন এনেছেন। একটি গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেছেন। এটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী প্রশাসনের বড় একটা অংশ জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিতর্কিত করা যাবে না। কারণ, তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। তারা আমাদের জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সে চলে। আগামীতে আমাদের রাষ্ট্র চালাতে হলে তাদের লাগবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল হক আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত, প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে: সালাহ উদ্দিন আহমদ

পাঁচ বছরের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে চাওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টার মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলে আপনারা গণতন্ত্রের উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করবেন, নির্বাচনের কথা বলে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করবেন—এটা কি গণতন্ত্রের জন্য শুভ? এটা কি গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ছিল? এটা কি গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা ছিল? নির্বাচিত সরকারের বিকল্প তো আপনারা হতে পারেন না। আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত। সেটা প্রতিদিন আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।’

রোববার বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদের ‘জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে প্রধান উপদেষ্টা যখন প্রতিশ্রুত, নির্বাচনের জন্য বিএনপি রোডম্যাপ দাবি করছে, তখন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপদেষ্টা পর্যন্ত বক্তৃতা দিতে শোনা যায় যে জনগণ নাকি তাদের পাঁচ বছরের জন্য চায়। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা...। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে আমরা বহু কমেন্ট দেখেছি, সেটা উনি দেখেননি?’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার একটি বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘কালকে আমাদের ফরিদা আপা একজন উপদেষ্টা...আমার সঙ্গে খুবই ভালো সম্পর্ক, সে জন্য আমি সমালোচনা কম করতে চাই। বললেন, উনারা নাকি নির্বাচিত হয়েছেন। কীভাবে? গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উনাদের নির্বাচিত করেছে জনগণ? তাহলে এ দেশে নির্বাচন কমিশন আছে কেন?’

এ প্রসঙ্গে সালাহ উদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘যদি রাস্তার গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয়, সেটা অবশ্যই এ দেশের মানুষের কামনা। কিন্তু একটা নির্বাচিত সরকারের বিকল্প তো আপনারা হতে পারেন না। আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত। সেটা প্রতিদিন আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।’

এ সময় কবি–চিন্তক ফরহাদ মজহারের একটি বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘উনার (ফরিদা আখতার) স্বামী আমাদের ভাই ফরহাদ মজহার সাহেব দু–তিন দিন আগে বক্তব্য দিয়েছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। কেবল লুটেরাদের একটা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়। কী আর বলব!’

যে নির্বাচনের জন্য, যে ভোটাধিকারের জন্য, যে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, যে সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এ দেশের হাজার মানুষ শহীদ হলেন, গণ–অভ্যুত্থান হলো, ফ্যাসিবাদের পতন হলো—সেই নির্বাচন, সেই ভোটাধিকারকে আপনারা অস্বীকার করছেন বলে মন্তব্য করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘কাদেরকে আপনারা উৎসাহিত করছেন? কোন অগণতান্ত্রিক শক্তিকে এই মাঝপথে আপনারা সুবিধা দিচ্ছেন? কাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য, কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা প্রায়ই ডিসেম্বরে থেকে জুন, ডিসেম্বর–জুন–ডিসেম্বরে আসা যাওয়া করছেন? এক জায়গায় স্থির থাকতে পারছেন না কেন?’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আপনি পৃথিবীবিখ্যাত একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আপনার এই রকম শিফটিংটা (নির্বাচন নিয়ে ডিসেম্বর ও জুন–সম্পর্কিত বক্তব্য) কিন্তু জাতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভালোভাবে নেবে না।’

এ প্রসঙ্গে সালাহ উদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আপনারা বৈঠক করেছিলেন। কথা দিয়েছিলেন। আপনাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে ডিসেম্বরকে সামনে রেখে জাতীয় নির্বাচনের উদ্দেশ্যে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বসেছি, কথা বলেছি। তাঁদের সব নির্বাচনের প্রস্তুতি আগামী জুন মাসের ভেতরে সমাপ্ত হবে। তাঁরা বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য উদ্‌গ্রীব।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ। ভাসানী অনুসারী পরিষদের ‘জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫’–এর মাধ্যমে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে ‘ভাসানী জনশক্তি পার্টি’ করা হয়। এর চেয়ারম্যান করা হয়েছে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলামকে। আর আবু ইউসুফ সেলিমকে মহাসচিব করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসিনার পতনের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠন কতটা কঠিন
  • ঢাকায় আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই কর্মকর্তা 
  • আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই কর্মকর্তা 
  • আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত, প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত, প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে: সালাহ উদ্দিন
  • আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত, প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন
  • আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত, প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে: সালাহ উদ্দিন আহমদ
  • জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন
  • শিক্ষার্থীদের আর বঞ্চিত রাখা না হোক
  • মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন শেখ হাসিনা