বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল ১৯৬৯ সাল। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সারা দেশের ছাত্রসমাজ যখন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সেই আন্দোলনে সামনের সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। স্বৈরশাসনের শৃঙ্খল ভাঙার দৃঢ়সংকল্পে তাঁরা রাজপথে নামেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে গুলি চালানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সেই হুমকির সামনে সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা ছিলেন এক অনড় প্রাচীর। তিনি ছিলেন আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের শিক্ষক। প্রক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানি সেনার বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ছাত্রদের গায়ে গুলি লাগার আগে সেই গুলি যেন আমার বুকে লাগে।’ পাকিস্তানি সেনাদের হাতে শহীদ হন এই দেশপ্রেমিক শিক্ষক।
আরও পড়ুনএটাই কি বাংলার বাইরে প্রথম শহীদ মিনার?২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ছাত্রদের জীবন রক্ষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা—এ এক অনুপম দৃষ্টান্ত, যা আজও দেশের তরুণদের ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস জোগায়। শহীদ জোহার আত্মত্যাগ শুধু ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নয়, পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেও আমাদের উজ্জীবিত করেছিল। এমনকি ২০২৪ সালেও আমরা দেখেছি, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ যখন রাজপথে নেমেছিল, তখনো শহীদ জোহাকে স্মরণ করে গত বছরের ১৫ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার, স্যার.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন
নাটক ও সিনেমার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তার।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন পরিচালক এম রাহিম। তিনি জানান, শ্রদ্ধেয় শুলশান আরা আহমেদ আজ আজ সকালে ইন্তেকাল করেছেন। জংলি আপনার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। আপনি আজীবন আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থাকবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিচালক কাজল আরেফিন অমি। পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমাদের গুলশান আরা আহমেদ আপা আপা আজ সকাল ৬:৪০-এ ইন্তেকাল করেছেন।’
অমি আরও লিখেছেন, ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে উনি কাবিলার আম্মা, নোয়াখালীর চেয়ারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনাকে আমরা মিস করবো আপা। আল্লাহ পাক ওনাকে জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে, জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। আমিন।’
জানা গেছে, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অভিনেত্রী। দ্রুতই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। গুলশান আরা আহমেদের ফেসবুক আইডি থেকে মাঝরাতে লেখা হয়, ‘আমার আম্মু গুলশান আরা আহমেদ আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিউরের জন্য। আপনার সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’
পরে শোনা যায় মৃত্যুর খবর, অর্থাৎ লাইফ সাপোর্ট থেকে আর ফেরানো যায়নি তাকে। ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিনেত্রীকে দাফন করা হবে। অভিনেত্রীর বোনের ছেলে অভিনেতা আর এ রাহুল জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী। তার লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
গুলশান আরা ২০০২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে যাত্রা শুরু করেন। তবে নিজেকে একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা থেকেই গুলশান আরা প্রথম অভিনয় করেন প্রয়াত এনায়েত করিম পরিচালিত ‘কদম আলী মাস্তান’ চলচ্চিত্রে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘চরিত্র’, ‘ডনগিরি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘পোড়ামন’ এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি।