ইসরায়েলি নৃশংসতায় গাজায় নিহত ৫০ হাজার ছাড়াল, ১৭ হাজারই শিশু
Published: 23rd, March 2025 GMT
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদের মধ্যে কেবল শিশুই ১৭ হাজার। ইসরায়েলের ১৭ মাসের নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে এত বেশি শিশু নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে একটি পুরো প্রজন্মই ধুলায় মিশে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আল–জাজিরার এক মন্তব্য প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে, এটি বেশ বিষণ্ন ও ভয়ংকর এক মাইলফলক। যেসব শিশু স্বপ্ন দেখত, যাদের উচ্চাশা ছিল, যারা জীবনে বড় কিছু করতে চাইত, তারা আজ হারিয়ে গেছে।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় গাজায় হামাস নেতা নিহত৯ ঘণ্টা আগেগাজা সিটি থেকে আল–জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে আরও বেশি। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ শুধু নথিবদ্ধ হতাহতের হিসাবে রেখেছে। এমন অসংখ্য নিহত ব্যক্তিকে কবর দেওয়া হয়েছে, যাদের নথিবদ্ধ করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তা ছাড়া অনেকে নিখোঁজ রয়েছে, তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আর অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।
অল্প সময়ে এত বেশি শিশু নিহত হওয়ায় একটি জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে, যা বর্তমান প্রজন্ম সহজে কাটিয়ে উঠতে পারবে না।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক ভাষ্যকার ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার অতিক্রম করা নিয়ে ইসরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে তেমন একটি অনুশোচনা হবে না।
আরও পড়ুন‘নেতানিয়াহু ইসরায়েলের বড় শত্রু’: ইসরায়েলে টানা তৃতীয় দিন ব্যাপক বিক্ষোভ৭ ঘণ্টা আগেব্যক্তিগতভাবে নিজে ক্রুদ্ধ, দুঃখিত এবং হতভম্ব জানিয়ে গোল্ডবার্গ বলেন, ‘৫০ হাজারের বিষণ্ন মাইলফলক ইসরায়েলিদের এতটা নাড়া দেবে না। কারণ, শুরু থেকেই তারা হামাসের হতাহতের পরিসংখ্যানকে ভুয়া বলে দাবি করে আসছিল।’
‘ইসরায়েলের জনগণ সাধারণভাবে ফিলিস্তিনি হতাহতের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নয়। গাজায় ইসরায়েলের যেসব নাগরিক নিহত হয়েছে, তারা সেটার দায়িত্ব নিতেও অনাগ্রহী।’
ইসরায়েলের এই রাজনৈতিক ভাষ্যকার বলেন, ইসরায়েলের টেলিভিশন গাজার হত্যাকাণ্ড এবং দুর্ভোগের ছবি দেখায়। কিন্তু ‘তা এত দীর্ঘ সময় ধরে চলছে যে কিছুক্ষণ পর মন অসাড় হয়ে যায়।’
‘যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলের জনগণ বলে আসছে, গাজায় নিহতের সবাই হামাসের সদস্য। বিভিন্ন কারণে তারা এমন কথা বলছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আরেকটি এক-এগারো আনার পরিকল্পনা হচ্ছে: রাশেদ খান
সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে আরেকটি এক–এগারো আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
কোনোভাবেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, এক-এগারো ফিরে এলে ভুক্তভোগী হবে রাজনৈতিক দলগুলো। গণ অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। তাদের বন্দুকের নল আওয়ামী লীগের দিকে তাক না হলে কোনোভাবেই গণ অভ্যুত্থান হতো না।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালনকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলব, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে জাতীয় সংলাপ ডাকুন। আমরা দেখতে চাই, কারা নিষিদ্ধ চায় না।’
গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, সব দল জনগণের সেন্টিমেন্টের (মতামত) আলোকে সিদ্ধান্ত জানাবে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে কারও পক্ষে রাজনীতি করা সম্ভবপর নয়।
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গণ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব পক্ষকে নিয়ে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা দরকার বলে মনে করেন রাশেদ খান।
সরকারের মধ্যে আওয়ামী ‘প্রেতাত্মা’ রয়েছে উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘এদের বিতাড়িত না করলে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়।’
গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, হাবিবুর রহমান, সহ-নিরাপত্তা সম্পাদক আলাউদ্দিন আজাদ, সহ-স্বাস্থ্য সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, ঢাকা বার আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক মমিনুল ইসলাম।
এ সময় গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে গণস্বাক্ষর বইতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে অনেকে স্বাক্ষর করেন।