পোশাক রপ্তানি বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় বিজিবিএ ও বিজিএমইএর
Published: 23rd, March 2025 GMT
দেশের পোশাক রপ্তানি বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। বিজিবিএর ইফতার ও দোয়া মাহফিলে দুই সংগঠনের নেতারা এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে শনিবার বিজিবিএ সদস্য ও বিভিন্ন ব্যবসায় সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ ইফতার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানির লক্ষ্য বিজিবিএর। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে বিজিএমইএ ও বিজিবিএর মধ্যে যে দূরত্ব সেটি কমিয়ে আনতে হবে। বিজিএমইএ, বিজিবিএ ও বিকেএমইএকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য ও ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর আসন্ন নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার আবুল কালাম, জেএফকে সোয়েটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন, টর্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল উদ্দিন, এজিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল, বিজিবিএর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, বিজিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ।
বিজিবিএর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, টেকসই বাণিজ্যের জন্য বিজিবিএ ও বিজিএমইএর মধ্যে যে গ্যাপ সেটি দূর করতে হবে। আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি, সেটি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে সেগুলো দূর করতে হবে।
বিজিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ বলেন, ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে নতুন নতুন যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে, সেগুলো মোকাবিলা করে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বায়িং হাউস সেক্টরে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, লাখ লাখ পরিবার এই সেক্টরের ওপর নির্ভরশীল, সবার কথা মাথায় রেখে উৎপাদনের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সেক্টরগুলোর সহায়তা জোরদার করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ এমইএ ব জ ব এর ক জ কর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদ আর বিজুর বিক্রি একসঙ্গে
পাহাড়ে ঈদ আর বৈসাবির কেনাকাটা চলছে একসঙ্গে। মুসলমানের ঈদ আর পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় রাঙামাটির মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলায় শতকোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে এবার। দিনে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ক্রেতা আসেন বেশি, ইফতারের পর বাঙালি ক্রেতার পদচারণায় মুখর থাকে মার্কেট।
শহরের বিএম শপিং মার্কেট, দীপ্তি প্লাজা, আলিফ মার্কেট, রিজার্ভ বাজারের শপিং কমপ্লেক্স, এলকে টাওয়ার, ছলক মার্কেটে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে ক্রেতার ভিড় রয়েছে। নারী ক্রেতারা শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, প্রসাধনী আর ছেলেরা পাঞ্জাবি, শার্ট কেনায় ব্যস্ত।
ক্রেতা জহুরা বেগম বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেশিও না আবার কমও না। যে যার সাধ্য অনুযায়ী কিনছেন। দোকানিরা তাদের লাভ অনুযায়ী বিক্রি করছেন।’ সালেহা বেগম জানান, দাম এবার আওতার মধ্যে রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মার্কেটে লোকজন বেশি, কেনাকাটাও প্রচুর হচ্ছে।
আগামী ৩১ মার্চ বা ১ এপ্রিল ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু উৎসব শুরু হচ্ছে। এবার ঈদুল ফিতর, পহেলা বৈশাখ ও বৈসাবি কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় আনন্দ বেশি হবে। ইতোমধ্যে বিজু উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন আগেভাগে কেনাকাটা শুরু করেছেন।
ড্রেস পয়েন্টের স্বত্বাধিকারী নিলয় মজুমদার বলেন, ‘এবার যেহেতু গরমকালে ঈদ পড়েছে, তাই ক্রেতার জন্য কটন কাপড়ের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক রাখা হয়েছে। ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। ঈদের পর পর বিজু উৎসব রয়েছে।’
রূপমেলা প্রসাধনী দোকানের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল জানান, তাঁর দোকানে লেডিস ব্যাগ, জুতা ও প্রসাধনসামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। ফেসবুক দোকানের তোফাজ্জল হোসেন জানান, ঈদুল ফিতর ও বিজু উৎসব ঘিরে মানুষ কেনাকাটা করছেন।
বিএম শপিং কমপ্লেক্সের রমণী শাড়িবিতানের মালিক আব্দুল কাদের জানান, রোজার শেষ সময়ে এখানে বেচাকেনা বেড়ে যায়। মালেক শাহ ক্লথ স্টোরের মালিক মো. মামুন জানান, জিনিপত্রের দাম গতবারের চেয়ে একটু বেশি হলেও, অতিরিক্ত নয়।
ভিন্ন কথা বললেন বিএম শপিং কমপ্লেক্সের তানহা ফ্যাশনের মালিক মো. জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে ক্রেতা বেশ ভালোই ছিল। এ বছর তা অর্ধেকেরও কম। সীমিত দরে আমরা কাপড় বিক্রি করছি, তারপরও ক্রেতা মিলছে না। গত বছর এই সময়ে দিনে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার বিক্রি হলেও এ বছর দিনে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।’
দোকানি মো. খোরশেদ আলম জানান, গতবারের চেয়ে এবারের দাম একটু সামান্য বাড়তি। দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী আগে যেটা দুই হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন অর্ধেক দামে চাইছেন ক্রেতারা। শলক মার্কেটের মোনালিসা স্টোরের মালিক মন্টি চাকমা জানান, বিজু উৎসবকে কেন্দ্র করে ভালো ডিজাইনের মালপত্র সংগ্রহে রাখা হয়েছে।
বনরূপা উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি বিজয়গিরি চাকমা জানান, বিজুকে কেন্দ্র করে আগে বনরূপা বাজারে জাঁকজমকভাবে বেচা-বিক্রি হতো। এবার তা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে মানুষের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা। তিনি আরও জানান, এবারে বিজুকে কেন্দ্র করে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার বেচা-বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলাটি একটি মিশ্র সংস্কৃতির এলাকা। এখানে আমরা ঈদ ও বিজু উৎসব কিংবা চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব একসঙ্গে উদযাপন করি। এসব উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো শহর এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।’