এক শতাব্দীর সাক্ষী এক নারী

জ্যঁ ক্যালমঁ জন্মগ্রহণ করেন ২১ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ সালে। ফ্রান্সের আর্ল শহরে। ভাবুন তো, তখনো আইফেল টাওয়ার তৈরি হয়নি! তার ১৪ বছর পর আইফেল টাওয়ার নির্মাণ সম্পন্ন হয়। সে সময় ফরাসি নারীদের গড় আয়ু ছিল ৪০ থেকে ৫০ বছর। অথচ জ্যঁ ক্যালমঁ সেই গড় আয়ুর প্রায় তিন গুণ বেশি পৃথিবীতে কাটিয়েছিলেন!
মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই ফার্নান্দো ক্যালমঁকে। এই ফার্নান্দো ক্যালমঁ ছিলেন এক ধনী ব্যবসায়ী। আর্থিক সচ্ছলতা ছিল, ঘরে কাজের জন্য গৃহকর্মী ছিল, তাই জ্যঁ জীবনকে উপভোগ করতেন নিজের মতো করে। ফেন্সিং, শিকার, সাইক্লিং, টেনিস, সাঁতারসহ বিভিন্ন শখে ব্যস্ত থাকতেন তিনি।

সুখ-দুঃখে ভরা পরিবার

১৮৯৮ সালে জ্যঁর একমাত্র মেয়ে ইভন মারি নিকোল ক্যালমঁ জন্ম নেন। পরে ইভনের ঘরে জন্ম নেয় একমাত্র নাতি—ফ্রেদেরিক। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! ৩৬ বছর বয়সে ইভন প্লুরিসিতে মারা যান, আর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান ফ্রেদেরিক। একই বছরে তাঁর জামাতাও মারা যান। একে একে কাছের সব মানুষ হারিয়ে সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়েন জ্যঁ ক্যালমঁ। তাই বলে তিনি কিন্তু থেমে থাকেননি। দৈনন্দিন সব কাজই করতেন।

আরও পড়ুনবাঙালি অভিনেত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, ছবিতে প্রতীক ও প্রিয়ার বিয়ে২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অভিনব এক চুক্তি, যা ইতিহাস হয়ে গেল

১৯৬৫ সালে ৯০ বছর বয়সে আন্দ্রে-ফ্রাঁসোয়া রাফ্রে নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে একটি ‘রিভার্স মর্টগেজ’ চুক্তি করেন জ্যঁ ক্যালমঁ। চুক্তি অনুযায়ী, রাফ্রে প্রতি মাসে জ্যঁকে ২ হাজার ৫০০ ফ্রাঁ দেবেন এবং মৃত্যুর পর তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হবেন।
রাফ্রে ভেবেছিলেন জ্যঁ ক্যালমঁ আর কত দিন বাঁচবেন? কিন্তু এই ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটল পুরো উল্টো!
রাফ্রে যখন চুক্তি করেন, তখন জ্যঁ তাঁর দ্বিগুণ বয়সী ছিলেন। রাফ্রের বয়স তখন ৪৭, জ্যঁর ৯০। রাফ্রে ভেবেছিলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হবেন। কিন্তু বাস্তবে জ্যঁ তাঁকে ছাড়িয়ে যান!
৭৭ বছর বয়সে রাফ্রে মারা যান। অথচ তখনো জ্যঁ সুস্থ ও সক্রিয় ছিলেন! ফলে রাফ্রের পরিবারকে আরও দুই বছর অর্থ দিয়ে যেতে হয়। আশ্চর্যের বিষয়, এই চুক্তির ফলে জ্যঁ তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের প্রকৃত মূল্যের দ্বিগুণ অর্থ পেয়ে যান।

ফেন্সিং, শিকার, সাইক্লিং, টেনিস, সাঁতারসহ বিভিন্ন শখে ব্যস্ত থাকতেন তিনি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর বয়স র বয়স বছর ব

এছাড়াও পড়ুন:

রিমান্ড শেষে কারাগারে সোলাইমান সেলিমসহ দুই জন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক লালবাগ থানায় মাদরাসা ছাত্র শাহেনুর রহমান হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম এবং চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম রাডোকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন সোলাইমান সেলিমকে তিন দিন এবং সিরাজুল ইসলাম রাডোকে চার দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র সাব-ইন্সপেক্টর কবির হোসেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ তাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।

গত ১২ মার্চ সোলাইমান সেলিমের তিন দিন, সিরাজুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর গত বছরের ৬ আগস্ট ভোরে লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি চালালে মাদরাসাছাত্র শাহেনুর রহমান (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মো. মাজেদুল ইসলাম লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

গত বছরের ১৪ নভেম্বর গভীর রাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি  হত্যা, হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। 

বিভিন্ন থাকার ১১ মামলায় সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান তার আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ