এবার সারজিসের পোস্টে হান্নানের প্রতিক্রিয়া, ‘সরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না’
Published: 23rd, March 2025 GMT
‘সরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না’- আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) দুই শীর্ষ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন দলটির আরেক শীর্ষ নেতা আবদুল হান্নান মাসুদ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ গত ২০ মার্চ দিবাগত রাত ১টা ৪৪ মিনিটে ফের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘১১ মার্চ দুপুর ২টা ৩০ মিনিট। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।’
হাসনাতের বক্তব্য নিয়ে আজ রোববার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি কিছুটা ভুলভাবে এসেছে বলে জানান সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন সারজিস আলম। সেখানে মন্তব্য করেন হান্নান মাসুদ। কমেন্টে তিনি লিখেন, ‘এসব কি ভাই!! পাবলিকলিই বলছি- দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন। এটা চলতে পারে না। আর দলের গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট হোল্ড করেও আপনারা যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে বিচরণ করছেন এবং তা পাবলিক করে এনসিপিকেই বিতর্কিত করছেন।’
হান্নান মাসুদ আরও লেখেন, ‘মানুষ এনসিপিকে নিয়ে যখন স্বপ্ন বুনছে, তখন এভাবে এনসিপিকে বিতর্কিত করার কাদের এজেন্ডা!!!’
‘সরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না।’- এমন কমেন্টস করেন এনসিপির আরেক শীর্ষ নেতা।
এদিকে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল, কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে ২২ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। সেদিন রাত ৮টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সেখানে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাচন বা একটি রাজনৈতিক দল কার্যক্রম করতে পারবে কি পারবে না, এটি সম্পূর্ণই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কেবল সরকার, বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো ও জনগণের রয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী কিংবা রাষ্ট্রের এমন কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের আসলে এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য, পরিকল্পনা বা সিদ্ধান্ত উপস্থাপনা দেওয়ার কোনো ধরনের এখতিয়ার নেই।’’
এর আগে ২০ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা তার সরকারের নেই।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যে আলোচনাটি হয়েছে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক। সেটি হচ্ছে আমরা মনে করছি, রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতি রাজনীতিবিদেরাই নির্ধারণ করবেন—রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহ বা চলমান যা কিছুই, পরবর্তী রাজনীতি কোন দিকে যাবে, সেটি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত। তো সে জায়গায় আমরা সন্দিহান বলেই গতকাল আমার স্ট্যাটাস দিতে হয়েছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্যে বিএনপির অবস্থানের এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, বিকল্প নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগ ফিরলে, তাতে তাদের আপত্তি থাকবে না।
তবে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বিষয়টি নিয়ে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না।’ তিনি লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ৩৬ জুলাই ক্লোজড হয়ে গিয়েছে। নতুন করে ওপেন করার কোনই অবকাশ নেই।’
বিচারের প্রসঙ্গ এনে জামায়াতে আমির লিখেছেন, এ সময় জনগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই গণহত্যার বিচারটাই দেখতে চায়। এর বাহিরে অন্য কিছু ভাবার কোনও সুযোগ নেই।
জামায়াতের আমিরের বক্তব্য এনসিপি’র হাসনাত আব্দুল্লাহর অবস্থানকে সমর্থন করে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। অন্য দলগুলোর মধ্যেও ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প র জন ত ক ফ সব ক আবদ ল এনস প আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদ হবে না: জেএসডি
পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেছেন, বিদ্যমান রাজনীতি ও রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের সপক্ষে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের মধ্যে বীরোচিত ঐক্য স্থাপিত হয়েছে। এই বাস্তবতা রাজনৈতিক দলগুলোকে উপলব্ধি করতে হবে।
শনিবার বেলা ১১টায় ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জেএসডির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ এ কথা বলেন। সংসদে উচ্চকক্ষ, প্রদেশ, স্বশাসিত স্থানীয় সরকার এবং জাতীয় সনদ প্রণয়নের দাবিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের বিজয় ধরে রাখতে না পারলে এবং জনগণের অভিপ্রায়ভিত্তিক প্রজাতন্ত্র নির্মাণে ‘জাতীয় সনদ’ গৃহীত না হলে রাজনৈতিক নৈরাজ্য বা রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়বে। তিনি বলেন, শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবীদের ক্ষমতার অংশীদারত্ব না দিলে যেকোনো মুহূর্তে চরম সংকট দেখা দিতে পারে। তা বিবেচনায় নিয়েই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রবর্তন করতে হবে।
সভায় জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কার এবং রাজনৈতিক-সংস্কৃতির সংস্কার ছাড়া আওয়ামী দুঃশাসনের চরম প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে জনগণ নিরাপদ হতে পারবে না। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা অক্ষত রেখে কোনো ধরনের আপস জনগণ মেনে নেবে না।
জেএসডির ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি মিয়া হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আমির উদ্দিন, ফারজানা দিবা, সাইফুল ইসলাম, তাজউদ্দিন সবুজ, গোলাম ফারুক, তানজিদুর রহমান, শামসুদ্দিন, ছাত্রনেতা সোহেল রানাসহ প্রমুখ।