ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবাহ বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি মার্চের ২২ দিনে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ২৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ ২৯ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ কোটি ডলার বা এক হাজার ৩৬২ কোটি টাকা।
রবিবার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যমতে, মার্চ মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫২ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭০ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৫ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার, ডিসেম্বর মাসে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারি মাসে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ ভুলে বেরোবি শিক্ষার্থীদের মুখে বাঙালির নবজাগরণ
উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম—চারপাশ জুড়ে বাজছে নতুন গানের সুর। আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন। পুরনো যত জরা, হতাশা আর গ্লানি—সব ভুলে সামনে তাকাবার সময় এখন। এ দিনটি শুধু ক্যালেন্ডারের নতুন পৃষ্ঠা নয়, এটি প্রকৃতির এক অনবদ্য রূপ, এক নব বার্তা। এটি শিকড়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এ সময়টাতেই বাঙালির মধ্যে এক অন্যরকম আবেশ কাজ করে।
পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন কিছুর স্বপ্ন দেখার অনন্য সুযোগ তৈরি হয় এই দিনটিতে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে উল্লাসের রঙ। হালখাতা, মিষ্টি বিনিময়—এসব শুধু রীতি নয়, এক নিঃশব্দ অঙ্গীকার। নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার প্রতীক। ব্যবসা, সম্পর্ক, জীবন—সবই যেন নতুন করে শুরু হয়।
তবে অতীত ছিল উজ্জ্বল নয়। গত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের ছায়ায় মানুষ ছিল দমবন্ধ পরিবেশে। প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল সীমিত, উৎসবের আনন্দ ছিল নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু সময় বদলেছে। এবারের বর্ষবরণ সেই পরিবর্তনের বার্তা নিয়েই এসেছে। ফ্যাসিবাদ পরবতী নববর্ষ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা।
বর্ষবরণ হোক নতুন এক নবজাগরণ
এবারের বর্ষবরণ যেন এক নবজাগরণ। এতদিন যেভাবে অন্ধকারে ঢাকা ছিল আমাদের স্বদেশ, তা আজ এক নতুন রূপে উদ্ভাসিত। ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন শুধু কণ্ঠরোধ করেনি, আমাদের স্বপ্নগুলোকেও মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, এই দেশের তারুণ্য থেমে থাকে না। আজকের পহেলা বৈশাখ নতুন প্রজন্মের হাত ধরে এক উজ্জ্বল আগামীর দিকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
(লেখক: জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ)
আর নিপীড়নের বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চাই না
বাংলা নববর্ষ আমাদের আত্মপরিচয়ের উৎসব। এই দিনে আমরা ফিরে যাই আমাদের শিকড়ে, গাই ঐক্যের গান। বৈচিত্র্যের মাঝে একতার গল্প বলি, সংস্কৃতির ছায়ায় গড়ে তুলি সহনশীল, আনন্দময় এক বাংলাদেশ। চলো, ১৪৩২ সালকে বানাই ভালোবাসার, সহমর্মিতার আর সংস্কৃতির মিলনমেলা।
আমরা আর নিপীড়নের বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চাই না। আমরা চাই এক নতুন বাংলাদেশ—যেখানে থাকবে মত প্রকাশের অধিকার, থাকবে স্বাধীনভাবে বাঁচার নিশ্চয়তা, থাকবে মৌলিক অধিকার আর সমতা। যেখানে রাষ্ট্র হবে জনগণের জন্য, নিপীড়নের জন্য নয়।
(লেখক: ফাত্তাহান আলী, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ)
শোভাযাত্রা হোক সবার
পহেলা বৈশাখ কেবল একটি উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। এটি আমাদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি আর আত্মপরিচয়ের প্রতীক। ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে ব্যবহার করা হয়েছিল বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে। আজ আমরা চাই, এই শোভাযাত্রা হোক সবার, হোক অন্তর্ভুক্তিমূলক। যেখানে প্রতিটি মানুষ নিজেকে দেখতে পায় আনন্দ আর একতার আয়নায়।
(লেখক: জাহিদ হাসান, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, লোকপ্রশাসন বিভাগ)
ফ্যাসিবাদ আর না আসুক এ মাটিতে
নতুন সময়ে বাঙালীর সবার অধিকার নিশ্চিত হোক। আমরা চাই এক নতুন বাংলাদেশ—যেখানে থাকবে মত প্রকাশের অধিকার, থাকবে স্বাধীনভাবে বাঁচার নিশ্চয়তা, থাকবে মৌলিক অধিকার আর সমতা। বাঙালি নববর্ষে এটাই হোক সবার চাওয়া- ফ্যাসিবাদ আর না আসুক এ মাটিতে।
(লেখক: আজিজুর রহমান, শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট বিভাগ)
ঢাকা/মেহেদী