গাজীপুর নগরের পুবাইলে ট্রাকের সঙ্গে ইজিবাইকের (ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান) সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের নিমতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন পুবাইল থানার হায়দরাবাদ গ্রামের ইজিবাইকের চালক হানিফ মিয়া (৩৫) ও যাত্রী মাজুখান গ্রামের সাহেদ সাব্বির (২৫)।

স্থানীয় লোকজন জানান, টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের নিমতলী এলাকায় আজ সকালে ঢাকামুখী দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে পুবাইলমুখী ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক ও এক যাত্রী নিহত হন। আহত হন তিনজন। খবর পেয়ে পুলিশ হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো.

আমিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। ট্রাক ও ইজিবাইক সড়কের পাশে দুমড়েমুচড়ে পড়ে আছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের চালক পালিয়েছেন। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে: জামায়াতের আমির

লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।

গত রোববার লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ১১ দিনের সফর শেষ করে গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন। এই সফর সম্পর্কে জানাতে আজ দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেল ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর মতো বিএনপিও জুলুমের শিকার হয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও জুলুমের শিকার। দেশ থেকে যাওয়ার আগে আমরা চিন্তা করেছিলাম (খালেদা জিয়ার সঙ্গে) একটা সাক্ষাৎ হবে। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক, সেটি আমরা করতে পারিনি। ইউরোপ সফরে যাওয়ার পর আমার এক পরিবারের সদস্যের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে (যুক্তরাজ্য) গিয়েছি। এরপর খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছি।’

এই দেখা করার মূল উদ্দেশ্য তাঁর (খালেদা জিয়া) খোঁজখবর নেওয়া ছিল বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, তাঁরা তাঁদের অতি সম্মান ও ভালোবাসার সঙ্গে গ্রহণ করেন। যেহেতু তিনি তাঁর ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বাসায় অবস্থান করছেন, কাজেই তিনিও (তারেক রহমান) সেখানে থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। তিনিও ছিলেন। দুই দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এক জায়গায় বসলে সেখানে রাজনীতির কথা হবে না, এটা কি বাস্তব! বাস্তব নয়। কথা তো হয়েছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, বিচারপ্রক্রিয়া কীভাবে হবে, না হবে—বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে।

জামায়াতের আমির বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটা যেন মতবিরোধে রূপ না নেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মতপার্থক্য থাকুক, নয়তো রাজনীতিবিদেরা অন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এ–ও প্রত্যাশা করি, এটি যাতে মতবিরোধে রূপ না নেয়। ওটা পার্থক্য পর্যন্ত থাকুক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদেরা অনেক সময় বিষয়গুলো খেয়াল করেন না বা করি না। এটা করতে হবে। যদি আমরা দেশকে ভালোবাসি, তাহলে এই ভালোবাসার, শ্রদ্ধার জায়গায়, মিউচুয়াল রেসপেক্টের জায়গায় আসতে হবে। আমার ওপিনিয়ন (মতামত) আমি দিব, কিন্তু এটা বলতে পারব না যে এটাই করতে হবে। আমি ওপিনিয়ন দিয়ে বলব যে এটা করলে আমার দেশ ও জাতির উপকার হবে। আর এটা আমি করতে দিব না, যে যা–ই চাক, এটাও রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভাষা নয়।’

আরও পড়ুনলন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমিরের সাক্ষাৎ১৫ এপ্রিল ২০২৫

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমন্ত্রণে সম্প্রতি ব্রাসেলসে সফরে যায় জামায়াতের প্রতিনিধিদল। সেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটি নিয়ে অবশ্যই কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ব্যাপারে তাঁরা জানতে চেয়েছেন? হ্যাঁ, চেয়েছেন। সবাই চাননি, দুয়েকটি জায়গায় তাঁরা চেয়েছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, আমাদের দেশে কেবল একটা গণহত্যা হয়ে গেছে। শহীদের মা, শিশুরা এখনো কান্নাকাটি করছে। স্ত্রীরা কান্নাকাটি করছে। আহতরা কেউ কেউ এখনো হাসপাতালের বেডে আছে। আমরা জাতি হিসেবে তাদের আমাদের যা করণীয়, সেটাও পুরোপুরি করে উঠতে পারিনি। গোটা জাতি ট্রমাটাইজড। কারণ, জুলাই-আগস্ট এই সময়টায় সরকার কার্যত গোটা জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা পক্ষের ছিল না। এটা ছিল জনতার আন্দোলন।’

আরও পড়ুনআগামী রমজানের আগেই নির্বাচন চায় জামায়াত১৬ এপ্রিল ২০২৫

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া তিনটি নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) তো অপার সুযোগ পেয়েছিল। একটানা তিনটা নির্বাচন তাদের অধীনে করেছে, কিন্তু সেই নির্বাচনগুলোকে নির্বাচন রাখল না কেন! তারা তো নির্বাচনের জান কবজ করেছে। এমনকি জনগণ তো বলে, তাদের (আওয়ামী লীগ) যারা সমর্থন করে, তারাও নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল, তারাও ভোট দিতে যায়নি। দিস ইজ ফ্যাক্ট। তো সে রকম একটা দলকে বাংলাদেশের জনগণ এই মুহূর্তে গ্রহণ করবে কি না এবং আওয়ামী লীগও তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করেছে কি না, এটা বিশাল প্রশ্ন। এ কথা বলার পর তারা (বিদেশি) আর কিছু বলেনি। তারা ওখানেই থেমে গেছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) সবাইকে মেনে নিতে হবে এবং দিস ইজ রিয়েলিটি।’

আরও পড়ুনতিন দাবি পূরণ হলেই আগামী রোজার আগে নির্বাচন হতে পারে: জামায়াতের আমির৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ