বদলির পরও দপ্তর ছাড়ছিলেন না বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলাম। তাই সংস্থাটির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে জোর করেই দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেছেন। রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে ঘটে এমন ঘটনা।

শফিকুল ইসলাম সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। গত বছরের জুলাইয়ে তাকে বিএমডিএর ইডি হিসেবে পদায়ন করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে রাজশাহীতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। তবে সেখানে না গিয়ে একমাস ধরে বিএমডিএতেই ছিলেন তিনি।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সুপারিশে তিনি বিএমডিএর ইডি হয়েছিলেন। তিনি এখনও আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বদলির আদেশের পরও তিনি নাজিরুল ইসলাম নামে একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বিএমডিএর রাজশাহী জোনের প্রধান করে পদায়ন করেন। 

নাজিরুল ইসলাম ২৫১ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকার দুটি প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)। আওয়ামীপন্থি এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই প্রকল্পের পিডি হন। ইডির বদলির আদেশের পরও তিনি নতুন কর্মস্থলে না গিয়ে নাজিরুল ইসলামকে জোনের প্রধান করে পদায়ন করলে বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দুপুরে ইডি তার কার্যালয়ে ছিলেন। তখন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সেচ শাখার প্রধান জাহাঙ্গীর আলম খানসহ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তার দপ্তরে যান। তারা রবিবারের মধ্যেই দপ্তর ছেড়ে তাকে রেশম বোর্ডে গিয়ে যোগদান করতে বলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে শফিকুল ইসলামের তর্কবিতর্ক হয়। দু’-একজন তাকে চেয়ার থেকে ওঠাতেও এগিয়ে যান। তখন শফিকুল ইসলাম দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হন। পরে তিনি জাহাঙ্গীর আলম খানকে দায়িত্ব অর্পণ করেন। দায়িত্ব অর্পণ ও গ্রহণ সংক্রান্ত এক নথিতে শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম খান স্বাক্ষর করেন। পরে শফিকুল ইসলাম বেরিয়ে পড়লে তার চেয়ারে বসেন জাহাঙ্গীর আলম খান। আরো দুজন জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে টপকেই তিনি এই চেয়ারে বসে পড়েন।

দুপুরে ইডির দপ্তরে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলম খানকে চেয়ারে পাওয়া যায়। তিনি জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে অফিস আদেশ জারি হয়নি। এটা হয়ে যাবে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শফিকুল ইসলামের মোবাইলে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। পরে আবার ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ দিন দপ্তরে ছিলেন না বিএমডিএর চেয়ারম্যান ড.

এম আসাদুজ্জামান। তার ব্যক্তিগত সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘শফিকুল ইসলাম বিএমডিএর কর্মকর্তা না। তাকে অন্য দপ্তর থেকে সরকার এখানে পদায়ন করেছিল। তিনি বদলির আদেশের পরও একমাস ধরে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার বদলির আদেশের পরও তিনি জোন প্রধান করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে সই করেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তারা সবাই গিয়ে তাকে আজই দপ্তর ছাড়তে অনুরোধ করলে তিনি সে কথা রাখেন।’’ 

অফিস আদেশের আগেই জাহাঙ্গীর আলম খান ইডির চেয়ার দখল করলেন কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটা দখল না। কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি বিএমডিএর নিজস্ব কর্মকর্তা। এ পদে বাইরের কর্মকর্তা না থেকে নিজেদের কর্মকর্তা থাকলে কাজ ভালো হয়।’’ 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ ঙ গ র আলম খ ন কর মকর ত ব এমড এ আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যেভাবে ভালো থাকবে এসি

প্রতিটি যন্ত্রেরই চাই যত্ন। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসিও এর ব্যতিক্রম নয়। নিয়মিত দেখভাল করতে হয় এ যন্ত্রটিকেও। এসি রক্ষণাবেক্ষণ আদতে খুব কঠিন কাজ নয়। তবে এ ব্যাপারে দক্ষ পেশাদার ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া উচিত। অদক্ষ হাতে পড়লে যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে। পরে মুশকিলে পড়তে পারেন আপনি।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির চিফ বিজনেস অফিসার (এসি) মো. তানভীর রহমান বলছিলেন, বছরে অন্তত দুবার এসি রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষ ব্যক্তির সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। যে প্রতিষ্ঠান থেকে এসি কেনা হয়েছে, সেখান থেকেই সব ধরনের বিক্রয়োত্তর সেবা নেওয়া উচিত। রক্ষণাবেক্ষণের কাজটিও তাদের দিয়েই করানো ভালো। যন্ত্রের ভেতরকার সব ঠিকঠাক আছে কি না, তা যেমন দেখে দেবেন দক্ষ পেশাদার ব্যক্তি, তেমনি তা সতর্কতার সঙ্গে পরিষ্কারও করে দেবেন তিনি।

যেমন যত্ন চাই

এসি রক্ষণাবেক্ষণে বছরের যে দুই সময় পেশাদার ব্যক্তির সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন, তার একটি হলো গরমের শুরুতে। শীতের সময় দীর্ঘদিন এসি ব্যবহার হয় না। গরমের শুরুতে, এসি ব্যবহার শুরুর আগেই তাই দেখিয়ে নিতে হবে ঘরের ভেতর এবং বাইরের দিকে থাকা এসির সব অংশই। এসির যে অংশ ঘরের বাইরে আছে, সেখানে উচ্চ ভোল্টেজ থাকে। অদক্ষ ব্যক্তির এখানে হাত দেওয়াটা বিপজ্জনক। এই অংশে ময়লা-আবর্জনা জমা হতে পারে। আবার কোনো প্রাণী সেখানে আশ্রয়ও নিয়ে থাকতে পারে শীত মৌসুমে। তাদের সাবধানে সরিয়ে দিতে হবে, যাতে কোনো মানুষের ক্ষতি না হয় এবং প্রাণীটিও নিরাপদে চলে যেতে পারে। মনে রাখবেন, পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য প্রতিটি সৃষ্টিই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার আশপাশে আশ্রয় নিলেও তাদের মারতে নেই। আর প্রচণ্ড গরমের মৌসুম পেরিয়ে গেলে আবার এসির ‘বিশ্রাম’-এর পালা যখন শুরু হবে, তখনো পেশাদার ব্যক্তিকে ডেকে এসির রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করিয়ে নেবেন।

নিজেদের কিছু দায়িত্ব

মো. তানভীর রহমান জানালেন, তাঁরা তাঁদের গ্রাহকদের এসির ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন। কারণ, বাতাসের ধুলাবালি এসির ফিল্টারে জমে যায়। প্রতি মাসে নিজেই এই কাজ করে নিতে পারেন একজন গ্রাহক। বছরের যে সময়ে পেশাদার ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া হয়, প্রয়োজন হলে সেই সময়ই একজন গ্রাহক তাঁর কাছ থেকে এই যত্নের নিয়মটা শিখে নিতে পারেন। বাতাসে অতিরিক্ত ধুলাবালি থাকলে অবশ্য মাসে একবারের বেশিও এই যত্নের প্রয়োজন হতে পারে। যে মৌসুমে এসি ব্যবহার করা হয় না, তখন অবশ্য ফিল্টার পরিষ্কার করার প্রয়োজন নেই।

যত্নের অভাবে...

সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া হলেই যে আপনার এসি দুম করে বন্ধ হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। তবে এসির কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে নিয়মিত যত্নের বিকল্প নেই। গ্রীষ্মের প্রখর রোদে আরামদায়ক ঠান্ডা হাওয়া পেতেই আপনি নিশ্চয়ই এসি কিনেছেন? বাতাসকে ঠান্ডা করে তোলার সেই কাজটাই কিন্তু ব্যাহত হতে পারে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। এসির বাতাসের প্রবাহ ঠিক রাখতে চাই নিয়মিত যত্ন। এসি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্গন্ধও হয়। বিদ্যুৎ খরচও বাড়ে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, যত্নের অভাবেই বাড়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। আকস্মিক দুর্ঘটনার কারণে মারাত্মক কোনো বিপর্যয় ঘটে যাক, এ তো কেউই চান না। তাই নিয়ম মেনে চলার চর্চা করাই ভালো।

এসি চালানোর সময়

বাইরে থেকে ফেরার পর খুব গরম লাগলে কী করেন আপনি? অনেকে হয়তো এমন পরিস্থিতিতে খুব কম একটা তাপমাত্রা ‘সেট’ করে দেন এসিতে। একটু বেশি গরম অনুভব করলেই অনেকে এরকমটা করে থাকেন। এটি কিন্তু আদতে খুব একটা ভালো অভ্যাস নয়। এসি নিঃসন্দেহেই আরামের অনুষঙ্গ। তবে তার মানে আবার এও নয় যে আপনি অন্দরকে অতিরিক্ত ঠান্ডা করে রাখবেন। খুব গরম থেকে এসে অতিরিক্ত ঠান্ডায় কারও কারও শরীর খারাপ করতে পারে। উল্টোটা ঘটলে, অর্থাৎ খুব ঠান্ডা থেকে বাইরের গরম পরিবেশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লেও কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই সব সময় স্বস্তিদায়ক, মাঝারি ধরনের একটা তাপমাত্রায় এসি চালানো উচিত। তা সবদিক থেকেই ভালো। এটি কিন্তু পৃথিবীর প্রতি আপনার দায়িত্বশীলতারও পরিচায়ক। এসির তাপমাত্রা অতিরিক্ত না কমিয়ে বরং এসির সঙ্গে সিলিং ফ্যানও চালিয়ে নিতে পারেন আপনি। তাহলে ঠান্ডা বাতাসটা ঠিকঠাক ছড়িয়ে পড়বে পুরো ঘরে। আপনি আরাম অনুভব করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদল সভাপতি হওয়ার পর ছড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি
  • রাতে শুনি ‘গেম ওভার’, সকালে শুনি কী
  • নওগাঁয় পিকআপ-ট্রাক্টর সংঘর্ষে প্রাণ গেল যুবকের
  • গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাস নেতা ও তার স্ত্রী নিহত
  • গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই বস হিসেবে আদর্শ কেন
  • বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
  • শ্রম ভবনের সামনে বেতনের দাবিতে আন্দোলন, অসুস্থ হয়ে একজনের মৃত্যু
  • কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে খুন—‘অনেক যন্ত্রণা ও কষ্ট দিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে’
  • যেভাবে ভালো থাকবে এসি