উড়োজাহাজের টিকিটের দাম কমল ৭৫ শতাংশ
Published: 23rd, March 2025 GMT
সরকারের কড়া তদারকি ও কঠোর নিয়মকানুন বাস্তবায়নের ফলে সৌদি আরবগামী উড়োজাহাজের টিকিটের দাম ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বছরের ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের প্রধান কিছু শহরে যাওয়ার টিকিটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষভাবে, ‘গ্রুপ বুকিং স্কিম’–এর কারণে টিকিটের দাম ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। তবে সরকারের কঠোর নজরদারির ফলে এ পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে।
বর্তমানে টিকিটের দাম ৪৮ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। বেশ কিছু এয়ারলাইনসে দাম্মাম ও রিয়াদ রুটে টিকিট মাত্র ৩৫ হাজার টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে।
বিমানভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি কঠোর নির্দেশনা জারি করে। আকাশপথে যাত্রীদের স্বার্থরক্ষায় উড়োজাহাজের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে ১০টি নির্দেশনা জারি করা হয়। সৌদি আরবগামী ফ্লাইটগুলোর টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং কৃত্রিমভাবে স্ফীত মূল্য ঠেকানোই ছিল এই নির্দেশনার মূল লক্ষ্য।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিমানভাড়া কমাতে দায়ী কৃত্রিম আসন–ঘাটতির সমস্যাটির সমাধান করেছে কর্তৃপক্ষ। বিমানে ভ্রমণকারী, বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যের বিমানের ওপর নির্ভরশীল অভিবাসী কর্মীদের ওপর আর্থিক বোঝা কমাতে এটিকে সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে আটাব।
ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইটে হিডেন চার্জ বাদে জেদ্দা থেকে ঢাকা টিকিট বুকিংয়ের মূল্য.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।
গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না।
তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে।