ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের জনবল রাজস্বকরণ ও আউটসোর্সিং বাতিলের দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে পাবনা প্রেস ক্লাবের সামনে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, কেয়ারটেকারদের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের সারা দেশে ৩ লাখ মসজিদে ৮০ হাজার আলেম ওলামা বিগত ৩৩ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু সবসময় অবহেলিত, নির্যাতিত, বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন তারা। সাতবার প্রকল্প পাস করার পর অষ্টমবার প্রকল্প পাস করার ক্ষেত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল রাজস্ব খাতে নেওয়ার। কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হতে চললেও কোনো বেতন বোনাস দেওয়া হয়নি। সামনে ঈদুল ফিতর, পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন 

২৫ লাখ মুক্তিপণ দিলেও ছেলে ফেরেনি, মানববন্ধনে পরিবারের আকুতি

ভুক্তভোগীরা বলেন, আজ যেখানে দেশের মানুষ ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত, তখন দেশের ৮০ হাজার ওলামা বেতন না পাওয়ায় অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন। তাই তাদের দাবি, প্রকল্পকে আউটসোর্সিং থেকে বাতিল করে রাজস্ব খাতে নিতে হবে এবং প্রস্তাবিত ৮ম পর্যায়ের প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে। আর ঈদের আগেই বেতন ভাতা পরিশোধ করতে হবে এবং প্রতিমাসের বেতন প্রতিমাসে দিতে হবে। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গতে তোলা হবে।

পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যাওয়ার সময় জেলা পরিষদের সামনে তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইকবাল হোসাইন, সেক্রেটারি আব্দুল গাফফার খান।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পাবনার ফিল্ড অফিসার রজব আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ফিল্ড সুপারভাইজার মাসুদুর রহমান, উজ্জ্বল হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও গণশ ক ষ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি শহীদদের স্বজনদের

অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথমে খুনি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময়সহ বিগত ১৫-১৬ বছরে দলটি যে গুম-খুন-হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার বিচার করতে হবে। এরপরে দেশে সংস্কার করতে হবে। আর সংস্কার শেষ করার পরেই হবে নির্বাচন। এর আগে নির্বাচন হলে, আর আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হলে, তা হবে জুলাই-২৪-এর শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। জুলাই-২৪-এর গণহত্যার বিচার ত্বরান্বিত এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনের আয়োজক ‘জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’।

মানববন্ধনে শহীদ শাহরিয়ার হাসানের বাবা আবুল হাসান বলেন, শহীদদের হত্যার বিচার হচ্ছে না। বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। বিচারের নামে ঘুম পাড়ানোর গান শোনানো হচ্ছে। আট মাস পরও সন্তান হত্যার বিচারের জন্য কেন রাস্তায় দাঁড়াতে হবে? দেশে যদি খুনি হাসিনা থাকত, ২০৩০ সালের আগে কেউ নির্বাচনের কথা ভাবতে পারত না। অথচ আজ নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মরিয়া হয়ে উঠেছে। ঐক্য হবে, সংস্কার হবে, নির্বাচন হবে, কিন্তু আগে প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলার জমিনে দৃশ্যমান হতে হবে।

শহীদ সায়েমের মা শিউলী আক্তার বলেন, শহীদ সন্তানদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না। শহীদদের রক্তের সঙ্গে কোনো বেইমানি করা যাবে না। কী করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে এ দেশে আনার জন্য বলা হয়? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। এখনো সন্তান হত্যার বিচার হচ্ছে না। কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। অথচ শত শত ছেলেদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। কীভাবে এখন নির্বাচনের কথা বলা হয়? আগে বিচার করতে হবে। পরে সংস্কার করে নির্বাচন।

শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, একটা সন্তান হত্যারও বিচার এ সরকার এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের একজনেরও যদি ফাঁসি হতো, তাহলে তাঁরা এই সরকারকে নিজেদের সরকার ভাবতে পারতেন। তাঁদের সন্তানেরা আওয়ামী লীগকে উৎখাত করার জন্য রাস্তায় নেমেছিল। দরকার হলে শহীদ পরিবারগুলো সন্তান হত্যার বিচারের জন্য আবার রাস্তায় নামবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।

সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে আপনাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আপনারা কোনো সম্মান আমাদের করেননি।’

গোলাম রহমান আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিনীত অনুরোধ, আমাদের ছেলেরা দেশের জন্য যে শহীদ হয়েছে, তারা কী অন্যায় করেছে? নতুন বাংলাদেশ যে গড়তে যাচ্ছেন, নতুন বাংলাদেশ তো গঠন হচ্ছে না। পুরাতন বাংলাদেশের চাইতে আরও খারাপ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।’

মানববন্ধনে শহীদদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। ট্রাইব্যুনালের ফটকে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। পরে তাঁরা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিছিল নিয়ে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে শহীদ পরিবার, চিফ প্রসিকিউটরের পদত্যাগ দাবি
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি শহীদদের স্বজনদের
  • বাংলাদেশের নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে বার্লিনে মানববন্ধন
  • কুমিল্লায় শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন অভিযোগ, বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
  • ঝিনাইদহে ৫ দাবিতে মউশিক শিক্ষকদের মানববন্ধন
  • হেল্পলাইন ১০৯ চলছে জোড়াতালি দিয়ে
  • কুমেক হাসপাতালে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন