মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় সাগরে নিখোঁজ থাকা বিজিবি সিপাহী মো. বিল্লাল হাসানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকা বঙ্গোপসাগর থেকে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। 

মৃত বিল্লাল কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত সিপাহী ছিলেন। 

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গা জীবত উদ্ধার করে। ওই সময় বিজিবুর সদস্যসহ আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার এক শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে পাচঁজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.

আশিকুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর সাগর থেকে বিজিবির সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যান বিজিবি সদস্য। এ সময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি। অবশেষে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।' 

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া ঘটনার দিন খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযানে যান এবং শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।’

এদিকে নিহত বিজিবি সদস্যের ভাই আবু বকর বলেন, ‘ভাইকে খোঁজার জন্য টেকনাফের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছিল। এর মধ্য খবর আসে, সাগরে চরের মধ্য ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সাগরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকা উদ্ধার অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ছিল ভাই। ওই সময় আমাদের জানানো হয়েছিল, তিনিসহ ৩৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এ নিয়ে আমাদের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।’

নিখোঁজ বিজিবির সদস্যর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।

ইউএনও বলেন, এর আগে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ ভাসমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। 

স্থানীয়রা জানান, গত ২২ মার্চ শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখেন বিজিবি সদস্যরা। পরে মাঝিমাল্লারা রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি থামানোর সংকেত দেন সমুদ্রে। পরে ওই নৌকাতে ওঠেন বিজিবি সদস্য। এ সময় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও বিজিবি। পরে নিখোঁজ বিজিবির সদস্যসহ রোহিঙ্গাদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চালানো হয়। ডুবে যাওয়া নৌকায় অর্ধশতাধিক লোকজন ছিলেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধার রোহিঙ্গারা। স্থানীয় মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ঈমান হোসাইন ও আবুল মনছুর মিলে মিয়ানমারের থেকে রোহিঙ্গা পারাপারে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ক ড ব র ঘটন য় শ হপর র দ ব প ব জ ব র সদস য বহনক র হয় ছ ল শ শ সহ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসনিক ভবনের সামনে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আরেকটি রাতযাপন

হল খুলে দেয়ার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আরেকটি রাতযাপন করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। গত রোববার বিকেল ৩টা থেকে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার রাতে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনের সড়কে মাদুর বিছিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। রাতভর তাদের মশার কামড় সহ্য করতে হয়। তারপরও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় যে ৩৭ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ এখনও তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি। কী অভিযোগে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাও শিক্ষার্থীদের জানানো হয়নি। 
সাংবাদিকরা কুয়েট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা আপাতত বহিষ্কৃতদের নাম এবং কে কোন বিভাগের তা জানাতে রাজি হননি।

এদিকে এর আগে সোমবার রাতে কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সভায় গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু এবং সকল আবাসিক হল আগামী ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে এতে সন্তুষ্ট হয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এবং রাতভর সেখানে অবস্থান করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবি অনুযায়ী হল খোলা হয়নি। হল খোলা ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর অনেকদিন দেরি আছে। একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া হলে থাকতে না পারায় তাদের টিউশনি বন্ধের উপক্রম।

প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ