দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বরখাস্ত উপপরিদর্শক মো. শাহ আলমকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেছেন। 

এক যুগ আগে খুলনা নগরীর খালিশপুরের মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় মিল্কি আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসানের বাসার গৃহকর্মী সীমাকে হত্যা ও লাশ গুমের গল্প তৈরি করেছিলেন এস আই শাহ আলম। পরে পুলিশের আরেকটি দল সীমাকে জীবিত উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ হয়রানির অভিযোগে শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।

আলালত থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের মৃত.

ওলিয়ার রহমানের ৯ বছরের মেয়ে সীমাকে তাদের বাসার কাজের জন্য নিয়ে যান মিল্কি আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন। দীর্ঘদিন কাজ করার পর সীমা ওই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় সীমার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে গৃহকর্তা মাসুদ হাসান, মোহাম্মদ আলী খোন্দকার ও মো. মাসুদ শেখকে আসামি করে ২০১২ সালের ৭ মে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম এই পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু ঘুষ না পেয়ে এসআই শাহ আলম নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘হত্যা নাটক’ সাজান। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া উপজেলার লাইন বিল পাবলার একটি খাল থেকে বস্তাবন্দী ২৮-৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের নারীর লাশ সীমা হিসেবে বর্ণনা করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালান। এ ঘটনায় মাসুদ হাসান ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেন শাহ আলম। পরে সীমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘুষ না দেওয়ায় গৃহকর্মী সীমা হত্যা নাটক ও জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন। ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট শাহ আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইয়াসিন আলী জানান, দুটি ধারায় এসআই শাহ আলমকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শাহ আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক এমপ বরখ স ত এসআই শ হ আলম শ হ আলম র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় সীমা হত্যা নাটকে এসআই শাহ আলমের কারাদণ্ড

দুর্নীতি দমন কমিশেনের (দুদক) করা মামলায়  খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বরখাস্তকৃত এসআই মো. শাহ আলমকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে আলাদাভাবে ৭ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কামরুল হোসেন জোয়ার্দার।

খুলনার খালিশপুরের মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় মিল্কিওয়ে আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসানের বাসার গৃহকর্মী সীমা হত্যার নাটক সাজানো এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে হওয়া মামলার পৃথক দুটি ধারায় তাকে এ দণ্ড দেন বিচারক। 

আরো পড়ুন:

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

ভিক্ষুককে ‌যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গণধোলাই

মামলা সূত্রে জানা যায়, মিল্কিওয়ে আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসান ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন ২০০৯ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমানের ৯ বছরের মেয়ে সীমাকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন কাজ করার পর সীমা ওই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় সীমার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে মাসুদ হাসান, মোহাম্মদ আলী খন্দকার ও মো. মাসুদ শেখকে আসামি করে ২০১২ সালের ৭ মে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম এই পরিবারটির কাছে তিন লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় এসআই শাহ আলম নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘হত্যা নাটক’ সাজান। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া উপজেলার লাইন বিল পাবলার একটি খাল থেকে বস্তাবন্দী ২৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী একটি নাম না জানা লাশকে যাচাই বাছাই না করে সীমা হিসেবে শনাক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালান। তদন্ত কার্যক্রমে এই পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম ও তার স্ত্রীকে অভিযুক্ত করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর অ্যাডভাকেট কামরুজ্জামান ভূইয়া আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সীমাকে ফেরত দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট করেন। 

২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর আদালত সীমাকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর বাসা থেকে সীমাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে আদালত দুদককে তদন্তের দায়িত্ব দেন। 

গৃহকর্মী সীমা হত্যা নাটক ও জীবিত উদ্ধার ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে এসআই মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ আগস্ট খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ওই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন (নং-১৭০)। 

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ২০১২ সালের ৭ মে দায়েরকৃত নারী ও শিশু-২৫৭/১২ নম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম নগদ ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ ছাড়াও মাসুদ হাসানের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। ওই টাকা না পেয়ে কাজের মেয়ে সীমা হত্যার কল্পকাহিনী তৈরি করে মাসুদ হাসান দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেন। কথিত অপহরণ মামলায় মাসুদ হাসানের নাম উল্লেখ থাকলেও তার স্ত্রীর নাম ছিল না। তারপরেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করেই এসআই শাহ আলম দ্রুত সাংবাদিকদের ছবি তুলে তাদেরকে আসামি হিসেবে আদালতে পাঠান। এরপর ডুমুরিয়ার একটি নাম না জানা লাশ নিয়েই তৈরি করা হয় সীমা হত্যার ‘কল্পকাহিনী’।

দুদকের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, বরখাস্তকৃত এসআই শাহ আলম অপহরণ মামলা তদন্তকালে জনৈক মাজেদা বেগম ও দিপালী সরকারকে দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট বক্তব্য প্রদানের ব্যবস্থা করেন।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাইওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ডিবির ৫ সদস্য
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৭ ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার 
  • দেশেই আন্তর্জাতিক ডিগ্রির সুযোগ
  • খুলনায় ব্যবসায়ী অপহরণ: ৫ আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
  • রং-কেমিক্যাল দিয়ে আইসক্রিম তৈরি, জরিমানা
  • কেএমপির বরখাস্ত এসআই শাহ আলমের ৭ বছর কারাদণ্ড
  • খুলনায় সীমা হত্যা নাটকে এসআই শাহ আলমের কারাদণ্ড
  • খুলনায় ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে যুবদল–জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাসহ আটক ৫
  • রাজধানীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত এক