৭ মাস পর আ.লীগের ৬ সাবেক এমপিসহ ৭৭০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 23rd, March 2025 GMT
কক্সবাজার শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা, গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে সাত মাস পর দ্রুতবিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলা শাখার ছাত্র প্রতিনিধি এনামুল হক।
মামলায় কক্সবাজারের সাবেক ছয়জন সংসদ সদস্যসহ (সাবেক এমপি) জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকি ২৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয়।
মামলায় আসামিদের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল মোস্তাফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু ও ঈদগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহিনুল হক, তাঁর দুই ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান কায়সারুল হক, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও এথিন রাখাইন, মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মকছুদ মিয়া, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের লালদীঘির পাড়, শহীদ মিনার, ঘুমগাছতলা, বিমানবন্দর সড়কসহ আশপাশের উপসড়কে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মিছিলে হামলা চালান। শহরের বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে অন্ধকারে এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেল ছোড়া হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে মামলা করতে দেরি হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েকজন সংসদ সদস্যসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক আরও পাঁচটি মামলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।
জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।
রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।
সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।