নোকিয়া স্মার্টফোন কিনতে বিকাশ গ্রাহকদের ঋণ দেবে সিটি ব্যাংক
Published: 23rd, March 2025 GMT
নোকিয়া স্মার্টফোন কিনতে বিকাশের গ্রাহকদের ঋণ দেবে সিটি ব্যাংক। বিকাশ পে লেটার সেবা ব্যবহার করে গ্রাহকেরা ফোন কিনতে পারবেন।
এ জন্য সম্প্রতি সিটি ব্যাংক ও সেলেক্সট্রা লিমিটেডের মধ্যে এ–সংক্রান্ত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। দেশজুড়ে গ্রাহকদের জন্য স্মার্টফোন আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।
বাংলাদেশে নোকিয়া ও এইচএমডি মোবাইলের উৎপাদক ও পরিবেশক হলো সেলেক্সট্রা লিমিটেড। প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন।
এই পার্টনারশিপের ফলে গ্রাহকেরা এখন ‘বিকাশ পে লেটার’ সেবা ব্যবহার করে সহজ কিস্তিতে নিজেদের পছন্দের নোকিয়া স্মার্টফোন কিনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে অর্থায়ন করবে সিটি ব্যাংক।
বিকাশের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ বলেন, ‘বিকাশ আর্থিক সেবাকে আরও সহজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিকাশ পে লেটার সেবার মাধ্যমে গ্রাহকেরা এখন মানসম্পন্ন স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ পাবেন, যা ডিজিটাল সিস্টেমের সঙ্গে তাদের সংযোগ আরও দৃঢ় করবে। সিটি ব্যাংক ও সেলেক্সট্রা লিমিটেডের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা ডিজিটাল বিভাজন দূর করে লাখ লাখ বাংলাদেশিদের ক্ষমতায়নের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।’
সিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং অরূপ হায়দার বলেন, বিকাশ পে লেটারের মাধ্যমে স্মার্টফোনকে গ্রাহকের কাছে আরও সহজলভ্য করা হলো।
সেলেক্সট্রা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বিকাশ পে লেটার ও সিটি ব্যাংকের অর্থায়নের মাধ্যমে গ্রাহকেরা আরও বেশি কার্যকর থাকতে প্রয়োজনীয় মুঠোফোনের মালিক হতে পারবেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এইএমডি গ্লোবালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী আল আমিন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে তালা ভেঙে শহীদ মিনারে ফুল দিলেন মুক্তিযোদ্ধারা
মহান স্বাধীনতা দিবসে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন শহীদ মিনারের তালা ভেঙে পুষ্প স্তবক অর্পণ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার (২৬ মার্চ) বেলা ১১টায় পৌর শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকার পুরোনো শহীদ মিনারে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এ অবস্থা দেখে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে গেটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশে করে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন তারা।
স্বাধীনতার প্রথম প্রহর থেকে শহীদ মিনারের গেটে তালা লাগিয়ে রাখা হয়। সেখানে সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। এ নিয়ে অনেক মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
আরো পড়ুন:
বায়তুল মোকাররমে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত
স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ এবং আজকের বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের (৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ শহর হানাদার মুক্ত হয়। তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকিস্তানি বাহিনী। সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা। ১৬ ডিসেম্বরের আগেই শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকায় এই শহীদ মিনার নিজেদের হাতে নির্মাণ করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের অনেকের দাবি, স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনার এটি।
সুনামগঞ্জ শহরে মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলনের আর কোনো স্মৃতিফলক নেই। ফলে এটিই হয়ে ওঠে একাত্তরের স্মৃতিফলক এবং বায়ান্নের ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর মিনার। তবে এটি শহীদ মিনার নামেই জেলাজুড়ে পরিচিত।
সুনামগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে কয়েক বছর আগে একাত্তরের শহীদ স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর থেকে জাতীয় দিবসে পুরোনো এবং নতুন- এই দুটি শহীদ বেদিতেই পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কিন্তু এই বছর মহান স্বাধীনতা দিবসে পুরোনো শহীদ মিনারের প্রবেশ গেটে তালা লাগিয়ে রাখা হয়। শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তালা দেখে সেটি ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ফুল দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় তারা এই ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে বর্ণনা করেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতেই এই শহীদ মিনার করা হয়েছে। আজ মহান স্বাধীনতা দিবসে শহীদ মিনারে তালা মেরে বন্ধ রেখে তারা দায়িত্বহীন কাজ করেছেন। আমরা বাধ্য হয়েই তালা ভেঙে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি।”
হাওর এরিয়া আপলিফটমেন্ট সোসাইটির (হাউস) নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ বলেন, “প্রতিবছর রাত ১২টা ১ মিনিটে এখানেই শ্রদ্ধা অর্পণ করি, কখনো তো শহীদ মিনার তালাবদ্ধ থাকেনি। আজ তালাবদ্ধ কেন?”
সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, আসলে শহীদ মিনারে যে সবসময় তালাবদ্ধ থাকে ব্যাপারটা এমন না। এখানকার আশপাশের হকাররা ব্যবসার কাজে যেন শহীদ মিনার ব্যবহার করতে না পারেন, তাই তালা দেওয়া। আর শহীদ মিনারে শুধু ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। আর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তবে মুক্তিযোদ্ধারা যদি আগে থেকে আমাদের জানাতেন যে, তারা শহীদ মিনারে ফুল দিতে চান, তাহলে আমরা সেটি খোলা রাখতাম।”
ঢাকা/মনোয়ার/রাসেল