কোটি টাকার বিদেশি সিগারেটসহ গ্রেপ্তার ২
Published: 23rd, March 2025 GMT
চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৬৩ হাজার ৮০০ প্যাকেট বিদেশি সিগারেটসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে হাটহাজারীর আমানবাজার এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যান থেকে এসব সিগারেট উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন শওকত আকবর ও মো. বাদশা। তাঁদের দুজনেরই বাড়ি রাঙামাটি জেলায়। তাঁদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি সিগারেট বহনে নিয়োজিত পিকআপ ভ্যানটিও জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। উদ্ধার হওয়া সিগারেটের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। ভারত থেকে অবৈধভাবে এসব সিগারেট বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের ছোট্ট প্রাচীন মসজিদ নওগাঁর ‘চৌজা মসজিদ’
দেশের ছোট অথচ প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম নওগাঁর মান্দা উপজেলার চৌজা গ্রামে অবস্থিত চৌজা মসজিদ। এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদে ইমামসহ সাতজন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে সুলতানি আমলের ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে কে নির্মাণ করেছিলেন, সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও মান্দা উপজেলা তথ্য বাতায়নেও মসজিদটি সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তথ্যমতে, সুলতানি আমলের স্থাপত্যরীতিতে তৈরি মসজিদটি অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে নির্মাণ করা হয়ে থাকতে পারে।
দেশের অন্যতম ছোট এই মসজিদ নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার পশ্চিমে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কসংলগ্ন মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চৌজা গ্রামে অবস্থিত।
মসজিদের বাইরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দেওয়া সাইনবোর্ড থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৯ জুন চৌজা মসজিদকে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আয়তাকার মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ১৫ ফুট ও প্রস্থে ১৫ ফুট। মসজিদটির দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি, মসজিদের মূল দরজাটির উচ্চতা ৫ ফুট এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশের ছোট দুটি দরজার উচ্চতা ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি।
এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদে মোট তিনটি খিলান দরজা এবং চার কোনায় চারটি বুরুজ বা মিনার আছে। এ ছাড়া মসজিদের মূল দরজা, উত্তর ও দক্ষিণের দরজা এবং মেহরাবের ওপরের অংশে দুটি করে মোট আটটি ছোট মিনার আছে। মসজিদের তিনটি খিলান দরজার ওপরে চালা আকৃতির ডিজাইন করা আছে। এ ছাড়া প্রতিটি বুরুজ বা মিনারের নিচের অংশে কলস আকৃতির ডিজাইন করা। মসজিদের প্রবেশ দরজার ওপর টাঙানো আছে পাঁচটি কাঠি, যা দেখে অতীতে নামাজের ওয়াক্তের হিসাব করা হতো।
চৌজা গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ কবে নির্মিত হয়েছে। এই মসজিদে স্থানীয় মুসল্লি ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে প্রতি জুমায় অনেকে নামাজ আদায় করতে আসেন। মসজিদের মূল অংশে মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ২০০৪/০৫ সালের দিকে মসজিদের সামনে অংশের মেঝে পাকা করে সেখানে নামাজ আদায় করা হয়। ভেতরে-বাইরে মিলিয়ে বর্তমানে এই মসজিদে প্রায় ১০০ জন একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।’
১২ বছর ধরে চৌজা পুরাকীর্তি জামে মসজিদে ইমামতি করছেন হাফেজ রায়হান মণ্ডল। তিনি বলেন, চৌজা পুরাকীর্তি জামে মসজিদে জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে। এই মসজিদের ভেতরের অংশে একজন ইমাম ও ছয়জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। বিগত সময়ে মসজিদটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ২০০৪ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংস্কার করা হয়।
বর্তমানে মসজিদটিতে শেওলা ধরে মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া মসজিদটিতে অজু ও শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় মুসল্লিদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম বলেন, চৌজা মসজিদ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত একটি পুরাকীর্তি। প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা এটি। দেশের অন্যতম প্রাচীন ক্ষুদ্রতম মসজিদ এটি। কিন্তু এত দিন এই মসজিদ দৃষ্টির আড়ালে ছিল। মসজিদটি পরিদর্শন করে সংস্কারের প্রয়োজন হলে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন তিনি।