জি কে শামীমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায়ের নতুন তারিখ ২৭ মার্চ
Published: 23rd, March 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মার্চ।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারকে মো. রবিউল আলম আজ রোববার এই তারিখ ধার্য করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী বিল্লাল হোসেন।
জি কে শামীম কারাগারে আছেন। তাঁর মা পলাতক। এ মামলায় গত ২২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। আদালত সেদিন ৩০ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন। কিন্তু সেদিন (৩০ জানুয়ারি) রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত।
তবে আসামিপক্ষ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি আবার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করার আবেদন করা হয়। পরে আদালতের আদেশে মামলাটি রায়ের পর্যায় থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আসে। আজ রোববার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের নতুন তারিখ ঠিক করেন আদালত।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দুদক মামলা করে।
মামলায় ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শামীমকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাঁর মায়ের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআরের (স্থায়ী আমানত) কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এই টাকার তথ্য শামীম বা তাঁর মায়ের আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার তাঁর ছেলে শামীমের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ নিজ নামে রেখে তাঁকে (শামীম) অপরাধে সহায়তা করেছেন।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন শামীম। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচার আইনে পৃথক মামলা হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, শামীমের কার্যালয়ে অভিযান চলিয়ে ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার জব্দ করে র্যাব। এই টাকার কোনো উৎস পায়নি দুদক। সব মিলিয়ে শামীমের ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে শামীমের। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসবের দাম ৪১ কোটি টাকা। শামীম তাঁর অস্ত্রধারী সাত দেহরক্ষীকে দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডারবাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে এসব অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। অন্যদিকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই শামীমকে ১০ বছর এবং তাঁর সাত দেহরক্ষীর প্রত্যেককে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জি কে শামীমের দুর্নীতি মামলার রায় ২৭ মার্চ
অবৈধ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের রায়ের তারিখ আগামী ২৭ মার্চ ধার্য করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত গত ২০ মার্চ দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
রবিবার (২৩ মার্চ) সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য ছিলো। মামলায় জি কে শামীমের মা পলাতক ছিলেন। পরে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। জামিন নেন। এরপর জি কে শামীমের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করা হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তাকে, আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, সাফাই সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আবার রায়ের তারিখ ধার্য করা হলো।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় -১ এর উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার সময় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের বাসা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভবন থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে।
গ্রেপ্তারের সময় র্যাব সদরদপ্তর, সচিবালয়ে ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের হাতে ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। পরে সেগুলোর কার্যাদেশ বাতিল হয়। জব্দ করা হয় তার ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব।
অভিযনের পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বাকি সাত আসামিকে (জিকে শামীমের দেহরক্ষী) ৪ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম।
ঢাকা/মামুন/ইভা