বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) পাওয়া যায়, যা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়। আগে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) শুধু গরমের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো; কিন্তু আধুনিক এসিগুলো এখন আরও অনেক উপকারী সুবিধা নিয়ে আসছে। তাই বাসাবাড়িতে এসির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। একসময় এসি ব্যবহারের চল ছিল ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। গরমের দিনে এটি আরামদায়ক ঠান্ডা পরিবেশ তৈরি করে, যা ঘুম, কাজ ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় স্বস্তি আনে। এখন বেশির ভাগ আধুনিক এসিতে এয়ার পিউরিফায়ার বা ফিল্টারিং সিস্টেম থাকে; যা ধুলা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে। এসি বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে, ঘরের আসবাব রক্ষা করে এবং ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া কমায়।

বাজারে প্রচলিত এসির ধরন

ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার মো.

জুলহক হোসাইন বলেন, বাজারে প্রয়োজনভেদে নানা ধরনের এসি দেখা যায়। যেকোনো ঘর বা অফিসের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হিসেবে দেখা যায় স্প্লিট এসি। এটি দুটি ইউনিটে বিভক্ত। একটি বাইরের কম্প্রেসর, অন্যটি অভ্যন্তরীণ ইউনিট। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও শব্দহীন হওয়ায় বাসা, অফিস, রেস্তোরাঁ বা ছোট দোকানের জন্য আদর্শ এমন এসি। আগে একসময় উইন্ডো এসি দেখা যেত। ২০২০ সালের পর থেকে এমন এসির চল উঠে গেছে। দেয়াল ভেঙে বসাতে হয় বলে এসব এসির ব্যবহার নেই। সাধারণত একক ইউনিটের এই এসিগুলো জানালা বা দেয়ালে ফিট করা হতো। বাজার ঘুরে ক্যাসেট এসি দেখা যায়। এমন এসি সাধারণ ছাদের সঙ্গে ফিট করা হয়। সাধারণত বড় অফিস, শোরুম ও রেস্টুরেন্টে ব্যবহৃত হয়। এটি চারপাশে ঠান্ডা বাতাস ছড়াতে সক্ষম এমন এসি। এখন পোর্টেবল এসি বেশ জনপ্রিয়। এসব এসি ছোট আকারের এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে সরানো যায়। বড় আকারের মসজিদ বা অফিস–আদালত, ভাড়া বাসা বা অস্থায়ী স্থাপনার জন্য ভালো। সেন্ট্রাল এসি বা মাল্টিভিআরএফ এসি বড় বড় ভবন, হাসপাতাল, শপিং মল বা করপোরেট অফিসের জন্য ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। পুরো বিল্ডিংকে সমানভাবে ঠান্ডা রাখতে কার্যকর। ফ্লোর স্ট্যান্ডিং এসি দেখা যায়। বিভিন্ন হোটেল লবি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে এমন ফ্লোর স্ট্যান্ডিং দেখতে পাবেন। 

কোন জায়গায় কেমন এসির প্রয়োজন

ছোট ঘর বা ব্যক্তিগত কক্ষের জন্য স্প্লিট এসি বা পোর্টেবল এসি ব্যবহারের চল দেখা যায়। সাধারণ বাসাবাড়িতে স্প্লিট এসি এখন ভীষণ জনপ্রিয়। মাঝারি বা বড় ঘরেও প্রয়োজন বুঝে স্প্লিট এসি ব্যবহার করা যায়। অফিস বা বাণিজ্যিক স্থানে ক্যাসেট বা সেন্ট্রাল এসি ব্যবহার করা হচ্ছে। বহু কক্ষবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল এসি বা মাল্টি-ভিআরএফ এসি ব্যবহার করা হয়। ১০০–১২০ বর্গফুট জায়গায় ১ টন এসি, ১৮০ বর্গফুটের জন্য ১.৫ টন এসি, ২৫০ বর্গফুটের জন্য ২ টন এসি ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৩৫০ বর্গফুটের অধিক জায়গার জন্য বেশি টনের এসি ব্যবহার করা হয়। ১ টন এসি সাধারণত ছোট বেডরুম, স্টাডি রুম, অফিস কিউবিকলে ব্যবহার করা যায়। ১.৫ টন এসি মাঝারি আকারের শোবার ঘর বা লিভিং রুমে বেশ কার্যকর। ২ টন এসি বড় ড্রয়িংরুম, ক্লাসরুম, ছোট অফিস বেশ সুবিধাজনক। এর বাইরে ব্যাংক, রেস্টুরেন্ট, শোরুম, বিভিন্ন সম্মেলনকক্ষের আকার বুঝে বড় আকারে এসি ব্যবহারের সুযোগ আছে।

ইনভার্টার এসি বনাম নন-ইনভার্টার

বাজারে ইনভার্টার এসি দেখা যায়। এমন এসির কম্প্রেসর ধীরে ধীরে গতি পরিবর্তন করে। কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এটি ঘরের তাপমাত্রা ধরে রাখে ও প্রয়োজন অনুযায়ী কম্প্রেসরের গতি কমিয়ে বাড়িয়ে কাজ করে। যেখানে দীর্ঘ সময় এসি চালু রাখতে হয়, যেমন বাসাবাড়ি, ড্রইংরুম, অফিসে এমন এসি ব্যবহার করা হয়। যারা বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও টেকসই এসি চান, তারা এমন এসি ব্যবহার করেন। আর নন-ইনভার্টার এসির কম্প্রেসর অন বা অফ মোডে চলে। যখন তাপমাত্রা বাড়ে, তখন কম্প্রেসর চালু হয় এবং প্রয়োজন শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায়। যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ এবং বিদ্যুৎসাশ্রয় চান, তবে ইনভার্টার এসি সেরা। আর যদি কম সময়ে কম খরচে এসি চালাতে চান, তবে নন-ইনভার্টার এসি ভালো হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স প ল ট এস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে যত ধরনের এয়ার কন্ডিশনার পাওয়া যায়

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) পাওয়া যায়, যা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়। আগে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) শুধু গরমের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো; কিন্তু আধুনিক এসিগুলো এখন আরও অনেক উপকারী সুবিধা নিয়ে আসছে। তাই বাসাবাড়িতে এসির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। একসময় এসি ব্যবহারের চল ছিল ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। গরমের দিনে এটি আরামদায়ক ঠান্ডা পরিবেশ তৈরি করে, যা ঘুম, কাজ ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় স্বস্তি আনে। এখন বেশির ভাগ আধুনিক এসিতে এয়ার পিউরিফায়ার বা ফিল্টারিং সিস্টেম থাকে; যা ধুলা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে। এসি বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে, ঘরের আসবাব রক্ষা করে এবং ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া কমায়।

বাজারে প্রচলিত এসির ধরন

ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার মো. জুলহক হোসাইন বলেন, বাজারে প্রয়োজনভেদে নানা ধরনের এসি দেখা যায়। যেকোনো ঘর বা অফিসের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হিসেবে দেখা যায় স্প্লিট এসি। এটি দুটি ইউনিটে বিভক্ত। একটি বাইরের কম্প্রেসর, অন্যটি অভ্যন্তরীণ ইউনিট। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও শব্দহীন হওয়ায় বাসা, অফিস, রেস্তোরাঁ বা ছোট দোকানের জন্য আদর্শ এমন এসি। আগে একসময় উইন্ডো এসি দেখা যেত। ২০২০ সালের পর থেকে এমন এসির চল উঠে গেছে। দেয়াল ভেঙে বসাতে হয় বলে এসব এসির ব্যবহার নেই। সাধারণত একক ইউনিটের এই এসিগুলো জানালা বা দেয়ালে ফিট করা হতো। বাজার ঘুরে ক্যাসেট এসি দেখা যায়। এমন এসি সাধারণ ছাদের সঙ্গে ফিট করা হয়। সাধারণত বড় অফিস, শোরুম ও রেস্টুরেন্টে ব্যবহৃত হয়। এটি চারপাশে ঠান্ডা বাতাস ছড়াতে সক্ষম এমন এসি। এখন পোর্টেবল এসি বেশ জনপ্রিয়। এসব এসি ছোট আকারের এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে সরানো যায়। বড় আকারের মসজিদ বা অফিস–আদালত, ভাড়া বাসা বা অস্থায়ী স্থাপনার জন্য ভালো। সেন্ট্রাল এসি বা মাল্টিভিআরএফ এসি বড় বড় ভবন, হাসপাতাল, শপিং মল বা করপোরেট অফিসের জন্য ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। পুরো বিল্ডিংকে সমানভাবে ঠান্ডা রাখতে কার্যকর। ফ্লোর স্ট্যান্ডিং এসি দেখা যায়। বিভিন্ন হোটেল লবি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে এমন ফ্লোর স্ট্যান্ডিং দেখতে পাবেন। 

কোন জায়গায় কেমন এসির প্রয়োজন

ছোট ঘর বা ব্যক্তিগত কক্ষের জন্য স্প্লিট এসি বা পোর্টেবল এসি ব্যবহারের চল দেখা যায়। সাধারণ বাসাবাড়িতে স্প্লিট এসি এখন ভীষণ জনপ্রিয়। মাঝারি বা বড় ঘরেও প্রয়োজন বুঝে স্প্লিট এসি ব্যবহার করা যায়। অফিস বা বাণিজ্যিক স্থানে ক্যাসেট বা সেন্ট্রাল এসি ব্যবহার করা হচ্ছে। বহু কক্ষবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল এসি বা মাল্টি-ভিআরএফ এসি ব্যবহার করা হয়। ১০০–১২০ বর্গফুট জায়গায় ১ টন এসি, ১৮০ বর্গফুটের জন্য ১.৫ টন এসি, ২৫০ বর্গফুটের জন্য ২ টন এসি ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৩৫০ বর্গফুটের অধিক জায়গার জন্য বেশি টনের এসি ব্যবহার করা হয়। ১ টন এসি সাধারণত ছোট বেডরুম, স্টাডি রুম, অফিস কিউবিকলে ব্যবহার করা যায়। ১.৫ টন এসি মাঝারি আকারের শোবার ঘর বা লিভিং রুমে বেশ কার্যকর। ২ টন এসি বড় ড্রয়িংরুম, ক্লাসরুম, ছোট অফিস বেশ সুবিধাজনক। এর বাইরে ব্যাংক, রেস্টুরেন্ট, শোরুম, বিভিন্ন সম্মেলনকক্ষের আকার বুঝে বড় আকারে এসি ব্যবহারের সুযোগ আছে।

ইনভার্টার এসি বনাম নন-ইনভার্টার

বাজারে ইনভার্টার এসি দেখা যায়। এমন এসির কম্প্রেসর ধীরে ধীরে গতি পরিবর্তন করে। কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এটি ঘরের তাপমাত্রা ধরে রাখে ও প্রয়োজন অনুযায়ী কম্প্রেসরের গতি কমিয়ে বাড়িয়ে কাজ করে। যেখানে দীর্ঘ সময় এসি চালু রাখতে হয়, যেমন বাসাবাড়ি, ড্রইংরুম, অফিসে এমন এসি ব্যবহার করা হয়। যারা বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও টেকসই এসি চান, তারা এমন এসি ব্যবহার করেন। আর নন-ইনভার্টার এসির কম্প্রেসর অন বা অফ মোডে চলে। যখন তাপমাত্রা বাড়ে, তখন কম্প্রেসর চালু হয় এবং প্রয়োজন শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায়। যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ এবং বিদ্যুৎসাশ্রয় চান, তবে ইনভার্টার এসি সেরা। আর যদি কম সময়ে কম খরচে এসি চালাতে চান, তবে নন-ইনভার্টার এসি ভালো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ