গাজীপুর কালিয়াকৈরের একই পরিবারের তিন সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে উপজেলার গবিন্দবাড়ি দেওয়ানপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে স্ত্রী-সন্তান ও স্বামীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়েছে স্বামী। 

নিহতরা হলেন- মো. নাজমুল ইসলাম (২৯), স্ত্রী খাদিজা আক্তার (২২) ও তাদের ৪ বছরের কন্যা সন্তান নাদিয়া আক্তার। নিহত নাজমুল টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার শুলাপ্রতিমা গ্রামের মো.

আবুর ছেলে। তার কোনো পেশা ছিল না এবং তিনি নেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর গবিন্দবাড়ি এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নাজমুল ইসলাম বসবাস করতেন। অনেকদিন ধরেই নানা বিষয় নিয়ে তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল। এসব নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো। গত শনিবার রাত অনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে তারা নিজ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন। সকাল হয়ে গেলেও তারা ঘুম থেকে না উঠায় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পরিবারের লোকজন তাদের ডাকাডাকি করতে থাকে। কোনো সারা শব্দ না পেয়ে স্বজনরা ঘরের পেছন দিকের জানালা টেনে ফাঁকা করে দেখেন নাজমুলের লাশ ঝুলে আছে। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখেন খাদিজা ও নাদিয়ার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল ১০টার দিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। 

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্টক এক্সচেঞ্জ ‘না’ করলে আইপিও অনুমোদন নয়

কোনো কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করার অনুমতি পাবে কিনা, তা নিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের মতামতই যেন প্রাধান্য পায়, সেভাবে আইপিওর আইনি বিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছে শেয়ারবাজার সংস্কারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গঠিত টাস্কফোর্স। গতকাল সোমবার সংস্থাটির কাছে টাস্কফোর্স তাদের আইপিও-সংক্রান্ত সুপারিশমালা জমা দিয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশন কার্যালয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে সুপারিশমালা হস্তান্তর করেন টাস্কফোর্সের সদস্য মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও মাজেদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাস্কফোর্সের সদস্য ড. আল-আমিন ও নেছার উদ্দিন, বিএসইসির তিন কমিশনার এবং টাস্কফাের্স সম্পর্কিত ফােকাস গ্রুপের সদস্যরা।
জানা গেছে, আইপিও-সংক্রান্ত সুপারিশে কমিটি বলেছে, স্টক এক্সচেঞ্জ আইপিও-সংক্রান্ত আবেদন পর্যালোচনার জন্য বিশেষায়িত পৃথক প্যানেল থাকতে হবে। ওই প্যানেল আইপিও আবেদনকারী কোম্পানির খুঁটিনাটি পরীক্ষা করবে। প্রয়োজনে কোম্পানির কার্যালয়, কারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করবে। ওই প্যানেলের মতামতের ভিত্তিতে স্টক এক্সচেঞ্জ যদি কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির যোগ্য বলে মত দেয়, তাহলে কমিশন ওই আবেদন অনুমোদনের বিষয় বিবেচনা করবে, অন্যথায় নয়। তবে স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো কোম্পানির আইপিও বিষয়ে ইতিবাচক মতামত দেওয়ার পরও কমিশন তা গ্রহণ না করার এখতিয়ার রাখবে। আবার স্টক এক্সচেঞ্জ নেতিবাচক মতামত দেওয়ার পর চাইলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রিভিউ আবেদন করতে পারবে।
এমন সুপারিশ কমিশনের ক্ষমতাকে খর্ব করবে কিনা– এমন প্রশ্নে টাস্কফোর্স-সংশ্লিষ্ট একজন সমকালকে বলেন, অনেক দেশে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইপিও অনুমোদন দেয় না। এখন স্টক এক্সচেঞ্জ যদি কোনো কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করার যোগ্য মনে না করে, তাহলে ওই আইপিও হওয়া উচিত নয়। 

টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ এতদিন নিজের দায় বা সমালোচনা এড়াতে প্রায় সব কোম্পানির আইপিও নিয়ে নেতিবাচক মতামত দিত। বিএসইসি যদি এ সুপারিশ আমলে নেয়, তাহলে স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্ব বাড়বে। আবার বিএসইসি স্টক এক্সচেঞ্জের মতামত উপেক্ষা করে আগের মতো খারাপ কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিতে পারবে না।
কোনো কোম্পানি আইপিও আবেদন করার পর অনুমোদন পাবে কি পাবে না– সে সিদ্ধান্তের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দিতে আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রস্তাব করেছে সুপারিশ কমিটি। এ জন্য আইপিও আবেদন করার পর তালিকাভুক্ত হওয়ার সর্বোচ্চ সময় সাড়ে ছয় মাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভালো কোম্পানি আইপিওতে আসতে যাতে আগ্রহী হয়, তার জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতির ক্ষেত্রে দরপ্রস্তাব প্রক্রিয়া ডাচ্-অকশন পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যেখানে দরপ্রস্তাবকারীদের থেকে সর্বোচ্চ দরপ্রস্তাবকারীরা নিজ নিজ দরে শেয়ার কিনতে বাধ্য থাকবে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে দর নির্ধারণ আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের আইপিওর কোটার সর্বোচ্চ ১ শতাংশ শেয়ারের জন্য আবেদন করার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে যা ২ শতাংশ।

বর্তমানে আইপিও দর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওর ২৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা আছে। এটি ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে কমিটি। প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত কোটা ৫০ শতাংশ হবে। আইপিও শেয়ার পেতে আবেদন করতে সেকেন্ডারি বাজারে আগাম ন্যূনতম বিনিয়োগ থাকার যে শর্ত রয়েছে তা তুলে নিতেও সুপারিশ করেছে কমিটি।
তালিকাভুক্তির পর বর্তমানে সার্কিট ব্রেকার প্রথা রয়েছে। এতে দু-চারটি শেয়ার কেনাবেচা করে প্রতিদিন ১০ শতাংশ করে দর বাড়ানোর সুযোগ পায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। এ ধারা বন্ধে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন দিন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারদরে সার্কিট ব্রেকার ফ্রি রাখার প্রস্তাব করেছে কমিটি। কোনো কোম্পানি আইপিও আবেদনে সত্য ও বাস্তব তথ্য দিচ্ছে কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য বিএসইসির নির্ধারিত অডিটর প্যানেল দ্বারা আর্থিক হিসাব নিরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ