ডুয়োলিঙ্গো

এই অ্যাপে অনলাইন গেমের মতো ধাপে ধাপে শেখার সুযোগ আছে। শব্দের উচ্চারণ ও অর্থ শেখার জন্য আছে অডিও সহায়তা; পড়া, লেখা, শোনা ও বলার জন্য আলাদা আলাদা অনুশীলন। ছোট ছোট ‘লেভেলে’ বিভক্ত থাকায় শেখাটা সহজ হয়। আপনি প্রতিদিন পাঁচটি নতুন শব্দ শেখার পরিকল্পনাও করতে পারেন। এক বসাতেই হয়তো শিখে ফেললেন Ameliorate, Pernicious, Serendipity-এর মতো কিছু শব্দ। শুধু ইংরেজিই নয়, ডুয়োলিঙ্গোতে আপনি ৪০টির বেশি ভাষা শিখতে পারবেন।

মেমরাইজ

ইংরেজি যাঁদের মাতৃভাষা, এমন শিক্ষকদের কাছ থেকেই উচ্চারণসহ শব্দ শেখা যায় এই অ্যাপের মাধ্যমে। মেমরাইজ মূলত ফ্ল্যাশকার্ড পদ্ধতিতে ইংরেজি শেখায়, যেখানে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে শব্দ শেখানো হয়। শব্দের কোন জায়গায় বিরতি দিতে হয়, কোন অংশটার উচ্চারণ এড়িয়ে যেতে হয়, তা-ও আপনি শিখতে পারবেন। কথা বলার সময় নতুন শেখা শব্দগুলো বারবার ব্যবহার করলে মনে রাখা সহজ হবে।

অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি

এই অ্যাপকে ইংরেজি ভাষার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎসগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয়। সাড়ে তিন লাখের বেশি শব্দ ও বাক্যের উদাহরণ শিখতে পারবেন। প্রতিটি শব্দের উচ্চারণ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যাও পাবেন। প্রতিশব্দ ও বিপরীত শব্দ শেখার সুবিধা আছে। ধরা যাক, Resilient শব্দটির অর্থ আপনি জানতে চান। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি জানবেন, এর অর্থ সহনশীল, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। সঙ্গে প্রতিশব্দ, বাক্যের মাধ্যমে উদাহরণ, সবই পাবেন।

আরও পড়ুনইংরেজিভীতি জয় করে যেভাবে ব্র্যাকের সনদ পেলেন অফিস সহকারী মোবারক০১ এপ্রিল ২০২৩ইমপ্রুভ ইংলিশ-ভোক্যাব, গ্রামার

এ অ্যাপটি মূলত গেমের মাধ্যমে নতুন শব্দ শেখায়। কুইজ ও অনলাইন প্রতিযোগিতা দিয়েও ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বাড়ানো হয়। প্রতিদিন ছোট ছোট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় অ্যাপটি। এটি বিশেষভাবে তাঁদের জন্য উপকারী, যাঁরা শেখার সময় কিছুটা মজা ও বিনোদনও চান।

ভোকাবুলারি বিল্ডার অ্যাপ

যাঁরা ভবিষ্যতে জিআরই পরীক্ষা দিতে চান, তাঁরা ম্যাগুশের ভোকাবুলারি বিল্ডার টেস্ট অ্যাপটি থেকে বিভিন্ন ধরনের শব্দ শিখতে পারেন। জিআরই পরীক্ষায় আসা বিভিন্ন শব্দের ব্যবহার ও অর্থের বিস্তারিত বর্ণনা থাকে এই অ্যাপে। অ্যাপটি এরই মধ্যে এক কোটির বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে গুগল প্লে স্টোর থেকে।

ওয়ার্ডআপ

ওয়ার্ডআপ দাবি করছে, তারাই বিশ্বের প্রথম এআই-ভিত্তিক ইংরেজি শব্দভান্ডার শেখার অ্যাপ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যাপের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা ও শব্দ শিখতে পারেন। নিজের সুবিধামতো ইংরেজি শব্দ শেখা, এআইয়ের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষার চর্চা ও লেখার সুযোগ পাবেন।

ভোকাবুলারি-ইংলিশ টু বাংলা

যাঁরা ইংরেজি থেকে বাংলা শব্দ শিখতে চান, তাঁরা ভোকাবুলারি অ্যাপের মাধ্যমে শিখতে পারেন। এই অ্যাপ এক লাখের বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে। এতে বিভিন্ন ইংরেজি শব্দের বাংলা অর্থ সহজে শেখার সুযোগ আছে।

ভোক্যাব প্র্যাকটিস অ্যাপ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এই অ্যাপ। স্যাট, জিআরই, টোয়েফল পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও সহায়ক হতে পারে। কতটুকু শিখলেন, তার ওপর পরীক্ষা দিতে পারবেন। শিখতে পারবেন নানা শব্দের অর্থ ও উচ্চারণ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই অ য প ব যবহ র পর ক ষ র জন য প রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

যক্ষ্মা হইতে রক্ষা পাইতে হইবে

বাংলাদেশ যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করিলেও প্রাণঘাতী এই রোগ অদ্যাবধি নির্মূল করিতে পারে নাই। এহেন পরিস্থিতির মধ্যে যখন যক্ষ্মা নির্মূলে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থায়ন বন্ধ হইয়া যায় তখন নূতন উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। সোমবার সমকাল জানাইয়াছে, গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে নূতন সরকার ক্ষমতাসীন হইবার পর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বন্ধ হইয়া গিয়াছে ইউএসএআইডির অর্থায়ন। ইহার নেতিবাচক প্রভাব পড়িয়াছে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ ও চিকিৎসায়। বন্ধ হইয়া গিয়াছে বেসরকারিভাবে পরিচালিত রোগ শনাক্তকরণ, গবেষণা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে মিলিতেছে না ঔষধপ্রতিরোধী যক্ষ্মার সেবা। ইহাতে যক্ষ্মার নূতন ঝুঁকিতে পড়িতে যাইতেছে বাংলাদেশ। এহেন উদ্বেগের কারণ হইল, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এখনও শনাক্তের বাহিরে ১৭ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী। এই সকল রোগী নিজেদের অজান্তেই অতি সংক্রামক যক্ষ্মার জীবাণু প্রসারে ভূমিকা রাখিতে পারেন। অন্যদিকে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বন্ধের কারণে নূতন রোগী শনাক্ত কার্যক্রমও এক প্রকার বন্ধ। যক্ষ্মা নির্মূল কর্মসূচির বাস্তবায়ন সংকট এমন সময়ে শুরু হইল যখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলিতেছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করিতে হইলে শনাক্তের বাহিরে থাকা রোগীদের চিহ্নিত করিয়া দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনিতে হইবে। তদুপরি মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতারও অভাব রহিয়াছে। যক্ষ্মার চিকিৎসা বিনামূল্যে পাওয়া 
যাইবার তথ্যও যখন অনেকের রোগটির বিপদ সম্পর্কে হুঁশ ফিরাইতে পারে নাই, তখন বিনামূল্যের চিকিৎসা বন্ধ হইবার পরিণাম কী হইতে পারে, উহা কল্পনা করা কঠিন নহে। 

আমরা জানি, যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয় মাস নিয়মিত ঔষধ সেবন করিতে হয়। নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়মিত এবং পূর্ণ মেয়াদে ঔষধ না খাইলে যক্ষ্মার জীবাণু ওই ঔষধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়িয়া তোলে। বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের অবহেলা ও অসচেতনতায় এই ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা এমডিআর টিবি ক্রমবর্ধমান বলিয়া সরকারি-বেসরকারি উৎসের সকল তথ্যই বলিতেছে। বিদেশি সহায়তা বন্ধের ফলে ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগী বৃদ্ধি পাইলে পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ গ্রহণ করা বিচিত্র কিছু নহে। কারণ তখন প্রচলিত ঔষধে সচেতন রোগীদেরও যক্ষ্মা নিরাময় কঠিন হইতে পারে।

শুধু উহা নহে, সামগ্রিক জনস্বাস্থ্যক্ষেত্রে উহার প্রভাব ব্যাপক উদ্বেগের কারণ হইতে পারে। দেশের অর্থনীতির জন্যও যে ইহা সুখকর কোনো সংবাদ নহে– এই কথাও বলা প্রয়োজন। স্বীকার করিতে হইবে, শারীরিক পুষ্টিহীনতার সহিত যক্ষ্মার একটা নিবিড় সংযোগ রহিয়াছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসও এই রোগ সম্প্রসারণের অন্যতম কারণ। এই কারণে সাধারণত সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়, যাহাদের উপর শিল্প-কৃষিসহ রাষ্ট্রের প্রায় সকল উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ড নির্ভরশীল। অতএব যক্ষ্মা হইতে বিশেষত শ্রমজীবী মানুষদের রক্ষার্থে কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন জরুরি।
যদিও জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. জাহাঙ্গীর কবির অনেকটা অভয়দানের সুরে বলিয়াছেন, এনটিপি মূলত গ্লোবাল ফান্ডে চলে। তাই শুধু ইউএসএআইডির অর্থায়ন বন্ধে সরকারি কোনো প্রকল্পে প্রভাব পড়িবে না। তথাপি তাঁহার এই কথায় আশ্বস্ত না হইবার কারণ যথেষ্ট বিরাজমান। এমন অভিযোগ অমূলক নহে যে, প্রধানত দরিদ্ররা আক্রান্ত হয় বলিয়া এই খাতে রাষ্ট্রের নিজস্ব সম্পদ বরাদ্দে মহলবিশেষের কার্পণ্য থাকিতে পারে। তাই আমরা মনে করি, এখনই স্থগিত যক্ষ্মা নির্মূল কার্যক্রম সচল করিতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। অন্য উৎস হইতে সহায়তা পাইতে হইলেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এখনই কার্যক্রম আরম্ভ করিতে হইবে। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা সমাধানে সরকার, তৎসহিত বেসরকারি খাতকেও অগ্রসর হইতে হইবে। মনে রাখিতে হইবে, যক্ষ্মা 
নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সেবা জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাইবার বিষয়ও 
নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ