পুরনো প্রসাধনী থেকে যেসব সংক্রমণ হতে পারে
Published: 23rd, March 2025 GMT
মেগা উই কেয়ারের তথ্য, ত্বকের যত্নের পণ্যে আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত কিনা সেটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। নাহলে আপনার ত্বকে জ্বালাপোড়া, ফুসকুড়ি এবং এমনকি সম্পূর্ণ অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকবে। প্রসাধনীতে প্যারাবেন, এসএলইএস, আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড, সুগন্ধি বা প্রিজারভেটিভের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।– ত্বকের জন্য মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া প্রসাধনী অনেক বেশি ক্ষতিকর। বিস্তারিত জেনে নিন।
চোখের সংক্রমণ: অনেকে চোখের কালোভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য পল্লবে মাশকারা ব্যবহার করনে। এই প্রসাধনী ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এরপর এর উপযোগীতা শেষ হয়ে যায়। কেউ কেউ আবার শুকিয়ে যাওয়া মাশকারা ফেলে না দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আবারও ব্যবহারের চেষ্টা করেন। কিন্তু ৬ মাস পার হওয়ার পরে কোনো মাশকারা ব্যবহারের ফলে চোখে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চোখে সংক্রমণ হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আইলাইনার। দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এতে ছত্রাক পড়ে যেতে পারে। ছত্রাক পড়া আইলাইনার ব্যবহারে চোখে ব্যাক্টেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। চোখের পাতা ফুলে যেতে পারে। একটি আইলাইনার মোটামুটি ছয় মাস পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী থাকে।
আরো পড়ুন:
কখন বুঝবেন রক্তে ইউরিক এসিড বেড়ে গেছে
রোজায় লুজ মোশনের ঝুঁকি এড়াতে করণীয়
মুখের সংক্রমণ: মুখে লালবে আভা ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্লাশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ক্রিম ব্লাশ বা পাউডার ব্লাশ যাইহোক না কেন ব্লাশের মেয়াদ খুব বেশি দিন থাকে না। ব্লাশ ব্যবহারের পরে ত্বকে কোনো অস্বস্তি দেখা দিলে আর ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্লাশ কেনার সময় নির্দেশিকা বুঝে নিয়ে সেটি ফলো করা উচিত।
ত্বকে সংক্রমণ: ফাউন্ডেশন বা মেকআপ ব্যবহার করেন না এমন নারী পাওয়া কঠিন। অনেকে খুব যত্ন করে অনেক দিন পর্যন্ত একটি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে একই ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে।
ঠোঁটে সংক্রমণ: ঠোঁট রাঙানোর জন্য লিপস্টিক ব্যবহার করা হয়। সেটা তরল বা স্টিক হতে পারে। কিন্তু মেয়াদ থাকে ৬ থেকে ৮ মাস। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ঠোঁটে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর ব যবহ র র স ক রমণ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
'দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই'
‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'
নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গ্যালো। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’
লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'
শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে।