কোন দেশে কত বছর বয়সে ভোট দেওয়া ও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যায়
Published: 23rd, March 2025 GMT
জুলাই-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে সম্ভব করে তোলার পেছনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন জেন-জি’রা (জেনারেশন জেড)। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে তাঁদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে এই প্রজন্মের তরুণদের বয়সকে একটি বাধা হিসেবে মনে করছে নতুন আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
জেন-জির প্রতিনিধিত্বকারী দল এনসিপি এ বাধা দূর করতে ভোটাধিকারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ করতে চায়। সেই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব তাদের। আজ রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিতে যাচ্ছে দলটি।
এনসিপি মনে করে, প্রায় সারা বিশ্বে এবারের আন্দোলনকে জেন-জির অভ্যুত্থান হিসেবে বলা হচ্ছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে বাংলাদেশ ও আসন্ন নির্বাচন, সেই নির্বাচনে তারা (জেন-জিরা) মতামত দিতে পারবে না শুধু বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ার কারণে, এটা যৌক্তিক নয়। তাই ১৬ বছর বয়স থেকে ভোটার হওয়ার বিধান রাখার প্রস্তাব দেবে তারা।
আরও পড়ুনজেন–জিদের ভোটার করতে চায় এনসিপি, ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী, ১৬ বছরে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব২২ মার্চ ২০২৫আবার বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। এটি কমিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছর করার প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে এনসিপি মনে করে, এটা খুবই কম বয়স। এটা ২৩ বছর হতে পারে।
এনসিপির এমন প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে কোন দেশে কত বছর বয়সে ভোটার হওয়া ও জাতীয় নির্বাচন করা যায়, সেটি দেখা যাক—
জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই (৮৫ ভাগ) ভোটার হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশ আছে এ তালিকায়। বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপেও ১৮ বছরের আগে কেউ ভোট দিতে পারেন না। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশটিতে ভোটার হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ছিল ১৮। এরপর দেশটিতে এখনো নির্বাচন হয়নি।
আরও পড়ুনভোটারের বয়স ১৬, প্রার্থীর ২৩ বছর করার প্রস্তাব করবে এনসিপি২১ ঘণ্টা আগে১৬ বছর বয়সেও ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে কিছু দেশে। এর মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকার দেশ; যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কিউবা, নিকারাগুয়া। ইউরোপের দেশ হিসেবে প্রথম ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর করেছে অস্ট্রিয়া। কয়েকটি দেশে ভোটাধিকার আছে ১৭ বছর বয়সে। এগুলোর অন্যতম উত্তর কোরিয়া। গ্রিস ও ইন্দোনেশিয়াও আছে এ তালিকায়।তবে ১৬ বছর বয়সেও ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে কিছু দেশে। এর মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকার; যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কিউবা, নিকারাগুয়া। ইউরোপের দেশ হিসেবে প্রথম ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর করেছে অস্ট্রিয়া।
কয়েকটি দেশে ভোটাধিকার আছে ১৭ বছর বয়সে। এগুলোর অন্যতম উত্তর কোরিয়া। গ্রিস ও ইন্দোনেশিয়াও আছে এ তালিকায়। ১৯ বছর বয়সে ভোটাধিকার আছে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে। আবার তাইওয়ান, ক্যামেরুন, বাহরাইন ও নাউরুতে ভোটাধিকার পাওয়ার বয়স ২০ বছর।
আরও পড়ুন২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬–এর প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে: ড.ইউনূস১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ভারত
ভারতীয় আইনবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ল ফোর ইউ’ জানাচ্ছে, ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধানে ভোট দেওয়ার বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ বছর। ১৯৮৮ সালে এক সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সেটি কমিয়ে আনা হয় ১৮ বছরে। মূলত সমাজের এক বড় অংশকে ভোটাধিকারের আওতায় আনতে এ সংশোধনী আনা হয়েছিল।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ১৯৫২ সালে যখন প্রথম লোকসভা ও বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়, তখন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ছিল ২১ বছর। এর ৩৬ বছর পর রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন আইনমন্ত্রী বি শঙ্করানন্দ সংবিধানের ৬১তম সংশোধনী বিল আনেন। বিলে ভোট দেওয়ার এ বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৮ করার প্রস্তাব ছিল। বিলটি লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয় এবং পশ্চিমবঙ্গসহ ২০টি রাজ্য সরকার এটি অনুমোদন করে। এর পর থেকে ভারতে সব ক্ষেত্রে ভোটের বয়স ১৮ বছর।
১৮ বছর বয়সে ভোট দেওয়া গেলেও ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮৪(বি) অনুযায়ী লোকসভা (ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ) নির্বাচনে প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর হতে হবে। আর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার প্রার্থী হতে বয়স হতে হবে কমপক্ষে ৩০ বছর। তবে ২১ বছর বয়সে স্থানীয় সরকারের অধীন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন যেকেউ।
আরও পড়ুনএখন দল গোছানো ও নিবন্ধনের শর্তপূরণে মনোযোগ এনসিপির ১৫ মার্চ ২০২৫পাকিস্তানযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমসের (আইএফইএস) তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে ১৮ বছর বয়স হলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যায়। এ জন্য তাঁর অবশ্যই পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডেটাবেজ ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত ন্যাশনাল আইডি কার্ড (এনআইসি) থাকতে হবে।
ফাউন্ডেশনটির তথ্য বলছে, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ (মজলিস-ই-শুরা) নির্বাচনে প্রার্থী হতে কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে। তবে দেশটির সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইসলামী অনুশাসন ভঙ্গ করেছেন, প্রার্থীর এমন কোনো রেকর্ড থাকতে পারবে না।
আরও পড়ুনজাতীয় নির্বাচনের জন্য কী প্রস্তুতি লাগে ইসির১৪ মার্চ ২০২৫নেপালনেপালে ভোটাধিকার প্রয়োগের বয়স ১৮ বছর। একই বয়সে তরুণেরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে পারেন। তবে প্রাদেশিক ও সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিতে কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে।
ভুটান‘ইলেকশন অ্যাক্ট অব দ্য কিংডম অব ভুটান ২০০৮’–এর তথ্য অনুসারে, ১৮ বছর বয়স হলে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন যে কেউ। নির্বাচনবিষয়ক তথ্যভান্ডার সংরক্ষণ করে ‘দ্য ইলেকটোরাল নলেজ নেটওয়ার্ক’ নামে ভুটানের একটি বেসরকারি সংগঠন (এনজিও)। তাদের তথ্যমতে, ভুটানের জাতীয় পরিষদের নিম্নকক্ষের প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২৫ বছর। উচ্চকক্ষের জন্য সেটি বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়ে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: নির্বাচন কমিশনার মাছউদ১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানবিষয়ক সচেতনতা তৈরির প্ল্যাটফর্ম ‘ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টার’ জানাচ্ছে, দেশটিতে ১৯৭১ সালের আগে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারকে ২১ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। ১৯৭১ সালে ২৬তম সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়। ১৯৭১ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার বয়সসীমা ১৮–তে নামিয়ে আনতে তরুণদের নেতৃত্বে একটি নাগরিক আন্দোলন হয়। আন্দোলনে যুক্তি ছিল, ১৮ বছর বয়স হলে যদি বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে হয়, তবে ভোট দেওয়ার অধিকার নয় কেন। তরুণদের স্লোগান ছিল, ‘ওল্ড এনাফ টু ফাইট, ওল্ড এনাফ টু ভোট’।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট ইউএসএ গভর্নমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে ৩৫ বছর বয়স হতে হবে। আর কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রার্থী হতে কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে।
জাপানজাপানের আইনসভা ‘ডায়েট’–এর নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ জানাচ্ছে, দেশটিতে ১৮ বছর বয়স হলে ভোট দিতে পারেন যেকোনো নাগরিক। ২০১৫ সালের আগে ২০ বছর না হওয়া পর্যন্ত ভোট দেওয়া যেত না। সংবিধানের এক সংশোধনীর মাধ্যমে সেই বয়সসীমা ১৮–তে নিয়ে আসা হয় ২০১৫ সালে।
জাপানের প্রাচীন সংবাদপত্র দ্য মাইনিচির এক নিবন্ধে বলা হয়, দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষের প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা ২৫ বছর। আর উচ্চকক্ষ ‘হাউস অব কাউন্সিলর’–এর প্রার্থী হতে বয়স হতে হয় ৩০ বছর।
পত্রিকাটির তথ্যমতে, ১৮ বছর বয়সে কোনো নাগরিক ভোট দিতে পারলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ২৫ বছর কেন, এমন যুক্তি তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা ঠুকে দেন কিছু তরুণ। তবে সে মামলার রায় কী হয়েছে, তা জানা যায়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ন য নতম বয়স র ন ম নকক ষ ভ ট র হওয় র সরক র র বছর কর বয়সস ম ২৩ বছর ৩০ বছর ২১ বছর কমপক ষ ১৬ বছর ২৫ বছর অন য য় প রথম বছর ক এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
কোন দেশে কত বছর বয়সে ভোট দেওয়া ও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যায়
জুলাই-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে সম্ভব করে তোলার পেছনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন জেন-জি’রা (জেনারেশন জেড)। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে তাঁদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে এই প্রজন্মের তরুণদের বয়সকে একটি বাধা হিসেবে মনে করছে নতুন আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
জেন-জির প্রতিনিধিত্বকারী দল এনসিপি এ বাধা দূর করতে ভোটাধিকারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ করতে চায়। সেই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব তাদের। আজ রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিতে যাচ্ছে দলটি।
এনসিপি মনে করে, প্রায় সারা বিশ্বে এবারের আন্দোলনকে জেন-জির অভ্যুত্থান হিসেবে বলা হচ্ছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে বাংলাদেশ ও আসন্ন নির্বাচন, সেই নির্বাচনে তারা (জেন-জিরা) মতামত দিতে পারবে না শুধু বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ার কারণে, এটা যৌক্তিক নয়। তাই ১৬ বছর বয়স থেকে ভোটার হওয়ার বিধান রাখার প্রস্তাব দেবে তারা।
আরও পড়ুনজেন–জিদের ভোটার করতে চায় এনসিপি, ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী, ১৬ বছরে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব২২ মার্চ ২০২৫আবার বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। এটি কমিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছর করার প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে এনসিপি মনে করে, এটা খুবই কম বয়স। এটা ২৩ বছর হতে পারে।
এনসিপির এমন প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে কোন দেশে কত বছর বয়সে ভোটার হওয়া ও জাতীয় নির্বাচন করা যায়, সেটি দেখা যাক—
জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই (৮৫ ভাগ) ভোটার হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশ আছে এ তালিকায়। বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপেও ১৮ বছরের আগে কেউ ভোট দিতে পারেন না। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশটিতে ভোটার হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ছিল ১৮। এরপর দেশটিতে এখনো নির্বাচন হয়নি।
আরও পড়ুনভোটারের বয়স ১৬, প্রার্থীর ২৩ বছর করার প্রস্তাব করবে এনসিপি২১ ঘণ্টা আগে১৬ বছর বয়সেও ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে কিছু দেশে। এর মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকার দেশ; যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কিউবা, নিকারাগুয়া। ইউরোপের দেশ হিসেবে প্রথম ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর করেছে অস্ট্রিয়া। কয়েকটি দেশে ভোটাধিকার আছে ১৭ বছর বয়সে। এগুলোর অন্যতম উত্তর কোরিয়া। গ্রিস ও ইন্দোনেশিয়াও আছে এ তালিকায়।তবে ১৬ বছর বয়সেও ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে কিছু দেশে। এর মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকার; যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কিউবা, নিকারাগুয়া। ইউরোপের দেশ হিসেবে প্রথম ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর করেছে অস্ট্রিয়া।
কয়েকটি দেশে ভোটাধিকার আছে ১৭ বছর বয়সে। এগুলোর অন্যতম উত্তর কোরিয়া। গ্রিস ও ইন্দোনেশিয়াও আছে এ তালিকায়। ১৯ বছর বয়সে ভোটাধিকার আছে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে। আবার তাইওয়ান, ক্যামেরুন, বাহরাইন ও নাউরুতে ভোটাধিকার পাওয়ার বয়স ২০ বছর।
আরও পড়ুন২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬–এর প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে: ড. ইউনূস১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ভারতভারতীয় আইনবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ল ফোর ইউ’ জানাচ্ছে, ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধানে ভোট দেওয়ার বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ বছর। ১৯৮৮ সালে এক সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সেটি কমিয়ে আনা হয় ১৮ বছরে। মূলত সমাজের এক বড় অংশকে ভোটাধিকারের আওতায় আনতে এ সংশোধনী আনা হয়েছিল।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ১৯৫২ সালে যখন প্রথম লোকসভা ও বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়, তখন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ছিল ২১ বছর। এর ৩৬ বছর পর রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন আইনমন্ত্রী বি শঙ্করানন্দ সংবিধানের ৬১তম সংশোধনী বিল আনেন। বিলে ভোট দেওয়ার এ বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৮ করার প্রস্তাব ছিল। বিলটি লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয় এবং পশ্চিমবঙ্গসহ ২০টি রাজ্য সরকার এটি অনুমোদন করে। এর পর থেকে ভারতে সব ক্ষেত্রে ভোটের বয়স ১৮ বছর।
১৮ বছর বয়সে ভোট দেওয়া গেলেও ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮৪(বি) অনুযায়ী লোকসভা (ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ) নির্বাচনে প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর হতে হবে। আর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার প্রার্থী হতে বয়স হতে হবে কমপক্ষে ৩০ বছর। তবে ২১ বছর বয়সে স্থানীয় সরকারের অধীন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন যেকেউ।
আরও পড়ুনএখন দল গোছানো ও নিবন্ধনের শর্তপূরণে মনোযোগ এনসিপির ১৫ মার্চ ২০২৫পাকিস্তানযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমসের (আইএফইএস) তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে ১৮ বছর বয়স হলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যায়। এ জন্য তাঁর অবশ্যই পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডেটাবেজ ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত ন্যাশনাল আইডি কার্ড (এনআইসি) থাকতে হবে।
ফাউন্ডেশনটির তথ্য বলছে, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ (মজলিস-ই-শুরা) নির্বাচনে প্রার্থী হতে কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে। তবে দেশটির সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইসলামী অনুশাসন ভঙ্গ করেছেন, প্রার্থীর এমন কোনো রেকর্ড থাকতে পারবে না।
আরও পড়ুনজাতীয় নির্বাচনের জন্য কী প্রস্তুতি লাগে ইসির১৪ মার্চ ২০২৫নেপালনেপালে ভোটাধিকার প্রয়োগের বয়স ১৮ বছর। একই বয়সে তরুণেরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে পারেন। তবে প্রাদেশিক ও সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিতে কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে।
ভুটান‘ইলেকশন অ্যাক্ট অব দ্য কিংডম অব ভুটান ২০০৮’–এর তথ্য অনুসারে, ১৮ বছর বয়স হলে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন যে কেউ। নির্বাচনবিষয়ক তথ্যভান্ডার সংরক্ষণ করে ‘দ্য ইলেকটোরাল নলেজ নেটওয়ার্ক’ নামে ভুটানের একটি বেসরকারি সংগঠন (এনজিও)। তাদের তথ্যমতে, ভুটানের জাতীয় পরিষদের নিম্নকক্ষের প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২৫ বছর। উচ্চকক্ষের জন্য সেটি বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়ে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: নির্বাচন কমিশনার মাছউদ১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানবিষয়ক সচেতনতা তৈরির প্ল্যাটফর্ম ‘ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টার’ জানাচ্ছে, দেশটিতে ১৯৭১ সালের আগে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারকে ২১ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। ১৯৭১ সালে ২৬তম সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়। ১৯৭১ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার বয়সসীমা ১৮–তে নামিয়ে আনতে তরুণদের নেতৃত্বে একটি নাগরিক আন্দোলন হয়। আন্দোলনে যুক্তি ছিল, ১৮ বছর বয়স হলে যদি বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে হয়, তবে ভোট দেওয়ার অধিকার নয় কেন। তরুণদের স্লোগান ছিল, ‘ওল্ড এনাফ টু ফাইট, ওল্ড এনাফ টু ভোট’।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট ইউএসএ গভর্নমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে ৩৫ বছর বয়স হতে হবে। আর কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রার্থী হতে কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে।
জাপানজাপানের আইনসভা ‘ডায়েট’–এর নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ জানাচ্ছে, দেশটিতে ১৮ বছর বয়স হলে ভোট দিতে পারেন যেকোনো নাগরিক। ২০১৫ সালের আগে ২০ বছর না হওয়া পর্যন্ত ভোট দেওয়া যেত না। সংবিধানের এক সংশোধনীর মাধ্যমে সেই বয়সসীমা ১৮–তে নিয়ে আসা হয় ২০১৫ সালে।
জাপানের প্রাচীন সংবাদপত্র দ্য মাইনিচির এক নিবন্ধে বলা হয়, দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষের প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা ২৫ বছর। আর উচ্চকক্ষ ‘হাউস অব কাউন্সিলর’–এর প্রার্থী হতে বয়স হতে হয় ৩০ বছর।
পত্রিকাটির তথ্যমতে, ১৮ বছর বয়সে কোনো নাগরিক ভোট দিতে পারলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ২৫ বছর কেন, এমন যুক্তি তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা ঠুকে দেন কিছু তরুণ। তবে সে মামলার রায় কী হয়েছে, তা জানা যায়নি।