ছোট্ট একটি ছাগল। নাম ‘কুরুম্বি’। কালো রঙের। দল বেঁধে ঘুরলেও আলাদা করে নজর কাড়ে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার কুরুম্বিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কুরুম্বি যেনতেন ছাগল নয়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে খাটো ছাগল। 

কুরুম্বির মালিক পিটার লেনু। পেশায় তিনি কৃষক। তাঁর পরিবার পুরোদস্তুর কৃষিজীবী। থাকেন ভারতের কেরালায়। তাঁর খামারে গরু, ছাগলসহ নানা গৃহপালিত প্রাণী রয়েছে। পিটার জানান, ছোটখাটো কুরুম্বি তাঁর খামারের বিশেষ একটি ছাগল। এটি কানাডীয় পিগমি জাতের। 

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, কুরুম্বি বছর চারেকের একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ছাগল। প্রাকৃতিকভাবে জন্মেছে, বেড়ে উঠেছে। তবে প্রাণীটির উচ্চতা মাত্র ১ ফুট ৩ ইঞ্চি বা প্রায় ৪০ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। সেই হিসাবে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে খাটো জীবিত ছাগল।

কানাডীয় পিগমি জাতের ছাগল সাধারণত ছোটখাটো হয়। তবে এ জাতের ছাগলগুলো বেশ মোটাসোটা দেহের অধিকারী। উচ্চতায় ৫৩ সেন্টিমিটারের বেশি খুব একটা হয় না। সেই তুলনায় কুরুম্বির উচ্চতা বেশ কম। ২০২১ সালের কোনো এক সময় পিটারের খামারে ছাগলটির জন্ম।

কুরুম্বির চার মাস বয়সের একটি শাবক রয়েছে। হাসিমুখে পিটার বলেন, কুরুম্বির সংসার ‘বড়’ হচ্ছে। ছাগলটি আবার সন্তানসম্ভবা।

পিটার জানান, নিজে দেখতে ছোটখাটো হলেও কুরুম্বি স্বাভাবিক উচ্চতার প্রাণীদের সঙ্গে চলাফেরা করতে ও খেলতে পছন্দ করে। ৩টি পুরুষ ছাগল, ৯টি স্ত্রী ছাগল আর ১০টি ছাগলছানার সঙ্গে থাকে সে। এ ছাড়া খামারে গরু, হাঁস–মুরগি রয়েছে।

পিটারের খামারে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছিল কুরুম্বি। একদিন খামারে ঘুরতে আসা একজন অতিথি পিটারের কাছ থেকে কুরুম্বির উচ্চতার বিষয়ে জানতে পেরে তাঁকে (পিটার) গিনেস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। বলেন, ছাগলটি কম উচ্চতার জন্য বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারে।

পরামর্শটি পিটারের মনে ধরে। তিনি যোগাযোগ করেন। পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে ছাগলটির উচ্চতা মাপেন, বয়স যাচাই করে আবেদন করেন। এরপর বিস্তারিত যাচাই–বাছাই শেষে কুরুম্বিকে নিয়ে ওয়েবসাইটে প্রতিবেদন করেছে গিনেস কর্তৃপক্ষ।

এখন পিটার বলছেন, তিনি নিয়মিত কুরুম্বির যত্ন নেবেন। সেই সঙ্গে ছাগলটির অনাগত শাবকের উচ্চতা কত হয়, সেটা দেখতে তিনি মুখিয়ে আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ গলট

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়ির ভেতর থেকে আসছিল কান্নার আওয়াজ, সেদিকে তাক করে পরপর গুলি

বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসছিল নারীদের কান্নার আওয়াজ। বাড়ির সীমানার বেড়ার বাইরে লাঠি, বন্দুক ও পাথর হাতে দাঁড়িয়ে একদল লোক। এরপর ওই বাড়িটি লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছোড়া হলো।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় এমন সংঘর্ষের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সোমবার সকালে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ আছেন। লবণের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষ ঘটেছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রুপালি বাজারপাড়া এলাকার হামিদা বেগম (৩২), মো. আমজাদ (২০), আহমদ হোসেন (৪০), জেসমিন আকতার (২৮), মিনা আকতার (৩৫), রিনা আকতার (৩০), বুলু আকতার (৩২), মো. ছৈয়দ (৩৫), আফরোজা বেগম (১৫), মো. ছরওয়ার (২৮) ও বেলাল উদ্দিন (৩২)। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হামিদা, আমজাদ, আহমদ ও জেসমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর মিনা, রিনা ও বুলু আকতারকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, রুপালি বাজারপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে মালেকপাড়ার ফরহাদ ইকবালের সাড়ে ১০ একর লবণের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। আজ সকালে ফরহাদ ইকবালের লোকজন জমিতে কাজ করতে গেলে মিজানুর রহমানের পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মালেকপাড়া থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলা শেষে একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মিজানুর রহমানের ভাই মিনহাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাড়ে ১০ একর জমির মালিক আমরা ৬০ পরিবার। এসব পরিবারকে উচ্ছেদ ও জমি দখল করতে হামলা করা হয়েছে।’

হামলার ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ফরহাদ ইকবালের পক্ষের মো. সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফা অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে গুলি ছুড়ছেন। তাঁরা অন্তত ১০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন। এই দুজনের সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন দা, কিরিচ ও লাঠি হাতে হামলা করেন। হামলাকারীরা সবাই মাস্ক পরা ছিলেন।

অস্ত্রধারী সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফরহাদ ইকবালও ঘটনার পর থেকে পলাতক।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লবণের জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। ভিডিওতে দুটি অস্ত্র দেখা যাচ্ছে। অস্ত্র হাতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ