আফগান তালেবানের প্রভাবশালী নেতা এবং দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানিকে ধরতে তথ্য দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এক কোটি ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে সম্প্রতি এই পুরস্কার প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)-এর ওয়েবসাইটে এখনো হাক্কানির বিষয়ে পুরস্কারের তথ্য মুছে ফেলা হয়নি। সুত্র: আল জাজিরা

সিরাজুদ্দিন হাক্কানি বর্তমানে তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রয়টার্স জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার তালেবান দুই বছর ধরে আটক রাখা মার্কিন নাগরিক জর্জ গ্লেজম্যানকে মুক্তি দেওয়ার পরই হাক্কানির ওপর থেকে পুরস্কার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে পর্যটক হিসেবে গিয়ে তালেবানের হাতে আটক হন গ্লেজম্যান। তার মুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কাতার সরকারের মধ্যস্থতায় ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং এটিকে ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি দেওয়ার ঘটনা তাদের বৈশ্বিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টার অংশ। যদিও ২০২১ সালে তালেবান সরকার ক্ষমতায় ফেরার পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো তাদের সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

সিরাজুদ্দিন হাক্কানির বাবা জালালুদ্দিন হাক্কানি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং কুখ্যাত হাক্কানি নেটওয়ার্ক গঠন করেন। যুক্তরাষ্ট্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করে।

এই গোষ্ঠী আত্মঘাতী হামলা এবং অপহরণের মতো বহু সহিংস ঘটনায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, ২০১৪ সালে মার্কিন সেনা বোয়ে বার্গডাহলসহ বেশ কয়েকজন পশ্চিমা নাগরিককে মুক্তিপণের জন্য আটক রাখার জন্য হাক্কানি নেটওয়ার্ককে দায়ী করা হয়।

এছাড়া, ২০২২ সালে কাবুলে এক ড্রোন হামলায় আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হন। ধারণা করা হয়, তিনি হাক্কানির বাসভবনে অবস্থান করছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পদ্মা ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার ‘টাইম লোন’ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তার অপব্যবহার ও অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মামলার অপর তিন আসামি হলেন, ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম, পরিচালক ফারহানা মোনেম এবং পদ্মা ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান করপোরেট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম।

এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালে পদ্মা ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আবদুল মোনেম লিমিটেডের নামে ছয় মাস মেয়াদি ৫ কোটি টাকার একটি ‘টাইম লোন’ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঋণের শর্ত ভঙ্গ করে এ অর্থ ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার না করে অন্য ঋণের দায় মেটাতে ব্যয় করেন। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আবদুল মোনেম লিমিটেড ২০২২ সালের ২৯ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় একটি শর্ট নোটিশ ডিপোজিট (SND) হিসাব খুলে ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। অথচ এর আগেই ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ২৫ কোটি টাকার কম্পোজিট ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৮৪তম সভায় এ ঋণ অনুমোদন পায়। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ২০ কোটি টাকার এলসি ও ৫ কোটি টাকার টাইম লোনসহ মোট ২৫ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়।

এরপর ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর আরও একবার ৫ কোটি টাকার ছয় মাস মেয়াদি টাইম লোনের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ৫৫তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় (২৭ ডিসেম্বর) তা অনুমোদিত হয় এবং ২৮ ডিসেম্বর তা বিতরণ করা হয়। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, অর্থটি  গুঁড়াদুধ, কাঁচামাল, প্যাকেজিং উপকরণ ও যন্ত্রাংশ কেনার মাধ্যমে আইসক্রিম ইউনিট চালু রাখতে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এই অর্থ অন্য খাতে স্থানান্তর করে অন্য ঋণের দায় পরিশোধে ব্যবহার করা হয়। ঋণের নির্ধারিত পরিশোধের সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের জুন, তবে গ্রাহক তা সময়মতো পরিশোধ করেননি এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।

দুদকের অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনটি সন্দেহজনক নগদ লেনদেনের মাধ্যমে ঋণের অর্থ পরিশোধ করে ঋণটি সমন্বয় করা হয়। এজাহারে আরও বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু না হলে এই অর্থ আত্মসাতের প্রকৃত সম্ভাবনা ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকরি ছেড়ে আখের ব্যবসায় প্রকৌশলী সাহাবুদ্দিন
  • নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • সমর্থকদের গালিগালাজের জেরে বাড়ি ছাড়ছে ফোডেনের পরিবার
  • স্নাতক ও ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা পাবেন উপবৃত্তি, মিলবে ১০,০০০