লিওনেল মেসি, পাওলো দিবালা, লাওতারো মার্তিনেজসহ সেরা একাদশের ছয়জন নেই আর্জেন্টিনা দলে। একই অবস্থা ব্রাজিলেরও। নেইমার তো আগেই ছিটকে গেছেন, কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচে ব্রাজিলের আরও চারজন চোটে পড়েছেন। ফলে আগামী বুধবার বুয়েন্স আইয়ার্সে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল লড়াইয়ে দু’দলের সেরা একাদশের মোট ১১ জনকে দেখা যাবে না।

আর্জেন্টিনা ম্যাচ সামনে রেখে স্কোয়াডে চারটি পরিবর্তন এনেছেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। তাঁর জায়গায় ডাকা হয়েছে ওয়েভেরতনকে। কার্ডের খাড়ায় পড়ায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পাওয়া যাবে না সেন্টারব্যাক গ্যাব্রিয়েল মাগালহাস এবং মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারেসকে। দু’জনই এক ম্যাচ করে নিষিদ্ধ। তাদের জায়গায় পিএসজি ডিফেন্ডার বেরালদো ও উলভস মিডফিল্ডার হোয়াও গোমেজকে ডেকেছেন ব্রাজিল কোচ। এছাড়া কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বাঁ ঊরুতে চোট পাওয়া মিডফিল্ডার গারসনও ছিটকে গেছেন। তাঁর বদলে আটালান্টার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এদেরসনকে ডাকা হয়েছে।

চোট পাওয়া এই চারজনের মধ্যে ব্রাজিল চিন্তিত মূলত গোলকিপার নিয়ে। গত আট বছর ধরে ব্রাজিলের গোলপোস্ট সামলান বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই গোলরক্ষক অ্যালিসন বা এডারসন। কলম্বিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গত চার ম্যাচে গোলপোস্টের নিচে ছিলেন ম্যানসিটির গোলকিপার এডারসন। তিনি চোটে পড়ায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পান লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন। কলম্বিয়ার বিপক্ষে অ্যালিসন চোট পেয়ে ৭৮ মিনিটে উঠে গেলে বাকি সময়টা পোস্টের নিচে ছিলেন বেন্তো। 

তবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আগামী ম্যাচে অভিজ্ঞতার বিচারে ওয়েভেরতনের সেরা একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ২০১৬ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের হয়ে ১০টি ম্যাচ খেলেছেন পালমেইরার্সের এ গোলরক্ষক। আর্সেনাল ডিফেন্ডার মাগালহাস ও নিউক্যাসল মিডফিল্ডার গুইমারেসের অনুপস্থিতিও ভোগাতে পারে ব্রাজিলকে। প্রিমিয়ার লিগে খেলা দু’জনই বর্তমানে নিজের পজিশনে অন্যতম সেরা।

আর্জেন্টিনা অবশ্য মেসি-দিবালাদের অভাব উরুগুয়ের বিপক্ষে খুব বেশি অনুভব করেনি। জুলিয়ান আলভারেজ, থিয়াগো আলমেইদা, গিউলিয়ানো সিমন্স, নিকো গঞ্জালেসরা আক্রমণভাগ ভালোই সামলেছেন। তবে উরুগুয়ের বিপক্ষে লাল কার্ড পাওয়ায় বুধবার ঘরের মাঠে জুভেন্টাস উইঙ্গার নিকো গঞ্জালেসকে পাবেন না লিওনেল স্কালোনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে শ্রমিক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

মাদারীপুরে পৌর শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার নতুন মাদারীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল ওই এলাকার মোফাজ্জেল মুন্সির ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল সন্দেহভাজন যুবলীগ থেকে শ্রমিক দলে যোগ দেওয়া লিটন হাওলাদারকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

সূত্র জানায়, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদারের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা লিটন হাওলাদারকে সম্প্রতি মাদারীপুর পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি করা হয়। এ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সির সঙ্গে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় লিটন হাওলাদারের। লিটন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি চাঁদাবাজি, লুটপাট, হত্যা, সংঘর্ষসহ একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় এ কমিটির বিরোধিতা করেন শাকিল মুন্সি। 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলায় লিটনের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে। তাঁর মামলার জামিন শুনানি ছিল রোববার। সমর্থকদের ধারণা ছিল, মামলায় কারাবন্দি আক্তার হাওলাদার জামিনে মুক্তি পাবেন। তাঁকে বরণ করে নিতে তারা আদালত চত্বরেও জড়ো হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে রোববার দুপুরে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষ ঘটে। বিকেলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। রাত ৯টার দিকে লিটন সমর্থক উপজেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাকিল।

এ ঘটনায় রোববার রাতে শাকিলের লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁর সমর্থকরা। সোমবার বিকেলে জানাজা শেষে তারা কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সেলিম মুন্সি ও হায়দার হাওলাদারের ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

নিহত শাকিলের পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটন হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হাওলাদারসহ বেশ কয়েকজন হামলা করে শাকিলকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিলে সেখানেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শহরে বিক্ষোভ করেন বিএনপি সমর্থকরা।

মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বলেন, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদার। তাঁর এক ভাই জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। আরেক ভাই লিটন যুবলীগ নেতা। তারাই শাকিলকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত হোসেন বলেন, শাকিলকে আওয়ামী লীগের দোসররা খুন করেছে। এ হত্যার সঙ্গে লিটন হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, আলাউদ্দিন নপ্তী ও আকমল হোসেন খান জড়িত।

নিহত শাকিলের ভাই মাদারীপুর পৌর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হাসান মুন্সি বলেন, ‘আমার ভাই শাকিলকে প্রতিপক্ষ লিটন, আল আমিন, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, শাকিল মুন্সি নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ