ব্যাংক আমানত বীমা আইন রহিত করে গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষায় গঠন করা হবে ‘আমানত সুরক্ষা তহবিল’। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক তহবিল গঠন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি পৃথক হিসাবের মাধ্যমে তহবিলটি পরিচালিত হবে। 

‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠিত ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল’ এ জমাকৃত অর্থ আমানত সুরক্ষা তহবিলে (ব্যাংক কোম্পানি) প্রারম্ভিক জমা হিসেবে স্থানান্তরিত হবে। মোট সুরক্ষিত আমানতের আনুপাতিক হারে তহবিলের আকার নির্ধারিত হবে। প্রত্যেক আমানতকারীর জন্য সর্বোচ্চ সুরক্ষা আমানতের পরিমাণ হবে ২ লাখ টাকা। আগামী জুনের আগেই অধ্যাদেশটি জারি করা হবে বলে সূত্র জনিয়েছে।

‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর মাধ্যমে এই তহবিল গঠন করা হবে। দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও আর্থিক খাতের ওপর জনগণের আস্থা বাড়াতে বিদ্যমান ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ রহিত করে ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকার আমানত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক আমানত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে। এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়নও করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পৃথক বিভাগ খোলা হবে।

ইতোমধ্যেই অধ্যাদেশের একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। খসড়ায় বলা হয়েছে, জনগণের আস্থা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কার্যরত ব্যাংক কোম্পানি ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে গৃহীত আমানতের সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন এবং আমানত সুরক্ষা সংক্রান্ত যথাযথ আইনি কাঠামো নির্ধারণের জন্য ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ রহিত করে এর যুগোপযোগী সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধনপূর্বক পুনঃপ্রণয়ন করা প্রয়োজন।

‘আমানত সুরক্ষা’ বলতে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে- কোনো প্রতিষ্ঠান অবসায়নের ক্ষেত্রে এর আমানতকারীদের সুরক্ষিত  আমানত পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান এবং ‘আমানত সুরক্ষা ব্যবস্থা’ মানে আমানত সুরক্ষার জন্য কার্যকরী পদ্ধতি।

তবে সরকারের আমানত, সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আমানত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান-স্বশাসিত সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আমানত, সদস্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত, সদস্য প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক শাখায় সংগৃহীত আমানত; বিদেশি সরকারের আমানত, বিদেশি সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আমানত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আমানত এই অধ্যাদেশের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

অধ্যদেশের খসড়ায় আমানত সুরক্ষা তহবিলের উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- সদস্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বা অন্য কোনো উৎস থেকে নিয়মিতভাবে সংগৃহীত আর্থিক সম্পদ; বার্ষিক প্রিমিয়াম, বিনিয়োগ থেকে আয়; নতুন ব্যাংকের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধনের দশমিক ৫ শতাংশ প্রারম্ভিক জমা ইত্যাদি।

আমানত সুরক্ষা তহবিলের প্রাথমিক কাজ হবে- কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের ক্ষেত্রে সুরক্ষিত আমানত পরিশোধ। তবে প্রদেয় সুরক্ষিত আমানতের মোট পরিমাণের তুলনায় আমানতকারীদের প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কোনক্রমেই বেশি হবে না। সদস্য প্রতিষ্ঠানের গৃহীত ঋণ পরিশোধেও এ অর্থ ব্যয় করা যাবে। এই তহবিল বা এর কোনো অংশ কোনো বিশেষ ঋণের বিপরীতে লিয়েন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে  এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত দায়িত্ব থেকে পৃথক ও স্বাধীন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে ‘আমানত সুরক্ষা বিভাগ’ নামে স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা হবে। বিভাগের নির্বাহী পরিচালক সিইও হিসেবে গণ্য হবেন।  সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিভাগ থেকে জারি করা বিধি-বিধান, নির্দেশনা ও গাইডলাইন অনুসরণ করবে।  

সাত সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। চেয়ারম্যান হবেন গভর্নর। এছাড়া অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব, আমানত সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্নর প্রমুখ এ পর্ষদে থাকবেন।

এছাড়া  ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনে পৃথক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা যাবে। অনুমোদিত পর্ষদ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী শ্রেণিকরণের ভিত্তিতে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে। 

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও আর থ ক পর শ ধ র জন য তহব ল গঠন ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টিনার ‘২০০০’তম গোলে হার উরুগুয়ের

বক্সের বাঁ কোনায় দৌড়ের ওপর উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডারকে কাটালেন হুলিয়ান আলভারেজ। একটু এগিয়েই ঘুরে গেলেন বলটা নিয়ে। থিয়াগো আলমাদা ততক্ষণে উরুগুয়ে বক্সের সামনে। আলভারেজ হোমওয়ার্ক করে আসার মতো করে পাসটা দেন আলমাদাকে।

শরীরে ২৩ বছরের টগবগে রক্ত আর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের রোমাঞ্চকর মন থাকলে যা হয়; আলমাদা দূরের পোস্ট তাক করে কিক নেন। সবাইকে স্থির দর্শক বানিয়ে বলটা বাতাসে ভাসতে ভাসতে আশ্রয় নেয় জালে। মাঠের অন্য প্রান্তে আর্জেন্টিনার পোস্টে দাঁড়ানো এমিলিয়ানো মার্তিনেজ গোলটি দেখে এমনভাবে বাঁ হাত নাড়ছিলেন যেন আগুনে ছ্যাকা খেয়েছেন। উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রসেটের জন্য তাঁর মায়াও লাগছিল বুঝি। সত্যিই চোখ ধাঁধানো এক গোল!

মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে আলমাদার এই গোলই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে। স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত হলো আর্জেন্টিনার। শুধু তাই নয়, দেখা পেয়েছে ২০০০তম গোলেরও। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছে, আলমাদার গোলটি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল।

১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিওনেল স্কালোনির দল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ইকুয়েডর। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ব্রাজিলের বিপক্ষে আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। তার আগে প্রস্তুতিটা একদম খারাপ হলো না স্কালোনির দলের। যদিও আলমাদার গোলটি ছাড়া তেমন আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। চোটের কারণে লিওনেল মেসি, লাওতারো মার্তিনেজ, পাওলা দিবালাদের অনুপস্থিতি তার একপা কারণ। প্রায় ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে উরুগুয়েও তেমন ভালো খেলতে পারেনি। বলার মতো আক্রমণই তৈরি করতে পারেনি মার্সেলো বিয়েলসার দল। তবে আর্জেন্টিনা শেষ বাঁশি বাজার পর ১১ জন নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। যোগ করা সময়ের ৪ মিনিটের মাথায় ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার নিকো গঞ্জালেস।

বিস্তারিত আসছে…।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আর্জেন্টিনার ‘২০০০’তম গোলে হার উরুগুয়ের