আল্লাহভীতিই তাকওয়ার মূলকথা। একজন মুসলিম হিসেবে নবীজি (সা.) হলেন আমাদের একমাত্র আদর্শ। রমজানে আল্লাহর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের দৃষ্টান্ত আমাদের জন্য প্রেরণা বৈকি। কেননা, তিনি ছিলেন সৃষ্টিকুলের মাঝে আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞাত।

নবীজির (সা.) পূর্বাপর যাবতীয় পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তথাপি তিনি রমজানে দীর্ঘ সময় ইবাদতে রাত্রি যাপন করতেন। তার পদযুগল ফুলে উঠত, ফেটে যেত অসহ্য ব্যথায়। আয়েশা সিদ্দিকা (রা.

) অবাক হয়ে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হতে পছন্দ করব না?’ (বুখারি, হাদিস: ৪,৮৩৭)

আরও পড়ুনরোজার নিয়তের বিধান কী১২ মার্চ ২০২৫

রাসুল (সা.) ভীত-নতজানু হয়ে কাঁদতেন, বিপদগ্রস্তের মতো আল্লাহকে ডাকতেন। আব্দুল্লাহ বিন শাখি বলেন, ‘কান্নার ফলে বুকে চাকার মৃদু ধ্বনি নিয়ে আমি নবীজিকে (সা.) নামাজ আদায় করতে দেখেছি।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৯০৪)

 আয়েশা (রা.) এক আশ্চর্য বিষয়ের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘এক রাতে রাসুল (সা.) আমাকে বললেন, ‘আয়েশা, এখন আমি প্রতিপালকের ইবাদতে মগ্ন হব।’ আয়েশা (রা.)  বললেন, ‘আল্লাহর শপথ, আমি নিশ্চয় আপনার নৈকট্য-সান্নিধ্য পছন্দ করি। কিন্তু, সঙ্গে-সঙ্গে পছন্দ করি এমন বিষয়, যা আপনাকে আনন্দ প্রদান করে।’ আয়েশা (রা.)  বলেন, অতঃপর রাসুল (সা.) উঠে গিয়ে পবিত্র হলেন এবং নামাজে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি এত কাঁদলেন যে, তার বুক ভিজে গেল। বা তিনি এতটা কাঁদলেন যে, তার দাঁড়ি সিক্ত হলো। বা তিনি এতটা কাঁদলেন যে, তার সম্মুখস্থ জমিন ভিজে গেল। সময় ঘনালে বেলাল (রা.) নামাজের আজান দিতে গেলেন। তাকে কাঁদতে দেখে বেলাল বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) , কাঁদছেন কেন, আল্লাহ তো আপনার পূর্বাপর সকল পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৬২০)

 রমজান মাসে রাসুল (সা.) যে বিনয় নিয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হতেন, তা সকলের জন্য জীবন্ত এক উদাহরণ। কিন্তু আমরা রমজান সত্ত্বেও ইবাদতের ব্যাপারে অলস ও উদ্যমহীন। অথচ রমজানের মতো বরকতের মাস পেয়েও যে তার পাপ ক্ষমা করাতে পারে নি, তার জন্য ধ্বংসের প্রার্থনা করা হয়েছে জিবরাইল (আ.)-এর তরফ থেকে। (মুসলিম, হাদিস: ২,৫৫১; তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫৪৫)

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ রমজ ন বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাক্ষাৎকারের ২৫ মিনিট আগে আসায় চাকরি হলো না প্রার্থীর

সময়ানুবর্তিতাকে ভালো গুণ হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে চাকরির সাক্ষাৎকারের ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক সময় এই গুণ হিতে বিপরীত হতে পারে। এমন একটি ঘটনা সম্প্রতি পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে, যা বিতর্ক উসকে দিয়েছে।

ওই পোস্টে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক বলেছেন, একজন চাকরিপ্রার্থী নির্দিষ্ট সময়ের আগে সাক্ষাৎকার দিতে আসায় তাঁকে বাদ দিয়েছেন।

ওই ব্যক্তির নাম ম্যাথু প্রিওয়েট। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা রাজ্যে একটি পরিচ্ছন্নতা প্রতিষ্ঠানের মালিক। ঘটনাটি তিনি নিজেই লিংকডইনে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, অফিসের প্রশাসক পদের জন্য একজন চাকরিপ্রার্থী সাক্ষাৎকারের জন্য নির্ধারিত সময়ের ২৫ মিনিট আগে উপস্থিত হয়েছেন। ওই প্রার্থীকে নিয়োগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এটি একটি প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

পোস্টটি আলোচিত হওয়া শুরু করলে এর কারণ ব্যাখ্যা করেন প্রিওয়েট। তিনি বলেন, যদিও চাকরির সাক্ষাৎকারে একটু আগে পৌঁছানো প্রশংসনীয় কাজ। তবে সময়ের অনেক আগে পৌঁছানো দুর্বল সময় ব্যবস্থাপনা বা সামাজিক সচেতনতার অভাবকে ইঙ্গিত দিতে পারে।

প্রিওয়েট ব্যাখ্যা করে বলেন, তাঁর অফিসটি ছোট। ওই প্রার্থী আগেভাগে আসায় তাঁকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। কারণ, তিনি ব্যবসাসংক্রান্ত ফোনকল শুনে ফেলতে পারেন।

প্রিওয়েট জোর দিয়ে বলেন, সাক্ষাৎকারের শিষ্টাচার অনুযায়ী সাধারণত প্রার্থীরা ৫ থেকে ১৫ মিনিট আগে পৌঁছাতে পারেন। তবে এর বেশি হলে তাঁকে অবিবেচক মনে হতে পারে।

ওই ব্যবসায়ীর পোস্টটি দ্রুত ভাইরাল হয়। অনেকেই পক্ষে–বিপক্ষে মতামত দেন। কেউ কেউ তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। তবে অনেকে প্রার্থীর পক্ষও নিয়েছেন।

পোস্টের নিচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘কাজটি ঠিক হয়নি। কী হাস্যকর মূল্যায়ন! তাঁকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। আমি তাঁকে এখনি চাকরি দেব।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘যদি তাঁর একমাত্র পরিবহন বাস হয়ে থাকে, অথবা আসার সময়ের ওপর তাঁর কোনো নিয়ন্ত্রণ না থেকে থাকে? তাহলে তিনি দেরি না করার জন্য যা করার ছিল, তাই করতেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ