চুরির অপবাদ দিয়ে জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে ঘরে আটকে রেখে রাজমিস্ত্রিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিকেলে ২১ জনের নামে জামালপুর থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা।

নির্যাতনের শিকার যুবক মো. মামুন (৩০) শাহবাজপুর ইউনিয়নের গনেশপুর এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। গত বুধবার রাতে শাহবাজপুর পূর্বপাড়া এলাকার হাসমত তালুকদারের বাড়িতে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত মামুনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। তারা হলেন– মো.

ইলিয়াস ও মিজানুর রহমান। তাদের বাড়ি শাহবাজপুর পূর্বপাড়া এলাকায়।

নির্যাতনের ২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, পাকা ঘরের মধ্যে একটি বিছানার ওপর খালি গায়ের এক যুবক। প্রথমে তিন ব্যক্তি তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। যুবকটি হাত দিয়ে লাঠির আঘাত ফেরানোর চেষ্টা করছেন। তখন হাতেই লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। তাঁর পায়ের তলায় পেটানো হচ্ছে। তারপর যুবকটিকে বিছানায় ফেলে পেটানো হচ্ছিল। এর পর আরও দু’জন পিটুনিতে অংশ নেয়। পিটুনির এক পর্যায়ে যুবক বিছানা থেকে নিচে পড়ে যান। এর পর পাঁচ ব্যক্তি একসঙ্গে মেঝেতে ফেলে তাঁকে মারধর করে। এ সময় সেখানে কয়েকজন লোককে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে একজন ভিডিওটি মোবাইলে ধারণ করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি মো. মামুন ওই এলাকার হাসমত তালুকদারের বাড়িতে নির্মাণ কাজ করেন। ওই গৃহকর্তার কাছে নির্মাণ কাজের টাকা পেতেন মামুন। গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে তাঁকে পাওনা টাকা পরিশোধের কথা বলে ওই বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। টাকা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রথমে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে হাসমত ও তাঁর স্বজন চোর অপবাদ দিয়ে প্রথমে বাড়ির বাইরে মারধর করতে থাকে। পরে একটি ঘরের মধ্যে উঠিয়ে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।

জামালপুর সদর উপজেলার নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুরুল হক জানান, প্রথমে ওই দু’জনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। পরে বাড়ির লোকজন মামুনকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তাঁকে ধরে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে পেটানো হয়। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এক পর য য় র অপব দ প রথম ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুত বা রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৩৯ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১১ কোটি ডলার।

গতকাল রোববার এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, এর আগে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার।

প্রবাসীদের পাঠানো আয় আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। গত মার্চ মাসে ৩২৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে; এক মাসের হিসাবে যেকোনো সময়ের চেয়ে এটি বেশি। ফলে ব্যাংকগুলো উদ্বৃত্ত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে। ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনলে আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান এলেই কেবল রিজার্ভ বাড়ে। এতে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ওপর চাপ কমেছে। ডলারের দাম না বেড়ে ১২৩ টাকার মধ্যে আটকে রয়েছে। পাশাপাশি অনেক ব্যাংক এখন গ্রাহকদের চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছে। ফলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ডলার নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। ৮৫ টাকার ডলার বেড়ে ১২৮ টাকা পর্যন্ত ওঠে। সরকার পরিবর্তনের পর নানা উদ্যোগের কারণে প্রবাসী আয় বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ছে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। ২০২২ সালের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছে অনেক ব্যাংক।

২০২৪ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সপ্তাহে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ