Samakal:
2025-03-23@19:49:20 GMT

৮২ বছর বয়সেও লড়াকু রানী হামিদ

Published: 22nd, March 2025 GMT

৮২ বছর বয়সেও লড়াকু রানী হামিদ

দেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ ৮২ বছর বয়সেও খেলে এলেন এশিয়ান জোনাল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ। কেবল তাই নয়, পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকেই শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা শেষ করে দেশে ফেরেন। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে বুদাপেস্টে মহিলা বিভাগে ৮১ পেরোনো রানী হামিদের কাছে হেরেছেন নামি দাবাড়ুরা। এশিয়ান জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপ মূলত দক্ষিণ এশিয়ান জোনের দাবার বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্ট। ওপেন ও নারী দুই বিভাগের চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি বিশ্বকাপ দাবায় খেলার সুযোগ পান। ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বাকি ৬ দেশের দাবাড়ুরা অংশ নিচ্ছেন এ প্রতিযোগিতায়।
সামাজিক সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে পরিবার সামলানোর পাশাপাশি একজন অপরাজেয় দাবা খেলোয়াড় হয়ে ওঠা রানী বাংলাদেশের নারীদের অনুপ্রেরণার এক অনন্য উদাহরণ। বুদাপেস্টে ৪৫তম দাবা অলিম্পিয়াডে ভালো করেনি বাংলাদেশ। তবে আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে আলো ছড়ানো রানী হামিদের দাবা খেলা শুরু সেই ১৯৮৪ থেকে শুরু। দাবার সঙ্গে তাঁর বন্ধনটাও প্রায় ৪০ বছরের। কীভাবে এই খেলার প্রেমে পড়লেন; এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একদিন আমার স্বামী এসে বলল, পেপারে নিউজ দেখলাম। তুমি খেলবা নাকি। আমি তো পুরোপুরি গৃহিণী, চার বাচ্চার মা। কীভাবে কী করি। ও খুব করে বলল। শেষ পর্যন্ত আর চুপ থাকতে পারিনি। সে সময় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা ডা.

আকমল হোসেন ছিলেন আমার প্রতিবেশী এবং ওনার মিসেস ছিলেন আমার ক্লাসফ্রেন্ডের বড় বোন, ওনাদের সঙ্গে বিষয়টি খোলামেলা আলাপ করলাম। এরপর একটা সময় মনে হলো, যাই না একবার, দেখি কী হয়। তারাও খুব সহযোগিতা করলেন। এরপর খেলতে গেলাম। সেই যে শুরু, আর ছাড়তে পারলাম না। তবে আমার বাবাও দাবা খেলতেন। ছোটবেলা থেকে তাঁকে নিয়মিত দাবা খেলতে দেখতাম। তখন দাবা খেলার আমাদের কোনো অনুমতি ছিল না। এটিকে আউটডোর গেমস খেলার কথা বলা হতো। এই বাইরে যাও, দৌড়াও, ফুটবল খেলো, ক্রিকেট খেলো, ব্যাডমিন্টন খেলো। যা ইচ্ছে তাই খেলো, কিন্তু দাবা নয়। তখন এই বিষয়টাও প্রচলিত ছিল, বুড়োরা শুধু দাবা খেলবে, বসে বসে খেলা তো। এখন প্রেক্ষাপট উল্টো। এখন তো বুড়োরা বলে, এটা বাচ্চাদের খেলা। হ্যাঁ, এটি ঠিক, আমি কোনো দিনও আজকের রানী হামিদ হতে পারতাম না, যদি পরিবার থেকে সমর্থন না পেতাম।’ 
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের কথা। তখন এতটা মাতামাতি ছিল না দাবা নিয়ে। তারাও কোনোরকমে খেলে যাচ্ছিলেন। তখন পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দেন রানী হামিদ। সেদিন পুরো হলরুমে তালি পড়ে। দেশ থেকেও অনেক প্রশংসা কুড়ান তিনি। ওই স্মৃতি, ওই দিনটা কখনও ভুলতে পারেন না তিনি। এত কিছুর সঙ্গে ছুটছে বয়সের ঘড়ি। এরই মধ্যে আশিটি বসন্ত পার করেছেন। আর কত দিন দাবার বোর্ডে রাজত্ব করতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শরীর যত দিন চলবে ততদিন। কারণ শরীরের অবস্থা দেখে তো বুঝতে পারছি না। দেখা যাক কী হয়। শরীর ঠিক থাকলে ইনশাআল্লাহ চেষ্টা চালিয়ে যাব। খেলা তো আর ছাড়ছি না। যতক্ষণ শরীর ভালো আছে, চলবে।’
তরুণ যারা, বিশেষ করে মেয়েদের যারা দাবায় আসতে চান কিংবা এই খেলাকে পেশা ও নেশা হিসেবে নিতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে রানী হামিদ বলেন, ‘প্রথমত অভিভাবকদের অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, হারলেই তারা রাগ করে, বকাঝকা করে। এখন তো খুব সহজ হয়ে গেছে খেলাটা। এখন তারা ইন্টারনেটে দেখতে পায়, শিখতে পায়, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যখন খেলে, তাদের খেলা দেখতে পায়। আবার মফস্বলের অনেকে জানেও না কীভাবে খেলতে হয়। যেমন একজন ফেসবুকে লিখেছেন, আমার ছেলে অলিম্পিয়াডে খেলতে চায়। তবে গ্রামে-গঞ্জে দাবা খেলাটা কিন্তু আছে। তারা যখন সংবাদপত্রে দেখে আমরা খেলছি, তখন তাদেরও ইচ্ছা হয়। এই তৃণমূলে জোর দেওয়া দরকার। তবেই আমাদের মেয়েরা আরও সাহসের সঙ্গে দাবায় আসবে। দাবাকে পেশা হিসেবে নেবে।’ v

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

সাবাশ বাংলাদেশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকদিয়ে ঢুকলেই নিতুন কুন্ডুর তৈরি ‘সাবাশ বাংলাদেশ’ ভাস্কর্যটি চোখে পড়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যেসব অকুতোভয় শিক্ষক-ছাত্র প্রাণ উৎসর্গ করেন তাদের স্মৃতিকে চির অম্লান করে রাখার উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় এ ভাস্কর্যটি। ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উদ্যোগে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় ৪০ বর্গফুট জায়গার ওপর ভাস্কর্যটি দাঁড়িয়ে আছে। এতে দু’জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি রয়েছে। একজন রাইফেল উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন আর তাঁর বাম বাহুটি মুষ্টিবদ্ধ করে জাগানো। অন্যজন রাইফেল হাতে দৌড়ের ভঙ্গিতে রয়েছেন। তার পরনে প্যান্ট, মাথায় এলোমেলো চুলের প্রাচুর্য, যা কিনা আধুনিক সভ্যতার প্রতীক। এ দু’জন মুক্তিযোদ্ধার পেছনে ৩৬ ফুট উঁচু একটি দেওয়ালও দাঁড়িয়ে আছে। দেওয়ালের ওপরের দিকে রয়েছে একটি শূন্য বৃত্ত, যা দেখতে সূর্যের মতোই। ভাস্কর্যটির নিচের দিকে ডান ও বাম উভয় পাশে ছয় ফুট বাই পাঁচ ফুট উঁচু দুটি ভিন্ন চিত্র খোদাই করা হয়েছে। ডান দিকের দেওয়ালে রয়েছেন দু’জন যুবক-যুবতী। বাম দিকের দেওয়ালে রয়েছে মায়ের কোলে শিশু, দু’জন যুবতী একজনের হাতে পতাকা। পতাকার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে গেঞ্জি পরা এক কিশোর। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
  • শ্রম ভবনের সামনে বেতনের দাবিতে আন্দোলন, অসুস্থ হয়ে একজনের মৃত্যু
  • কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে খুন—‘অনেক যন্ত্রণা ও কষ্ট দিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে’
  • বদলির পরও যাচ্ছিলেন না বিএমডিএ’র ইডি, বের করা হলো জোর করে
  • যেভাবে ভালো থাকবে এসি
  • ‘ডিভোর্সের পর বাচ্চাদের সঙ্গে ওদের বাবার সম্পর্ক নষ্ট করিনি’
  • ইসরায়েলি হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা নিহত
  • নাফ নদীতে ৩৩ বিজিবি সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার: বিজিবি
  • সাবাশ বাংলাদেশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়