গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিক্ষোভ
Published: 22nd, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় নৃশংস হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলের সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। একই সঙ্গে সংগঠনটি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
আজ শনিবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতা–কর্মীরা এ কথা বলেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তা বাড়ৈয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুহাইল আহমেদ শুভ, দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাস, অর্থ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হারুন অর রশিদ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ইসরায়েল ৪২ দিনের মাথায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে আবারও গাজায় নৃশংস হামলা চালায়। এতে ২০০ শতাধিক শিশুসহ হাজারো মানুষ প্রাণ হারান। হামলায় গাজার ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস হয়ে গেছে। পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এমনকি গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। সেখানকার মানুষ খাবার ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
এ অবস্থায় জাতিসংঘের নিশ্চুপ থাকা এই হত্যা-হামলাকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা–কর্মীরা। সমাবেশে জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলের সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এ সময় সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের মদদে এই যুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছে, এমন অভিযোগ করেন নেতা–কর্মীরা। তাঁরা বলেন, যুদ্ধবাজ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প গাজা খালি করে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে দিতে বলেছেন। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করে ট্রাম্প হামলার নীলনকশা করেন। এর ফলে গাজায় নতুন করে ধারাবাহিক হামলা শুরু হয়েছে।
সমাবেশ শেষে নেতা–কর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি প্রেসক্লাব, পল্টন ঘুরে তোপখানা রোড হয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল কর ম র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই ও গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর দেখা মিলেছে। তবে, তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।
শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। এটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়াম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমির ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী অংশ নেন।
কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, “বৈশাখী শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।”
কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, “প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।”
সুবর্ণা খাতুন নামে এক শিশু বলে, “পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।”
এবারে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, “প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।”
পরিচয় জানতেই ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!’ কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।
নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যুর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, “আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ