নির্বাচনের আকাশে একটা কালো মেঘ দেখা দিয়েছে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, যাঁরা জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করে এই দেশের ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করেছেন, তাঁদের ডেকে নিয়ে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে হবে, তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে।

আজ শনিবার রাজধানীর মালিবাগে একটি রেস্তোরাঁয় ১২–দলীয় জোটের ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মান্না এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ এখন আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার খুবই অবাক লাগে, আওয়ামী লীগের সাহস হয়নি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। তারা রাজনীতির তৎপরতা শুরু করেনি। তারা সমাবেশ করবে, মিছিল করবে সে শক্তি নেই। কিন্তু আমাদের এখানে কিছু মানুষ তাদের নিয়ে এত কথাবার্তা বলা শুরু করেছে, যা নিয়ে পত্রিকা নিউজ করছে। তাদের তৎপরতায় আওয়ামী লীগ এখন আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘প্রথমত বাংলাদেশ সরকারের কাছে বলতে চাই, ব্যক্তিগতভাবে আমি ও আমার দল খুবই উদ্বিগ্ন। সরকারের উচিত, যাঁর যেটা বলা উচিত নয়, যিনি যেটা বলতে পারেন না, তাঁর কথা সম্পর্কে সরকারের একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দেওয়া। আইএসপিআরের কথা বলা উচিত। এমন করে অনধিকার চর্চা করার কোনো দরকার নেই।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে মান্না বলেন, ‘আপনি যাকেই সুযোগ দেবেন বা অন্তর্ভুক্ত করবেন, রাজনীতির মধ্যে বা গণতন্ত্রের মধ্যে, তার মধ্যে যদি কোনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ না থাকে, তাহলে পুরো গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারে। শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হতে পারে, বিশৃঙ্খলা হতে পারে।’

সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘খুবই স্পষ্ট বলি, সরকার যখন মনে করছে, তাদেরকে রাজনীতিতে ব্যান (নিষিদ্ধ) করবে না, তার মানে রাজনীতি করার অনুমতি দেবে। তাহলে আপনাদের গ্যারান্টি দিতে হবে, তারা আমাদের গণতন্ত্রে অনুপ্রবেশ করে গণতন্ত্রের পুরো বাগানটাই নষ্ট করে দেবে না। সরকার যদি দায়িত্ব নিতে পারে, তাহলে বলবে।’

পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার উদাহরণ রয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশেও এই উদাহরণ আছে। তারপরও তাঁর দল এ ধরনের প্রস্তাব দিচ্ছে না। কারণ, সরকার নিজেই এ ব্যাপারে বিরোধিতা করেছে। কিন্তু তারপরও প্রশাসনের মধ্য থেকে যখন বলা হয়, সমঝোতার নির্বাচন করা হবে, তখন সব সংস্কার অচল হয়ে যাবে, নস্যাৎ হয়ে যাবে। এখন যে গণতন্ত্রের মুক্ত ও অবাধ চর্চা হচ্ছে, তা নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের জাল বিছাবে, শক্তি অর্জন করবে।

১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং মুখপাত্র বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য দেন বিএনপির সেলিমা রহমান, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আখতার হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের ফারুক হাসান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) কাজী নাহিদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন ম গণতন ত র র জন ত ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যে নৌকা চলে গেছে, তা ফিরিয়ে আনা যাবে না: আখতার

যে নৌকা ভেঙে বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে, সেই নৌকাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

তিনি বলেছেন, “কোন সাধারণ ঘটনা বা নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিদায় হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের বিদায় হয়েছে। সুতরাং, আমাদের পুনর্জন্ম হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে না। যে নৌকা ভেঙে বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে, সে নৌকাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।”

শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টি ঢাকা মহানগরের আয়োজনে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদ ও জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি ছাত্রপক্ষের

রাজনীতিতে ক্যান্টনমেন্টের হস্তক্ষেপ বাংলাদেশ মেনে নেবে না: হাসনাত

বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মাহিন সরকার, আতিক মুজাহিদ, রফিকুল ইসলাম আইনি, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। 

আখতার হোসেন বলেন, “অনেকে ভালো আওয়ামী লীগের কথা বলেন। আমরা বলি, ‘লোম বাছতে গিয়ে যেমন কম্বল উজাড় হয়ে যায়, তেমনই আওয়ামী লীগের ভালো নেতৃত্ব বাছাই করতে গেলে আওয়ামী লীগ উজাড় হয়ে যাবে।’ আওয়ামী লীগের কোনো ভালো নেতৃত্ব নেই। আওয়ামী লীগ শাপলা, পিলখানা, ২৪ এর গণহত্যাসহ অন্যান্য গণহত্যা চালিয়েছে তার দায় স্বীকার করেনি। সুতরাং তাদের পক্ষে কেউ দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।”

আখতার হোসেন আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই এ দেশের মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ৭১ এর পরে তারা গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিল। এ দেশের মানুষের যে গণতন্ত্র চেয়েছিল, ১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচনে সে গণতন্ত্রের মুখে চুনকালি মেখেছে। আমাদের চোখে সামনে যারা মারা গেছে, তাদের রক্তের শপথ, আমাদের শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে দেব না।”

তিনি বলেন, “অভ্যুত্থানের ৭ মাস হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো বিচারিক কাজ শুরু করেনি। আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে লীগের বিচার শুরু করতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী না, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের নামে কোনো সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক কাজ করতে দেওয়া যাবে না। লীগের নিবন্ধন অল্প সময়ের মধ্যে বাতিল করতে হবে। না হলে ছাত্র-জনতা আবার রাজপথে এসে লড়াই করবে।”

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার যে চার্টার দিয়েছে, আপনারা সে চার্টারে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করুন। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণে বিষয়ে আপনাদের অবস্থান স্পষ্ট করুন।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রনেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে: নুরুল হক
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে ইফতার ও দোয়া মাহফিল
  • ভূরাজনীতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসন করতে চায়: মাহমুদুর রহমান
  • সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে: তারেক রহমান
  • কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই: আমীর খসরু
  • যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান
  • কোনোভাবেই যেন স্বৈরাচার আবার মানুষের কাঁধে চেপে বসতে না পারে: তারেক রহমান
  • যে নৌকা চলে গেছে, তা ফিরিয়ে আনা যাবে না: আখতার
  • হাসিনা পালায় গেছে, গণতন্ত্র আমরা এখনো পাই নাই, ভোটাধিকার পাই নাই: শামা ওবায়েদ