রেকর্ড লভ্যাংশ ঘোষণার পরও গত সপ্তাহে বহুজাতিক কোম্পানি লিনডে বাংলাদেশের শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমেছে। কোম্পানিটি এ সপ্তাহেই নতুন করে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ৪০ টাকা বা ৪০০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে ৪১০ টাকা বা ৪ হাজার ১০০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল কোম্পানিটি।

সব মিলিয়ে ২০২৪ সালের জন্য লিনডে বাংলাদেশ শেয়ারধারীদের জন্য শেয়ারপ্রতি ৪৫০ টাকা বা ৪ হাজার ৫০০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যা এরই মধ্যে বিতরণও করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, এক দশকের মধ্যে গত বছরই কোম্পানিটি সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দিয়েছে। তারপরও গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন ঘটেছে।

ঢাকার বাজারে গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০২ টাকা বা প্রায় ১০ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৪০ টাকা। এর ফলে সপ্তাহ শেষে ঢাকার শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এটি। ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার পরও শেয়ারের এই দরপতনকে অস্বাভাবিক মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা এই দরপতনের যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, এ কোম্পানিকে নিয়ে বাজারে একধরনের গুজব রয়েছে। সেটি হচ্ছে, কোম্পানিটি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। বাজারে এ ধরনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একধরনের অনীহা তৈরি হয়ে থাকতে পারে, যার কারণে ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার পরও শেয়ারের দরপতন হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লিনডে বাংলাদেশকে নিয়ে এ গুজবের পেছনে বড় কারণ এরই মধ্যে কোম্পানিটি তাদের ঝালাইয়ের ব্যবসা বিক্রি করে দিয়েছে। তাই ধীরে ধীরে পুরো ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

গত বছরের মে মাসে কোম্পানিটি জানায়, তারা নিজেদের ওয়েল্ডিং ব্যবসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ইসাব গ্রুপের সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চুক্তি অনুমোদন করেছে। চুক্তির আওতায় লিনডের ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার ৫০১টি শেয়ার হস্তান্তর করা হয়। শেয়ার বিক্রি থেকে কোম্পানিটি যে আয় করেছে তার বড় অংশই লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটি। এ কারণে গত বছরের জন্য রেকর্ড লভ্যাংশ প্রদান করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ব যবস র পরও

এছাড়াও পড়ুন:

দরপতনের ধারায় শেয়ারবাজার

ঊর্ধ্বমুখী ধারায় লেনদেন শুরু হলেও মঙ্গলবারও ফের বড় দরপতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। প্রায় ৬৪ শতাংশ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড দর হারিয়েছে। অন্যদিকে ২৪ শতাংশের দর বেড়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স হারিয়েছে ৩৭ পয়েন্ট। সূচকের এ পতন গত ১২ জানুয়ারির পর বা চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত রোববারও ৩৫ পয়েন্টের বেশি হারায় এ সূচক। দুই দিনে কমেছে ৭৩ পয়েন্ট।
প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ৩৫৭টির কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩০টি দর হারিয়েছে, বেড়েছে ৮৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির দর। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত ৩৭টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৬টির কেনাবেচা হয়েছে। যার মধ্যে ২৪টির দর কমেছে এবং বেড়েছে সাতটির। আইডিএলসি সিকিউরিটিজের এমডি মো. সাইফুদ্দিন বলেন, যখন নতুন করে কোনো আশা থাকে না, তখন বাজার এ ধরনেরই আচরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপ স্থগিত হলেও বস্ত্র খাতের শেয়ার দর হারাচ্ছে। এ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এটি হতে পারে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কাগজ ও ছাপাখানা ছাড়া বাকি সব খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। তুলনামূলক বেশি দর হারিয়েছে বস্ত্র, সিমেন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি, পাট এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি। পাঁচ খাতের লেনদেন হওয়া ৮৩ কোম্পানির মধ্যে ৬৬টির দর হারানোর বিপরীতে মাত্র ৯টির দর বেড়েছে। একক কোম্পানি হিসেবে প্রায় ১০ শতাংশ দর হারিয়ে পতনের শীর্ষে ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ। ৭ শতাংশের বেশি দর হারিয়ে পরের অবস্থানে ছিল সোনারগাঁ টেক্সটাইল, এসকে ট্রিমস, এসকোয়্যার নিট, এসএস স্টিল এবং মিথুন নিটিং।
সার্বিক দরপতনের মধ্যেও ডিএসইতে শেয়ার কেনাবেচা প্রায় ৩২ কোটি টাকা বেড়ে ৪৪৬ কোটি টাকা ছাড়ায়। এর মধ্যে এককভাবে ২৪ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল ম্যারিকো বাংলাদেশ। ২১ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে পরের অবস্থানে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দরপতনের ধারায় শেয়ারবাজার