‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বিএনপি মেনে নেবে না’
Published: 22nd, March 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেছেন, বিএনপি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন মেনে নেবে না।
শনিবার (২২ মার্চ) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ সব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, ‘‘কেউ কেউ এখন সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলছেন। প্রফেসর আলী রিয়াজ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাবনা দিয়েছেন। এই ব্যাপারে বিএনপির ভূমিকা বা অবস্থান খুব পরিষ্কার, বিএনপি এই ধরনের নির্বাচন চায় না।’’
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনা খুবই ‘গণতান্ত্রিক’, বললেন বিএনপি নেতা
যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন মানে আপনি ফ্যাসিস্ট এবং তাদের দোসরদের পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। নেপালে এমন প্রক্রিয়া করার চেষ্টা করেছে কিন্তু দুই বছরে তাদের সরকার ৯ বার পরিবর্তন হয়েছে।’’
ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, ‘‘আজকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। আজকে যারা এই সব কাজ করছেন, এরা রাজনীতিবিদ নয়; এরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত। আপনারা যদি কোথাও এইরকম অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড দেখেন, তাদের প্রতিহত করুন। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাত থেকে আমাদের দল বাঁচাতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেন রঞ্জুর সভাপতিত্বে ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রেজাউল করিম শাহীন প্রমুখ।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
'গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, মনটা ভরি গেইল'
‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'
নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গেইল। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’
লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'
শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে।