সবচেয়ে বেশি ডট করা বোলারকেই একাদশে নিল না বেঙ্গালুরু
Published: 22nd, March 2025 GMT
টি-টোয়েন্টির যুগে এখন ডট বলও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কে কত উইকেট পেলেন, এর চেয়েও মাঝেমধ্যে বেশি আগ্রহের বিষয় হয়ে যায় কে কতগুলো ডট বল করতে পারলেন। ডেথ বোলিংয়ের সময় একটা ডটও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
আইপিএল ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ডট বল সবচেয়ে বেশি করেছেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। এমনকি তালিকার সেরা পাঁচে তিনি ছাড়া আর কোনো পেসারই নেই। তাঁকে এবার দলে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বোলিং ইউনিট খুব একটা ভালো হয় না, এই সমালোচনাও অনেক দিনের। অথচ আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডট বল করা বোলারকে স্কোয়াডে নিয়েও তাঁকে ছাড়াই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বেঙ্গালুরু।
আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৬৭০টি ডট বল করেছেন ভুবনেশ্বর, ওভারপ্রতি তিনি রান দিয়েছেন ৭.
* সব হিসাব এবারের আইপিএলের আগে।
ভুবনেশ্বরের পরই এই তালিকায় আছেন সুনীল নারাইন। ক্যারিবিয়ান এই স্পিনার ১৮০ উইকেট নেওয়ার সঙ্গে ১৬০৫টি ডট বলও করেছেন। তিনে আছেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন— বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলা এই বোলার ১৫৬৩টি ডট বল করেছেন, তারও উইকেট ১৮০টি।
আইপিএলের ইতিহাসে যুজবেন্দ্র চাহালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯২ উইকেট পিয়ূশ চাওলার। ডট বল করার দিক থেকে তিনি আছেন চার নম্বরে— আইপিএলে মোট ১৩৩৭টি বলে কোনো রান দেননি চাওলা। তালিকার পাঁচে আছেন ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরা—১২৬৯টি ডট বল করেছেন তিনি। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি উইকেট যার, সেই চাহাল ডট বল দেওয়ার ক্ষেত্রে আছেন সাত নম্বরে। টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে ১২২৯টি ডট বল করেছেন চাহাল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় সাভারে ট্যানারি শ্রমিকদের বিক্ষোভ, লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
ট্যানারিশিল্পের শ্রমিকদের জন্য পাঁচটি গ্রেডে সরকারঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়িত না হওয়ার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকেরা। ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় চামড়াশিল্প নগরে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে আজ রোববার শ্রমিকেরা এসব কর্মসূচি পালন করেন। সমাবেশ থেকে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়িত না হলে ঈদের পর কর্মবিরতিসহ লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আজ বেলা ১১টার দিকে চামড়াশিল্প নগর বিভিন্ন ট্যানারির শ্রমিকেরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। পরে তাঁরা সেখানে সমাবেশ করেন। সমাবেশে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকসহ বিভিন্ন ট্যানারির শ্রমিক প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
শ্রমিক রঞ্জু মিয়া বলেন, সরকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করছে, কিন্তু মালিকেরা সেই মজুরি দিচ্ছেন না। তাঁরা কোনো ধরনের ভাঙচুর কিংবা সড়ক অবরোধ করতে চান না। ট্যানারি বন্ধ থাকুক, সেটাও চান না। বর্তমানে যে টাকা বেতন পান, সেটা দিয়ে চলা সম্ভব নয়। ন্যূনতম মজুরি যেটা সরকার ঘোষণা করছে, সেটি ন্যায়সংগতভাবে পূরণ করার দাবি জানান তিনি।
শ্রমিক মো. মোস্তফা গাজী বলেন, ‘সরকার মজুরি ঘোষণা করছে। এটা পাওয়ার জন্য আমাদের আন্দোলন কেন করতে হবে? তারপরও আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। আন্দোলনে তারাই আমাদের নামতে বাধ্য করতেছে। যত দিন দাবি আদায় না হবে, তত দিন আমরা আন্দোলন করব। তবে ভাঙচুর বা খারাপ কোনো আন্দোলন আমরা করব না।’
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, সরকার, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে গত বছরের ২১ নভেম্বর ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে সরকার। ২১ নভেম্বর থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখনো সেটি কার্যকর হয়নি।
সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এই শিল্পের স্বার্থে শান্তিপূর্ণভাবে সব দাবি আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ শিল্পে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা মালিক, শ্রমিক, সরকার সবার দায়িত্ব। আমরা লক্ষ করেছি, ট্যানারির মালিকদের অধিকাংশই সরকারঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করতে ইচ্ছুক। কিছু মালিক আছেন, তাঁরা এটি মানতে চাচ্ছেন না। তাঁরা ভুল পথে গিয়ে কারও প্ররোচনায় এই শিল্পে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইলে, এর দায় তাঁদেরই নিতে হবে।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘কারও কারও ব্যবসা ভালো চলছে না। বিভিন্ন অজুহাতে কারখানা বন্ধ করে দিতে চাইছেন। তাঁরা শ্রমিক অসন্তোষের দোষ দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেউলিয়া হওয়ার পাঁয়তারা করছেন—এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এ সুযোগ আমরা তাঁদের দেব না। এ ছাড়া কোরবানির ঈদে শ্রমিকেরা ছুটি পান না। তাই ঈদুল ফিতরে পরিবারের সঙ্গে যেন শ্রমিকেরা কাটাতে পারেন এবং মজুরি প্রদানে আন্তরিক কারখানাগুলোকে ঈদের আগে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি করছি। দাবি আদায় না হলে ঈদের পর শ্রমিকদের নিয়ে বসে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ট্যানারিশিল্পের শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মজুরিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ট্যানারি বা চামড়াশিল্প খাতের নতুন মজুরিকাঠামোতে সর্বোচ্চ বা প্রথম গ্রেডে আছেন স্কিন সিলেক্টর বা হ্যান্ড মেজারার, বৈদ্যুতিক ও মেশিন মেরামত মিস্ত্রি, হ্যান্ড ফ্রেশারম্যান, বয়লার অপারেটরসহ ১৩ ধরনের শ্রমিক। বিভাগীয় শহর ও সাভারে এই গ্রেডের শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ১৬৮ টাকা, যা ২০১৮ সালে ছিল ২৫ হাজার ৪০০ টাকা। বিভাগীয় শহর ও সাভার এলাকার ট্যানারি শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি বাড়িয়ে দ্বিতীয় গ্রেডে ২৮ হাজার ৩৮৮ টাকা; তৃতীয় গ্রেডে ২৪ হাজার ২ টাকা ও চতুর্থ গ্রেডে ২০ হাজার ৯৯৩ টাকা করা হয়েছে। এই চার গ্রেডের বাইরে অদক্ষ সাধারণ ও অন্য শ্রমিকেরা রয়েছেন সর্বশেষ বা পঞ্চম গ্রেডে। এই গ্রেডের নিম্নতম মজুরি বিভাগীয় শহর ও সাভারে ১৮ হাজার ১ টাকা ও অন্যান্য এলাকায় ১৭ হাজার ৪৮ টাকা।