মাগুরার শিশুটির বড় বোনকে আর শ্বশুরবাড়ি পাঠাবে না পরিবার
Published: 22nd, March 2025 GMT
ধর্ষণ ও হত্যার শিকার মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের আট বছরের শিশু আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার তার বড় মেয়ে হামিদা খাতুনকে আর শশুর বাড়িতে যেতে দেবেন না। এ ব্যাপারে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন সবাই একমত হয়েছেন। হামিদার স্বামী ধর্ষক হিটু শেখের কারণে এক মেয়েকে হারিয়ে তিনি শোকের সাগরে ভাসছেন। এখন বড় মেয়েকে হারাতে চান না।
নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য-সহযোগিতা এলেও মনের মধ্যে তার শান্তি নেই আয়েশার। দুইদিন আগে তার প্রতিবন্ধী স্বামী ফেরদৌস শেখকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বড় মেয়ে হামিদা ও ছোট দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে এখন বাড়িতে দিন কাটছে তার।
হামিদার মায়ের বাড়ি উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে। শনিবার দুপুরে সরেজমিন বাড়িতে দেখা যায়, এখনও তাদের শোক কাটেনি। কথা প্রসঙ্গে আছিয়ার মা জানান, এসএসসির গণ্ডি পার হওয়ার আগেই বড় মেয়ে হামিদাকে মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালি গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়। মেজ মেয়ে হাবিবা খাতুন জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। একই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো আছিয়া। আর আল-আমিন নামে দেড় বছরের ছেলে রয়েছে।
তিনি জানান, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামী ফেরদৌস শেখ মানসিক প্রতিবন্ধী। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। এক সময় উপার্জনের ভ্যানটিও চুরি হয়ে যায়। পরে এনজিও থেকে লোন নিয়ে আবারও ভ্যান কেনেন। তবে নিজের চিকিৎসার জন্য সেই ভ্যানটি বিক্রি করে দিতে হয়। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তিন লাখ টাকা লোন নেন। এ টাকা হামিদার বিয়েসহ ও সংসারের খরচ চালাতে গিয়ে শেষ হয়ে যায়। বাড়িতে বসবাসের মাত্র ৭ শতক জমিই তাদের সম্বল। বসতঘরটিও সরকারের দেওয়া।
গত ৬ মার্চ বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় আছিয়া। আট দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শেষ পর্যন্ত ১৩ মার্চ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে সে মারা যায়। ঘটনার পর থেকেই আরও অসহায় হয়ে পড়ে শিশুটির পরিবার। আছিয়ার মা আর্তনাদ করে বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। যারা আমার সন্তানকে কষ্ট দিয়ে মেরেছে আমি তাদের তাদের ফাঁসি চাই।’
মাগুরার জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম ও শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখি ব্যানার্জি সরকারিভাবে সবসময় খোঁজ খবর নিচ্ছেন। টাকা-পয়সাও দিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও জামা-কাপড়, খাদ্যসামগ্রীসহ উপহার এসেছে। জামায়াত-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সহায়তা পাঠিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কষ্টার্জিত জয়ে রিয়ালের চেয়ে ৭ পয়েন্ট এগিয়ে বার্সেলোনা
লা লিগায় কষ্টার্জিত এক জয় তুলে নিয়ে শিরোপার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। শনিবার রাতে লেগানেসের মাঠে স্বাগতিকদের আত্মঘাতী গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে কাতালানরা। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। ১২ ম্যাচে অপরাজিত থাকা বার্সার পয়েন্ট এখন ৭০। তাদের চেয়ে ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে রিয়াল এখনও তাদের চলতি রাউন্ডের ম্যাচ খেলেনি।
লেগানেসের বিপক্ষে ম্যাচটি সহজ ছিল না বার্সার জন্য। প্রথমার্ধে উভয় দলই গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ফলাফল শূন্যই ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের দেখা পায় বার্সেলোনা। ৪৮ মিনিটে রাফিনহার ক্রস রবার্ট লেভান্ডোভস্কির উদ্দেশে হলেও বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তা নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দেন লেগানেস ডিফেন্ডার জর্জ সাএন্স।
এরপর লেগানেস একাধিকবার ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেনি। একবার গোল পেয়েও তা বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। বার্সাও আরও একটি গোলের সুযোগ তৈরি করে, তবে লামিন ইয়ামাল শেষ মুহূর্তে লক্ষ্যভ্রষ্ট হন।
ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ হানসি ফ্লিক বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন ম্যাচ ছিল, কিন্তু জয়টা দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। গত কিছু সপ্তাহে খেলোয়াড়রা যেভাবে খেলছে, তাতে আমি গর্বিত। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে, কিন্তু তিন পয়েন্টই সবচেয়ে বড় ব্যাপার।’
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত বার্সেলোনা আগামী মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে খেলবে। প্রথম লেগে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছিল ফ্লিকের দল। অন্যদিকে, অবনমনের শঙ্কায় থাকা লেগানেস ২৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।