আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা হবে বেইমানি: চরমোনাই পীর
Published: 22nd, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এখনই ফ্যাসিবাদী দলকে পুনর্বাসন করার অপচেষ্টা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।
আজ শনিবার ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আমেলার নিয়মিত বৈঠকে সৌদি আরব থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।
চরমোনাই পীর বলেন, বিচারের আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের আলাপ অনৈতিক। এই ধরনের আলাপ-আলোচনা দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করেছে তার দায় কেবল ব্যক্তি ও ব্যক্তিদের ওপরে চাপিয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর মাধ্যমে গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। আর কোনো ফ্যাসিবাদ যাতে জন্মাতে না পারে, সে জন্য দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণ্য করে না জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে করণীয় নীতি-আদর্শ আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
দলের নিয়মিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইমতেয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব আহমাদ আব্দুল কাউয়ুম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ, লোকমান হোসেন জাফরি, এ বি এম জাকারিয়া, শওকত আলী, কেফায়েত উল্লাহ কাশফি, নুরুল করীম আকরাম, খলিলুর রহমান, হারুনুর রশিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, হাসিবুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, আল মুহাম্মাদ ইকবাল, জি এম রুহুল আমীন, হেমায়েতুল্লাহ, রেজাউল করীম আবরার, শামসুদ্দোহা আশরাফি, নাছির উদ্দিন ও শেখ মুহাম্মাদ নুরুন নাবী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চরম ন ই প র ল কর ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে: চিফ প্রসিকিউটর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় ছয়টি লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি রবিবার (২৩ মার্চ) এ কথা জানান।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “একটি মামলার (আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর) তদন্ত রিপোর্ট আমাদের হাতে চলে এসেছে। এছাড়া বাকি তিন থেকে চারটি মামলার তদন্ত ফিনিশিং টাচ চলছে। আশা করি ঈদের পর-পরই এই রিপোর্টগুলো আমাদের হাতে চলে আসবে। রিপোর্টগুলো আসার সাথে সাথেই আমরা পর্যালোচনা করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে ফেলব। চার্জ গঠনের মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হবে।”
আরো পড়ুন:
সুলতানি আমলের মতো ঈদ মিছিল হবে ঢাকায়: আসিফ মাহমুদ
চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌপথে ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন সোমবার
লাশ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনার বিষয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, “৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।”
এদিকে, লাশ পোড়ানোর ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ মামলায় সাইফুল ইসলাম পলাতক থাকলেও ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক এবং কনস্টেবল মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের এক রায়কে কেন্দ্র করে ফুসে উঠে ছাত্র জনতা। এ আন্দোলন নির্মূলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে হত্যা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। টানা ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়। আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ঢাকা/মামুন/সাইফ