উড়োজাহাজযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পোষা কুকুর হত্যা করলেন মার্কিন নারী
Published: 22nd, March 2025 GMT
উড়োজাহাজে নিজের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নিজের ৯ বছরের পোষা কুকুরকে ডুবিয়ে মেরেছেন এক মার্কিন নারী। কুকুরটি নিয়ে যাত্রায় বিপত্তি দেখা দেওয়ায় অবলা প্রাণীটির প্রাণই কেড়ে নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওরল্যান্ডো শহরে এমন এক অপরাধে শাস্তিও পেয়েছেন ওই নারী।
স্থানীয় সময় গত বুধবার প্রাণীকে গুরুতর নির্যাতনের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই নারীকে। পরে তিনি প্রায় ৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা (৫ হাজার ডলার) জরিমানা দিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
একটি নিষ্পাপ প্রাণীকে এভাবে হত্যার অভিযোগ ওঠা ওই নারীর পক্ষে আদালতের নথিতে কোনো আইনজীবীকে লড়তে দেখা যায়নি। পুলিশ জানায়, ওই নারী ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি অবুঝ প্রাণীকে হত্যা করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ডিসেম্বরে ওরল্যান্ডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাথরুমে ময়লার ঝুড়িতে ৯ বছর বয়সী স্নাউজার প্রজাতির একটি কুকুরের মরদেহ পান বিমানবন্দরের এক কর্মচারী।
একই সঙ্গে কুকুরটির মালিকের তথ্যসংবলিত একটি পরিচয় ট্যাগও পেয়েছিলেন বলে জানান তাঁরা। এরপর অনুসন্ধান চালিয়ে এ হত্যার তথ্য পান শহরের পুলিশ সদস্যরা।
কুকুরটির শরীরে স্থাপন করা মাইক্রোচিপের মাধ্যমে এর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান তাঁরা। পরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে টারউইন নামের কুকুরটিকে ডুবিয়ে মারার তথ্য উঠে আসে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত বছর বিমানে ভ্রমণের সময় তাঁর কাগজপত্রে কিছু জটিলতার কারণে ৯ বছর বয়সী পোষা কুকুর ‘টারউইনকে’ নিয়ে তাঁর যাত্রায় বাধার সৃষ্টি হয়।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, কুকুরটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় তাকে বিমানে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। মূলত মার্কিন কৃষি বিভাগের বিধি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কলম্বিয়ায় নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই কুকুরের একজন পশুচিকিৎসকের অনুমোদিত স্বাস্থ্যসনদ ও রেবিস টিকার সনদ থাকতে হয়। এসব কাগজপত্র না থাকার কারণেই কুকুরটি নিয়ে ভ্রমণে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছিল।
এরপরই ওই নারী এ অপরাধ করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিমানবন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরায় এ ঘটনা ধরা পড়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, লাতাম এয়ারলাইনসের এক এজেন্টের সঙ্গে ১৫ মিনিট ধরে কথা বলছেন ওই নারী। এ সময় টারউইন তাঁর সঙ্গেই ছিল। এরপর কুকুরটিকে নিয়ে তিনি টিকিটিং অঞ্চলের কাছে একটি বাথরুমে প্রবেশ করেন। তবে ২০ মিনিটেরও কম সময় পর টাইউইনকে ছাড়াই বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসেন।
এ সময় এক কর্মচারী বাথরুমে ওই নারীকে তড়িঘড়ি করে পানি ও কুকুরের খাবার পরিষ্কার করতে দেখেছেন বলেও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে। ওই কর্মচারীই ২০ মিনিট পর বাথরুমের ময়লার ঝুড়িতে টারউইনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছিলেন।
ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, কলম্বিয়ার বোগোতার উদ্দেশে একটি ফ্লাইটে উঠেছিলেন ওই নারী, পরে ইকুয়েডরে যাত্রা করেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট দিয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
প্রথমে রক্ত পরীক্ষা, এরপর ডোপ টেস্ট। এতে উত্তীর্ণ হয়েই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ভর্তি হচ্ছেন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নিতে এসে কারও মুখে উচ্ছ্বাস, কারও চোখেমুখে কিছুটা আতঙ্ক। নতুন পরিবেশে এত নিয়মকানুন-সবকিছু যেন অভিজ্ঞতার ভান্ডারে নতুন এক অধ্যায়।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়েছে স্নাতক প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি কার্যক্রম। চলবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। আজ ডাকা হয়েছে ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১ থেকে ৫০০তম শিক্ষার্থীকে।
ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ জানা থাকে না। সে জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন সঞ্চালন রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পরীক্ষা করছে। এরপর ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে এবং তাৎক্ষণিক ফলাফল জানানো হচ্ছে। ডোপ টেস্ট নেগেটিভ হলে শিক্ষার্থী পরবর্তী ধাপে যাচ্ছেন। পজিটিভ হলে তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের আওতায় আনা হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে মাদকবিরোধী বার্তা।’
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট চালু হয়। এবার চলছে ষষ্ঠবারের মতো। এর আগে, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকেই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে চলছে কার্যক্রম।
ডোপ টেস্ট কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নারায়ণ সাহা বলেন, ডোপ টেস্টে পাঁচটি ক্যাটাগরি রয়েছে, স্লিপিং পিল (বেনজুডায়াজিপাইন), ইয়াবা (অ্যাম্পিটামিন), হেরোইন (অপিয়াস), গাঁজা (মারিজুয়ানা) ও অ্যালকোহল। স্লিপিং পিল চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা হলে তা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত হলে কাউন্সেলিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে পাঠানো হবে পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ পদ্ধতিতে। ভর্তি কার্যক্রমে রয়েছে সাতটি ধাপ—রক্ত পরীক্ষা, ডোপ টেস্ট, স্বাক্ষর যাচাই, তথ্য যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি ফি প্রদান, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন যাচাই এবং হল সংযুক্তিসহ আবাসন আবেদন।
এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। খুলনা থেকে ছেলেকে ভর্তি করাতে আসা আবদুল আউয়াল বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। আমরা দূরে থাকলেও সন্তানের মনে থাকবে যে মাদক খারাপ জিনিস। এমন নিয়ম চাকরির ক্ষেত্রেও থাকা উচিত।’
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হওয়া মুয়াজ বিন ওমর বলেন, ‘স্বপ্নের বিভাগে ভর্তি হতে পেরে দারুণ লাগছে। ভর্তির প্রক্রিয়াটাও ছিল ঝামেলামুক্ত।’
ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইট অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম। এদিন ৫০১ থেকে ৯৫৫তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে। একই দিনে স্থাপত্য বিভাগে ১ থেকে ৩০তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে।
ভর্তির তারিখ ও ফি পরিবর্তন
১৭ এপ্রিলের ‘বি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে পরিবর্তন করে ২২ এপ্রিল পুননির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রথম বর্ষের ভর্তি ফি ১৭ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৪ হাজার ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চার বছর গুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এবার কোটাসহ ২৮টি বিভাগে মোট আসন ১ হাজার ৬৭১টি।