বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছুড়ে পতিত ফ্যাসিস্টকে সহযোগিতা করা হচ্ছে: বাংলাদেশ জাসদ
Published: 22nd, March 2025 GMT
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। তিনি বলেন, বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছুড়ে পতিত ফ্যাসিস্টকেই সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে কথাগুলো বলেন নাজমুল হক প্রধান। ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নারীর প্রতি সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদ এবং দ্রুত খুনি–লুটেরাদের বিচার ও নির্বাচনের’ দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন; কিন্তু বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছুড়ে দিয়ে যাঁরা রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত করছেন, তাঁরা মূলত পতিত ফ্যাসিস্টকেই সহযোগিতা করছেন। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রের রাস্তায় উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করছেন।
নাজমুল হক প্রধান বলেন, মানুষকে বাজারভীতিতে পেয়ে বসেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। নারীর প্রতি সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। ‘মব জাস্টিসের’ নামে লুটপাট হচ্ছে। লুটেরা–খুনিদের বিচার এখন সময়ের দাবি। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি।
সমাবেশে জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন বলেন, আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করতে না পারলে ভবিষ্যতে মানুষ রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাবে। নারীরা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আজ তাঁদের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের পাঁয়তারা চলছে।
সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ জাসদ একটি মিছিল নিয়ে রাজধানীর পল্টন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে মিছিলটি দলের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি আব্দুস সালাম খোকনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের হাওলাদার, করিম সিকদার, রোকনুজ্জামান রোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোকসেদুর রহমান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডে ভাটা
গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভেঙে পড়েছিল পুলিশি ব্যবস্থা। নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারকে পড়তে হয় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে। এখনও পুরো স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারেনি পুলিশ। আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বাহিনীটিকে। এমন পরিস্থিতিতেও বন্ধ আছে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম। ওপেন হাউস ডে ও উঠান বৈঠকের মতো কার্যক্রম সেভাবে দৃশ্যমান নয়। ফলে পুলিশের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব বেড়েছে। জনগণ-পুলিশ ইতিবাচক সম্পৃক্ততার কর্মকাণ্ডে ভাটা দেখা দিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জনগণের সঙ্গে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের সম্পর্ক আরও সহযোগিতামূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশিষ্টজন। তারা বিস্তৃত পরিসরে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চালু করার কথা বলছেন। জনতার সঙ্গে পুলিশের ভঙ্গুর সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে এসব কার্যক্রম ভালো ফল আনতে পারে বলে মনে করছেন তারা। পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশেও জনমুখী ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আইনি কাঠামোর কথাও বলা হয়েছে।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই হয়তো কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিগুলো স্তিমিত হয়ে আছে। এগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এখন রাজনৈতিক নেতারা আগের মতো তৎপর নেই; ওয়ার্ড পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি নেই। তাই সামাজিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সমাজে যাদের মতামতের গুরুত্ব আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এটি শুধু এখনকার জন্য নয়, সব সময়ের জন্যই দরকার। আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করার জন্য এটি জরুরি।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে পুলিশের সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং ও ওপেন হাউস ডে চালু করা হয়। পুলিশ এখন নৈতিক ও মনোবল সংকটের মধ্যে আছে, আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধা ও প্রশ্নের মুখে পড়ছে, শারীরিক ও মানসিক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পুলিশের কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রম যত বাড়ানো যাবে, মানুষের সঙ্গে সংযোগ বা সম্পর্কের জায়গাটা তত বেশি আস্থা-বিশ্বাসের হবে। এলাকাভিত্তিক অপরাধীরা কোণঠাসা থাকবে। পুলিশ সম্পর্কে মানুষের যে ভুল ধারণা, তা দূর হবে।
পুলিশ সদরদপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর সমকালকে বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের আগের যে কমিটিগুলো ছিল, সেগুলো এখন নেই। তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান। পুলিশ সদস্যরা ওপেন হাউস ডে, উঠান বৈঠক, গাড়িচালক ও হেলপারদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। ভবিষ্যতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আরও সংগঠিতভাবে পুলিশিংয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলসহ আবাসিক এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাইরে বেসরকারি কর্মীদের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগের কথা জানায় ডিএমপি। তবে এই সিদ্ধান্ত খুব বেশি সাড়া ফেলেনি। আবার কিছুদিন ধরে সিটিজেন ফোরামের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত তৈরির চেষ্টা করছে পুলিশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের সমাজভিত্তিক কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক ভালো হলে কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে জনগণই বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
জনমুখী ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবেও বেশ কিছু বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। এতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধরন ও বিস্তৃতি কেমন হতে পারে, সে ব্যাপারে আছে কিছু পরামর্শ। বলা হয়েছে, জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের পরিসর বাড়ানো প্রয়োজন। একে কার্যকর করে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ ব্যবস্থা করে জবাবদিহি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা সারিয়ে তুলতে কমিউনিটি পুলিশিং টেকসই ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারে। সমাজের সৎ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিগত সরকারের দমনপীড়নের হাতিয়ার হয়ে ওঠায় তাদের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে মানুষের। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কমিউনিটিভিত্তিক বা জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন বিশিষ্টজন। বর্তমানে সীমিত মাত্রায় ওপেন হাউস ডে ও উঠান বৈঠকের মতো কর্মসূচি চলমান থাকার কথা বলা হলেও সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ঢাকা মহানগরেই এসব কর্মকাণ্ড তেমন দৃশ্যমান নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মতো কর্মসূচি আবার চালু করলে পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সেতুবন্ধন দৃঢ় হবে। এলাকাভিত্তিক অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া সহজ হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আরও স্বচ্ছন্দ হতে পারবে পুলিশ। তবে এটি করতে গিয়ে অতীতের মতো ঢালাওভাবে কারও ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেবে। কাউকে অভিযুক্ত করার ভয় দেখিয়ে সুবিধা আদায় বা কোনো কিছু করতে বাধ্য করার ঘটনা অতীতে ঘটেছে। এ কারণে এই ব্যবস্থাকে যথাযথ নজরদারির আওতায় রাখতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষমতার পালাবদলের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতেই পুলিশের হিমশিম অবস্থা। তাই কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি পুনর্গঠন বা সক্রিয় করার দিকে মনোযোগ দেওয়া যায়নি। আগের কমিটিগুলো এখন কার্যকর নেই। নতুন করে কমিটি গঠনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। শোনা যাচ্ছে, আগের মতো না হয়ে কিছুটা নতুন আঙ্গিকে কমিটি হতে পারে। এখন সারাদেশে নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে পুলিশের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। আগামী পুলিশ সপ্তাহে নাগরিকদের নিয়ে একটি আয়োজন রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
জনসম্পৃক্ত পুলিশ গড়তে ১৯৯৩ সালে ময়মনসিংহে এবং পরের বছর ঢাকার দুটি থানায় কমিউনিটি পুলিশিং চালু হয়। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় পুলিশ সংস্কার কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে এই কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে বিভিন্ন এলাকাকে ‘বিট’ হিসেবে ভাগ করে চালু হয় বিট পুলিশিং। প্রতিটি বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতেন। জনসচেতনতা বাড়াতে উঠান বৈঠকের মতো কর্মসূচি নিতেন। তাদের তদারক করতেন থানার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির বড় কর্মপরিধি ছিল ঢাকা মহানগরে। ৫০টি থানার পুলিশকে সহায়তা করতেন কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যরা। এখন তাদের কার্যক্রম নেই। তবে ঢাকাসহ সারাদেশেই নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সমকালকে বলেন, ঢাকায় আমরা সিটিজেন ফোরাম বা নাগরিক কমিটি গঠন করেছি। তারা আমাদের নানা পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন। সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তারা কমিটিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়া সহায়ক পুলিশরাও অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখবেন।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়, কমিউনিটি পুলিশিংকে আগে কেবল অপরাধ দমনের কৌশল হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখা হতো। তবে সুনির্দিষ্টভাবে ছাত্রদের সমন্বয়ে এ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। যুক্তরাজ্য, ভারতসহ অনেক দেশে ছাত্রদের মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশিং পদ্ধতি চালু আছে। এ ছাড়া দেশে বিভিন্ন অফিস ও বাড়িতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী আছেন। তাদের পদ্ধতিগত কাঠামোর মাধ্যমে জনসম্পৃক্ত কাজে যুক্ত করলে নিরাপত্তা সুসংহত হবে। দেশে গ্রাম আদালত ও চৌকিদারি ব্যবস্থা বিদ্যমান। স্থানীয় ব্যবস্থাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে অপরাধ দমন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থার জন্য বাজেট বরাদ্দেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমানে পুলিশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন নতুন মুখ। অনেক এলাকায় অপরাধের তথ্য পুলিশ সময়মতো পায় না। কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থা কার্যকর হলে দ্রুত নাগরিকদের কাছ থেকে অপরাধের তথ্য পাওয়া যাবে। আবার অনেক জায়গায় অপরাধীকে ধরতে গিয়ে ‘মব ভায়োলেন্সের’ মুখোমুখি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্ততা আরও জোরদার হলে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জনগণই বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কমিটিতে যাতে মাদক কারবারিসহ বিতর্কিত লোকজন যুক্ত না হতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলো সমাজে ভুল বার্তা যাবে।
সরেজমিন যা দেখা গেল
রাজধানীর কয়েকটি থানা ঘুরে কমিউনিটি পুলিশিং, ওপেন হাউস ডে ও উঠান বৈঠক নামে কোনো কার্যক্রম চলমান থাকার তথ্য মেলেনি। কিছু ক্ষেত্রে নতুন করে গঠিত হয়েছে সিটিজেন ফোরাম বা নাগরিক কমিটি। এর মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। তাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা হচ্ছে। সেই সঙ্গে থানা এলাকার বিভিন্ন বিটে আলাদাভাবে বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। এর বাইরে মসজিদে গিয়ে, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন, সহযোগিতা চাচ্ছেন।
সম্প্রতি হাতিরঝিল থানায় গিয়ে দেখা যায়, ডিউটি অফিসারের কক্ষের সামনে কয়েকজন নারী দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তারা বিরোধ-সংক্রান্ত একটি সমস্যা সমাধানে পুলিশের সহায়তা চাইতে এসেছেন। তারা জানান, পুলিশের সেবায় পরিবর্তন এসেছে। কেউ থানায় এলে পুলিশ তাঁর বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনছে; দ্রুত সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে।
হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে নানারকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে সিটিজেন ফোরাম গঠন করা হয়েছে। তাদের নিয়ে দুই মাস আগে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত প্রায় ৫০০ জনের মধ্যে ফুটপাতের ব্যবসায়ী, রিকশাচালকসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ ছিলেন। তাদের অভিযোগ, তাদের চাওয়া, তাদের সমস্যা আমরা গুরুত্বসহকারে শুনেছি এবং সে অনুযায়ী সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।